হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি - বেগুন চাষ করা কি লাভজনক

আজ আমরা আলোচনা করব হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি -  বেগুন চাষ করা কি লাভজনক নিয়ে। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতের বেগুন উপাদান হয়ে থাকে। এবং সারা বছরই এসকল বেগুন পাওয়া যায়। তবে বেগুন চাষ করা কি লাভজনক এই নিয়ে বিভিন্ন জনের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন আছে। তাই আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা জানবো হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি -  বেগুন চাষ করা কি লাভজনক নিয়ে।


তাছাড়া আমরা আরো জানবো ,বেগুন চাষের ভূমিকা, বেগুন গাছের পরিচর্যা, বেগুনের জাত, হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি, বেগুনের উপকারিতা ও অপকারিতা,বেগুন গাছে ওষুধ ও সার প্রয়োগ ইত্যাদি নিয়ে। তাহলে আসুন দেরি না করে জেনে নেই, হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি -  বেগুন চাষ করা কি লাভজনক ।

বেগুন চাষের ভূমিকা

হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি -  বেগুন চাষ করা কি লাভজনক এর মাধ্যমে আলোচনা করব বেগুন চাষের ভূমিকা নিয়ে।বেগুন হলো এক ধরনের সবজি।কমবেশি সবাই বেগুন খেয়ে থাকে।বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতের বেগুন উপাদান হয়ে থাকে। এবং সারা বছরই এসকল বেগুন পাওয়া যা।

তবে বেগুন শীতকালীন সবজি হিসেবে বেশি পরিচিত।বেগুন একটি অধিক পুষ্টিকর সবজি। এতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমন ভিটামিন ,ক্যালসিয়া, কপা্‌র ভিটামিন কে ,ফাইবার, ভিটামিন-সি ইত্যাদি। বেগুন হজমশক্তির উন্নতি ও ক্যান্সার রোগ প্রতিহত করতে ভূমিকা রাখে ।

বেগুন গাছের পরিচর্যা

ভালো ফলন পেতে হলে বেগুন গাছের পরিচর্যা করতে হবে। অনেকে প্রশ্ন করেন বেগুন চাষ করা কি লাভজনক, হ্যাঁ বেগুন গাছের পরিচর্যার ফলে অধিক ফলন পাওয়া যায় ফলে এটি লাভজনক।বেগুন গাছ লাগানোর পূর্বে মাটি আগলা করে ঝরঝরে করে নিতে হবে।  আগলা করা হয়ে গেলে এমওপি পাঁচ থেকে সাত গ্রাম দিতে হবে।

এ বার দিতে হবে টি ও পি ৫ থেকে ১০ গ্রাম এবং ডিমের খোসা দিয়ে ভালোভাবেবে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। এভাবে জমি প্রস্তুত করা হয়ে গেলে তবে বেগুন চারা রোপণ করতে হবে। বেগুন চাষের জন্য বেগুনের গাছে প্রচুর পানি দিতে হয় । বেলে মাটিতে যদি বেগুন গাছ লাগানো হয় তবে ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর পানি দিতে হবে।

জমি যদি শুকনা থাকে তবে তাতে পানি দিতে হবে। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। অতিরিক্ত পানি বেগুন গাছের জন্য ক্ষতিকর । বেগুন গাছ রোপণের কিছুদিন পরে বেগুন গাছে ফুল আসবে। প্রথমে ফুল না রেখে ভেঙ্গে দিতে হবে সাথে সাথে অধিক পাতা থাকলে তা ভেঙ্গে দিতে হবে। ফলে গাছের অতিরিক্ত শাখা-প্রশাখা বৃদ্ধি পাবে।

আরো পড়ুনঃ  মরিচের জাত সম্পর্কে

বেগুন গাছের পোকা দমনের জন্য এক লিটার পানিতে থিয়োভিট 2 চা চামচ পাউডার দিয়ে মিশিয়ে তার মধ্যে মার্শাল 2 মিলি মিশিয়ে দ্রবন তৈরি করে  বেগুন গাছে স্প্রে করতে হবে। যার ফলে পোকা-মাকড় বেগুন গাছের কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। ফলে বেগুন গাছ অনেক সুস্থ থাকবে এবং অধিক ফলন পাওয়া যাবে।

বেগুনের জাত

হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি -  বেগুন চাষ করা কি লাভজনক এ প্রসঙ্গে জানুন বেগুনের জাত সম্পর্কে।বেগুন চাষ করা কি লাভজনক, হ্যাঁ বেগুন চাষ লাভজনক পেশা হওয়ায় বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির বেগুন চাষ হয়ে থাকে। বর্তমানে এদেশে সারা বছরই বেগুন পাওয়া যায়। এদেশের কিছু উন্নত বেগুনের জাত হল। যেমন, 

বারি হাইব্রিড বেগুন -৩

বারি হাইব্রিড বেগুন -৪

বারি বিটি বেগুন -১

বারি বিটি বেগুন -২

 বারি বিটি বেগুন -৩

বারি বিটি বেগুন -৪

বারি বেগুন -১

বারি বেগুন -২

বারি বেগুন -৩

 বারি বেগুন -৪

 বারি বেগুন -৫

বারি বেগুন -৬

বাড়ি বেগুন -৭

বারি বেগুন -৮

বাড়ি বেগুন -৯

 বারি বেগুন -১০

এছাড়াও আরও অনেক বেগুনের জাত রয়েছে যেমন ,তাল বেগুন ,সাদা বেগুন , মুক্তকেশী বেগুনের ইত্যাদি।

হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি

হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি -  বেগুন চাষ করা কি লাভজনক এই পোস্টটির মাধ্যমে এখন আমরা জানব হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে। হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি এর ফলে সারা বছরই প্রচুর পরিমাণে বেগুন পাওয়া যায়। হাইব্রিড বেগুন এর একটি জাত হলো ভি এন আর ২১২। ভিএন আর ২১২- ফাল্গুন চৈত্র মাসে বপন করা হয়। যে জমিতে অধিক সূর্যের আলো পড়ে এবং বর্ষাকালে পানি না জমে থাকে সে  জমি নির্বাচন করতে হবে । দোআঁশ এঁটেল দো-আঁশ মাটি এই বেগুন চাষের জন্য আদর্শ । বেগুন চারা রোপণের জন্য জমি গভীরভাবে চাষ দিয়ে মাটি আগলা করে নিতে হবে ।

জমিতে আগাছা থাকলে তা পরিষ্কার করতে হবে। কাঠাপ্রতি সার পরিমাণ মতো যেমন, সরিষার খৈল 2 কেজি , ফসফেট এক কেজি,সুফলা এক কেজি, অনুখাদ্য এক কেজ্‌ হাড়ের গুড়া 1 কেজি জমিতে ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে যাতে করে তা ভালোভাবে মটিতে মিশে যায়। এক সপ্তাহ পর জমিতে পানি সেচ দিয়ে চারা রোপণ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ মরিচের উপকারিতা সম্পর্কে

 চারা রোপণের সময় চারা থেকে চারা দূরত্ব হবে আড়াই ফুট, লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব হবে তিন ফু্‌ট , এবং লাইনের মাঝখানে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা কেটে দিতে হবে।গাছ ও ফল কে পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে কিছুদিন পরপর স্প্রে করতে হবে । চারা রোপণের ৪০ থেকে ৫০ দিন পর থেকে ফুল আসা শুরু করে । ফুল আসার ২০ থেকে ২৫ দিন পরেই ফল সংগ্রহ করা যায় ।

হাইব্রিড ভি এন আর  ২১২ একটানা তিন থেকে চার মাস বেগুন দিয়ে থাকে। এই জাতের বেগুন অধিক ফলনের জন্য খুবই ভালো ।

বেগুনের উপকারিতা ও অপকারিতা

হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি -  বেগুন চাষ করা কি লাভজনক এই পোস্টটির মাধ্যমে জানবো বেগুনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।বেগুন যা এক ধরনের সবজি। বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতের বেগুন হয়ে থাকে যেমন বারি ১/২ বারি ৩/৪ ইত্যাদি। এছাড়াও লাল, সাদা, কালো , সবুজ ইত্যাদি বেগুন হয়ে থাকে। বেগুন একটি পুষ্টিকর খাবার, যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামি, খনিজ, ক্যালোরি এবং ফাইবার । এছাড়াও বেগুনে রয়েছে ভিটামিন সি , ভিটামিন কে , কপার , পটাশিয়াম , কার্বোহাইড্রেট , প্রোটিন , ফাইবার ইত্যাদি ।

আরো পড়ুনঃ মরিচের অপকারিতা সম্পর্কে

বেগুনে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরে ক্ষতিকারক পদার্থ থেকে রক্ষা করে । হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে বেগুন সহায়তা করে । হার্ট অ্যাটাকের তীব্রতা রাস করে । বেগুনি প্রচুর ফাইবার থাকার কারণে তা হজমের উন্নতি ঘটায় । তাছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধে বেগুন কার্যকারী ভূমিকা রাখে ।

বেগুনের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। বেগুন স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করছেন পরিবেশবাদী বা স্বাস্থ্য  বিশেষজ্ঞরা। বেগুন উৎপাদন ও খাবার ফলে মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি যেমন ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগ হতে পারে বলে তাদের ধারণা।

বেগুন গাছে ওষুধ ও সার প্রয়োগ

বেগুন চাষের জন্য বেগুন গাছের ঔষধ ও সার প্রয়োগ এর গুরুত্ব অপরিসীম । বেগুন গাছ রোপণের সময় গোবর সার , পটাশিয়াম , ইউরিয়া দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে । বেগুন গাছ কে পোকামাকড় এর হাত থেকে রক্ষা করতে কিছুদিন পরপর বেগুন গাছে স্প্রে করতে হবে । বেগুন  ও কান্ড ফুটা করা পোকা থেকে রক্ষা পেতে ফিপ্রোসিন 1 মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে । চাষী পোকার জন্য ইন্টারপ্রেট ও  থার্মিট দিতে হবে ।

এছাড়াও ০-৫২- ৩৪, ১২-৬১-১৩ ,০- ৪৫ , পটাশিয়াম নাইট্রেট অথবা মনো এমোনিয়া ফসফেট স্প্রে করতে হবে । এর ফলে পোকামাকড়ের হাত থেকে বেগুন ও বেগুনের গাছ ২ রক্ষা পাবে ।

শেষ কথা

হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি -  বেগুন চাষ করা কি লাভজনক এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে। এবং এখান থেকে যদি আপনারা কোন টিপস পেয়ে থাকেন। তবে আমাদের পেজটি ফলো করুন।-ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url