ড্রাগন ফলের উপকারিতা - ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি
ড্রাগন ফলের উপকারিতা
বাচ্চাদের জন্য ড্রাগন ফলের উপকারিতা
আট মাস বয়স থেকে বাচ্চাদের ড্রাগন ফল দেওয়া যায় ।কারণ বাচ্চাদের জন্য ড্রাগন ফলের উপকারিতা অনেক ।এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ,ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বাচ্চাদের হাট ভালো রাখে ও হার গঠনে সহায়তা করে। এটি আঁশযুক্ত ফল হওয়ায় বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
ভিটামিন এ যা বাচ্চাদের চোখ ও ত্বক জন্য বেশ উপকারী। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা বাচ্চাদের রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাই বাচ্চাদের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ড্রাগন ফল রাখা উচিত।
ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি
ড্রাগন ফল চাষ করার জন্য আলো-বাতাস যুক্ত জমি নির্বাচন করতে হবে। চারা রোপণের পূর্বে জমিতে ছোট ছোট গর্ত তৈরি করতে হবে। ২০ থেকে ২৫ দিন পর প্রতি গর্তে ২৫ গ্রাম টিএসপি ২৫০ গ্রাম এমওপি ২৫ থেকে ৩০ কেজি গোবর ১৫০ গ্রাম জীব সার এবং ৫০ গ্রাম জিংক সালফেট দিয়ে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজন মতো সেচ দিতে হবে ।১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে গর্ত প্রস্তুত হয়ে যাবে ।তারপর ৬ ফুট লম্বা খুঁটি পুঁতে তার মাথায় রড ও টায়ার বেঁধে দিয়ে খুটির চারপাশে চারটি ছাড়া সোজা ভাবে লাগাতে হবে।
আরো পড়ুনঃ বেগুন চাষ করে কি লাভবান হওয়া য়ায় সে সম্পর্কে
ড্রাগন চারা লাগানোর উপযুক্ত সময় হলো ডিসেম্বর , জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মাস। এছাড়া সারা বৎসর ড্রাগন ফলের চারা রোপন করা যায়। চারা লাগানোর একবছর পরে গাছে ফুল আসে। এবং ফুল থেকে ফল আসতে শুরু করে।
রেড ভেলভেট ড্রাগন চাষ
ড্রাগনের একটি উন্নত জাত হলো রেড ভেলভেট ।এই জাতের ড্রাগন ফলের একেকটির ওজন হয় ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম। অধিক লাল কালার হওয়ার কারণে এই ফলটির নাম দেওয়া হয়েছে রেড ভেলভেট। চুয়াডাঙ্গা দুই ভাই উজ্জ্বল ও রবিউল এই জাতের ড্রাগন চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। সাড়ে তিন বিঘা জমির থেকে আজ তারা ১৫ বিঘা জমিতে রেড ভেলভেট জাতের ড্রাগন চাষ করছেন।
রেড ভেলভেট চাষের জন্য টিএসপি, এমওপি সার, জিংক এর পাশাপাশি তারা অধিক মাত্রায় জৈব সার ব্যবহার করে। এবং মুরগির বিষ্ঠা প্রসেসিং করে তারা গাছের গোড়ায় দেয়। এই জাতের ড্রাগন ফলের মিষ্টতা আমের মিষ্টি তার মত।
ড্রাগন ফলের দাম কত
পুষ্টিগুণে ভরা এই ফলটির নাম ড্রাগন। যা বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষাবাদ করা হচ্ছে। অঞ্চল গুলো হল যেমন যশোর, বগুড়া ,রাজশাহী ,নাটোর ,জীবননগর, চৌগাছা ,মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা ইত্যাদি। অধিক চাষ হওয়ার ফলে এই ফলটির দাম আমাদের হাতের নাগালে এসেছে।
আকারভেদেএই ফলের দাম ভিন্নতর হয়ে থাকে যেমন ছোট ড্রাগন ফল এর দাম প্রতি কেজি ১৩০ টাকা পাইকারি, মাঝারি ড্রাগন ফলের দাম ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা পাইকারি, এবং বড় ড্রাগন ফলের দাম কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০পাইকারি হয়ে থাকে। তবে খুচরা বাজারের দাম প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। আবার উৎপাদনের উপর ভিত্তি করেও এই ফলের দাম উঠানামা করে থাকে।
ড্রাগন ফল দিয়ে রূপচর্চা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা এর কথা বলে শেষ করা যাবে না ,আজকাল রূপচর্চায় ড্রাগন ফলের ভূমিকা অধিক। টানটান উজ্জ্বল ত্বক পেতে ড্রাগন ফল ব্যবহার করা হয় মাক্স হিসেবে। অকালে মুখে বয়সের ছাপ, ফাইন লাইন, এসপট , রোদে পোড়া ত্বক ইত্যাদিতে সমস্যার সমাধান দিতে ড্রাগন ফল মাক্স হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
আর এই মাক্স তৈরি করার নিয়ম হলোঃ প্রথমে এই ফলের শাঁস বের করে চটকে নিন তাতে এক টেবিল চামচ পরিমাণ টক দই মিশন। মেশানো হয়ে গেলে এই প্যাকটি মুখে ও গলায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন তারপর হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন করে এই প্যাকটি লাগাবেন দেখবেন ত্বক কত টানটান এবং উজ্জ্বল হয়।
আরো পড়ুনঃ মরিচ চাষ পদ্ধতি
ব্রণের জন্য যেভাবে প্যাকটি তৈরি করবেন-একটি ড্রাগন ফলের চারা ভাগের একভাগ নিবেন ।তারপর তার শ্বাস ফেলে দিয়ে তা পেস্ট করে নিবেন।এবার পরিষ্কার তোলার মাধ্যমে প্রতিটা ব্রণের ওপর লাগাবেন। একাধিক ব্রণের জন্য আলাদা আলাদা তুলা ব্যবহার করবেন। এভাবে ২০ মিনিট রাখুন এরপর হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলবেন ।মুখ ধোয়ার পরে মুখ মুছবেন না প্রাকৃতিক বাতাসে শুকিয়ে নেবেন। প্রতি সপ্তাহে দুইবার করে এটি ব্যবহার করবেন দেখবেন ব্রণ কমে গেছে।
ড্রাগন ফলের অপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। যেমন এই ফল পানি না খেয়ে অধিক পরিমাণ খেলে ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। অতিরিক্ত ফাইবার থাকার কারণে এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও এ ফল অধিক পরিমাণে খেলে অ্যালার্জি হতে পারে হতে পারে নিম্ন রক্তচাপ। নির্দিষ্ট মাত্রায় এই ফল খেলে এর উপকারী গুণ বেশি পাওয়া যায়। তাই আমাদের এই ফল খাওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে আমরা যেন নির্দিষ্ট পরিমাণ এই ফল খেয়ে থাকি। যাতে করে আমরা কোন সমস্যার সম্মুখীন না হই।
nice
onak valo hoiss