কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা - মরিচ চাষ পদ্ধতি


আপনারা অনেকেই হয়তো কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। আপনারা যদি কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারেন তাহলে অবাক হয়ে যাবেন। কাঁচা মরিচে রয়েছে অধিক পরিমাণে পুষ্টিগুণ যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাহলে আসুন জেনে নেই, কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও মরিচ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে।

কাঁচামরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও মরিচ চাষ পদ্ধতি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা আরো জানতে পারবো, মরিচ চাষের ভূমিকা, মরিচ চাষ পদ্ধতি বা বীজতলা তৈরি, মরিচ এর জাত, কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা, সার ও সেচ প্রদান, টবে মরিচ চাষ এসব সম্পর্কে।

মরিচ চাষের ভূমিকা

মরিচ এক ধরনের সবজি যা সবাই খেয়ে থাকে।মরিচে বিভিন্ন উপকারি গুন রয়েছে যা মানুষে শিরিরের জন্য বেশ উপকারি।মরিচ ঠাণ্ডা ,কাশি ,ফুস্ফুস এর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির মরিচ চাষ করা হয়ে থাকে।যেমন-সনিক,যমুনা,বোম্বাই,হাইব্রিড মরিচ,বারি-১,বারি-২,বারি-৩,ক্যাপসিকাম,জিয়া মরিচ।বারি-১ এই মরিচ সারা বছর চাষ করা হয়ে থাকে।বারি -২,গ্রীস্মকালে চাষ হয়ে থাকে।বারি-৩ ,শীতকালে চাষ হয়ে থাকে।

মরিচ চাষ পদ্ধতি বা বীজতলা তৈরি

মরিচ চাষের জন্য জমি হতে হবে সুনিস্কাসিত দো-আঁস মাটি।মরিচ গাছ লাগানোর ২-৩ সপ্তাহ আগে বীজতলা তৈরি করতে হবে তাতে করে মাটিতে যে রোগজিবানু বা পোকা মাকড় থাকে তা মারা যাবে।এবার শতক প্রতি ১-১৫ গ্রাম বীজ জমিতে ফেলতে হবে পাতলা করে।বীজ ফেলার পর খড় অথবা চাটাই দিয়ে ঢেঁকে দিতে হবে।ডাসবান ও বিটুমিন এক সাথে মিশিয়ে বীজতলা ভিজিয়ে দিতে হবে যাতে করে পোকা মাকড় যেন বীজ নষ্ট করতে না পারে।বীজ ফেলার এক সপ্তাহ পর থেকেই বীজ গজাতে শুরু করে।

চার পাতা যুক্ত চারা ২৫-৩০ দিনের মধ্যে লাগানো উপযোগী হয়ে য়ায়।চারা রোপন এর সময় খেয়াল রাকতে হবে যেন মুল বেড হয় দেড় মিটার,ডেন হয় ৫০ সেন্টিমিটার,গাছের দুরুত্ব হবে ৬০সেন্টিমিটার,সারি হবে ৭০ সেন্টিমিটার।এর পর জমিতে পানি সেচ দিতে হবে,খেয়াল রাখতে হবে যেন জমিতে পানি জমাট বেঁধে না থাকে। তারপর জমিতে নির্দিষ্ট পরিমানে ইউরিয়া,পটাস দিতে হবে।গাছের সাথে খুঁটি বেঁধে দিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ টাইগার মুরগি পালন সম্পর্কে

৫০-৫৫ দিনে গাছে ফুল আসা শুরু করে।ফুল আসার পর গাছে এমওপি সার দিতে হবে।পোকা মাকড়ের হাত থেকে গাছকে রক্ষা করতে কিছু  দিন পরপর  মরিচ গাছে স্পে করতে হবে।৬০-৬৫ দিনেই সধারণত মরিচ ধরা শুরু করে।প্রতি দুই দিন পর পর মরিচ সংগ্রহ করা যায়।

মরিচ এর জাত

বাংলাদেশে অনেক জাতের মরিচ চাষ হয়ে থাকে।গ্রীষ্মকালীন,শীতকালীন এমন কি সারা বছর মরিচ পাওয়া যায়। এমন সব মরিচ এর জাত নিম্নে দেওয়া হল ।যেমন,

  • প্রিমিয়াম মরিচ
  • ধুম মরিচ
  • বারি মরিচ -১
  • বারি মরিচ -২
  • বারি মরিচ -৩
  • হাইব্রিড মরিচ
  • বোম্বাই মরিচ
  • গোল মরিচ
  • সনিক মরিচ
  • যমুনা  মরিচ ইত্যাদি।

বারি-১ এই মরিচ সারা বছর চাষ করা হয়ে থাকে।বারি -২,গ্রীস্মকালে চাষ হয়ে থাকে।বারি-৩ ,শীতকালে চাষ হয়ে থাকে।

কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচামরিচ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন।মরিচ ঝাল হলেও এর কিছু গুনা গুন রয়েছে।যেমন,মরিচ হজম শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।কাঁচা মরিচ ফুস্ফুস সুস্থ রাখে।ঠান্ডা ,কাশি,ফুস্ফুস এর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এই কাঁচা মরিচ।হাডকে সুস্থ ও শক্তিশালী করে,টিস্যু পুনগঠন ওনতুন রক্তকোষ তৈরি করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।এছাড়াও কাঁচা মরিচে রয়েছে ভিটামিন-সি,  ভিটামিন-এ,লোহ,পটাসিয়াম,কপার, ভিটামিন-বি ইত্যাদি উপাদান।

কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা নিম্নে দেওয়া হলঃ

  • মন মেজাজ চাঙ্গা হয়
  • হজম ক্ষমতা বাড়ায়
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • সাইনাস বা ঠান্ডা লাগা দূর করে
  • রক্তে শর্করার মাএয়া কমায়
  • ব্যাথা কমায়
  • ক্যান্সার প্রতিহত করে
  • নতুন টিস্যু পুর্নগঠন করে
  • হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
  • শরীরের স্বাভাবিক তাপমাএয়া বজায় রাখে

সার ও সেচ প্রদান

মরিচ গাছে সার ও সেচ প্রদান সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।মরিচ এর জমিতে গোবর,ইউরিয়া,টি এস পি,এম ও পি সার প্রয়োগ করতে হবে।আয়তন অনুসারে প্রতি হেক্টর জমিতে টি এস পি ২০০ কেজি,ইউরিয়া ২৫০ কেজি,গোবর ১০ টন,এম ও পি সার ১৫০ কেজি দিতে হবে।চারা লাগানোর ২৫ দিন পর  এম ও পি ৩৪ কেজি,ইউরিয়া ৮৪ কেজি,প্রথম উপরি প্রয়োগ করতে হবে।৫০ দিন পর ২য় ৭০ দিন পর তৃতীয়দ ধাপেউ উপরি সার প্রয়োগ করতে হবে। ২য় ও তৃতীয় ধাপে এম ও পি ৩৩ কেজি, ইউরিয়া ৮০ কেজি দিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ গ্রিন টি এর ২৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা

সার দেওয়ার সময় মাটি ভাল ভাবে কুবিয়ে আগলা করে সার দিতে হবে।এতে করে সার মাটিতে ভাল্ভাবে মিশে যাবে।সেচ মরিচ গাছের জন্য খুবই উপকারি।মাটি সুস্ক ও রসের অভাব দেখাদিলে জমিতে পানি সেচ দিতে হবে।অতিরিক্ত পানি গাছের জন্য ক্ষতি কর ,তাই অতিরিক্ত পানি নিস্কাসনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

টবে মরিচ চাষ

আজ কাল বাসাবাড়ি বা বাড়ির ছাদে  অনেকেই টবে মরিচ চাষ করে থাকে।টবে মরিচ চাষের জন্য মাঝারি আকারের টব নিতে হবে।এছাড়া টিনের কৌটা,প্লাস্টিকের পাএ বা পলিব্যাগ ও ব্যবহার করা যেতে পারে।টবে দো-আঁশ মাটি নিয়ে  তাতে মরিচ বীজ বুনে দিতে হবে কিংবা বাজার থেকে চারা কিনে তা রোপন করা জেতে পারে।তাতে পানি দিতে হবে এবং পানি নিস্কাসনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।গাছ বড় হওয়ার সাথে সাথে  লাঠি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে

পোকা মাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত স্পে করতে হবে।মরিচ গাছে  ফুল আসার ২-৩ দিন পর ফুল ঝরে যাবে এবং ধীরে ধীরে মরিচ বড় হতে থাকবে।একটি মরিচ গাছ থেকে ২৫০-৩০০ গ্রাম মরিচ পাওয়া যাবে।

শেষ কথা

কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও মরিচ চাষ পদ্ধতি, এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা যদি উপকৃত হয়ে থাকেন। তবে আমাদের পেজটি ফলো করুন এবং নতুন নতুন টিপস  সম্পর্কে জানুন ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url