শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা - শীতের পিঠা নিয়ে কিছু কথা


পৌষের হিমেইল হাওয়া যেমন শীতকালকে মনে করিয়ে দেয় ।তেমনি এই শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা মনে করিয়ে দেয় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে। পিঠা ছাড়া শীতের সকাল ভালোই লাগে না ।আজ আমরা আলোচনা করব শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা নিয়ে। নতুন ধানের গোড়া আর খেজুর গুড় দিয়ে বানানো হয় শীত কালের বিভিন্ন ধরনের রকমারি পিঠা। শীত এলেই চলে পিঠা নিয়ে বাড়াবাড়ি, কেউবা আবার চলে কুটুমবাড়ি।

এছাড়াও আমরা আলোচনা করব শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা, শীতের পিঠা নিয়ে কিছু কথা, শীতের পিঠা নিয়ে স্ট্যাটাস, শীতের পিঠা নিয়ে বাণী, শীতে পিঠা নিয়ে কবিতা, শীতের পিঠা উৎসব অনুচ্ছেদ এবং শীতের কিছু পিঠা নিয়ে যেমন দুধ চিতই , ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, চিতই পিঠা ,দুধ পুলি পিঠা, ফুল পিঠা , গোলাপ পিঠা ইত্যাদি। পিঠা নিয়ে আবার কিছু বানি রয়েছে যেমন, পিঠা নিয়ে এলো শীতের বুড়ি দাদি নানি তোমরা বলো আছো কোথায় কই। শীতের পিঠা খেতে কারনা মন চায় গানের ঘরে শীতের ভরে পিঠার স্বাদ সবাই পায়।

শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা

শীতে এলে আমাদের মনে পড়ে পিঠার কথা। পিঠা ছাড়া আমরা শীতকাল কল্পনায় করতে পারি না। শীতকালে বাংলার ঘরে ঘরে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের রকমারি পিঠা যেমন,  পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, দুধ  চিতই ,গোলাপ পিঠা, পাটিসাপটা , ভাপা পিঠা,ইত্যাদি। নিম্নে শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

পুলি পিঠাঃ পুলি পিঠা বানানোর জন্য প্রথমে প্যানে তেজপাতা ও গরম মসলা দিয়ে ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে। তার মধ্যে নারিকেল কোরা দিতে হবে তারপর পরিমাণ মতো গুড় মিশিয়ে তা ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে তা নামিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। এবার চালের গুড় দিয়ে একটি কায় বানিয়ে নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ ড্রাগন ফলের উপকারিতা

কাই বানানো হয়ে গেলে তা রুটি আকারে বেলে নিয়ে গ্লাস এর সাহায্যে গোল গোল করে কেটে নিতে হবে। এবার গোল গোল করে রাখার রুটির মধ্যে নারিকেল ভাজা দিয়ে ভালোভাবে মুখ মারতে হবে। মুখমারা হয়ে গেলে প্যানে তেল গরম করে তার মধ্যে তা ছেড়ে দিতে হবে এবং মচ মচা করে ভেজে নিতে হবে। তাহলে তৈরি হয়ে যাবে পুলি পিঠা।

ভাপা পিঠাঃ ভাপা পিঠা বানানোর জন্য দুই কাপ চালের গুড়া নিতে হবে। তাতে পরিমাণ মতো লবণ ও পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন তা বড় বড় দোলা না বেধে যায়। এবার একটি বাটির মধ্যে তা দিতে হবে এবং দিতে হবে খেজুর গুড় ।আগে থেকে জাল করে রাখা পানির ধাপে তা বসিয়ে দিতে হবে ।কিছু সময় অপেক্ষা করুন তারপর তা নামিয়ে নিন দেখবেন তৈরি হয়ে গেছে গরম গরম ভাপা পিঠা।

চিতই পিঠাঃ চিতই পিঠা তৈরি করার জন্য একটি পাত্র নিতে হবে। মাত্র চারের গুড়া পরিমাণ মতো লবণ ও পানি দিয়ে মেখে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এই গলাটা যেন অতি পাতলা বা ঘন না হয়। এবার চুলা একটি প্যান বসিয়ে চামচের সাহায্যে তা অল্প অল্প করে ঢেলে দিতে হবে। গোলাটা দেওয়া হয়ে গেলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এবার অপেক্ষা করুন তারপর নামিয়ে ফেলুন দেখবেন তৈরি হয়ে গেছে চিতই পিঠা।

পাটিসাপটা পিঠাঃ পাটিসাপটা পিঠা তৈরি করার জন্য চালের গুড় এবং খেজুর গুড় ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে চালের গুড়া মেশানো যেন খুব ঘন বা পাতলা না হয়।এবার চুলায় প্যান বসিয়ে তাতে হালকা তেল লাগিয়ে গরম করে নিতে হবে। এবার আগে থেকে তৈরি করে রাখা চালের গুড়ার গোলাটা অল্প করে ঢেলে দিতে প্যান এর মধ্যে তারপর হালকা করে মেলে দিতে হবে। একটু গরম হয়ে গেলে তা খুন্তির সাহায্যে  ভাঁজ করে দিতে হবে। দুপাশ ভালোভাবে আশানো হয়ে গেলে তা নামিয়ে ফেলতে হবে।

শীতের পিঠা নিয়ে কিছু কথা

গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি হল শীতকালীন পিঠা। পৌষের হিমেল হাওয়ার সাথে সাথে শুরু হয়ে যায় পিঠা খাওয়ার ধুম। তখন ঘরে ঘরে চলে পিটা খাওয়ার উৎসব। বাঙালিরা পিঠা ছাড়া যেন শীতকালের কোন পূর্ণতায় খুঁজে পায় না। দাদা-দাদি ,নানা-নানি, বাবা- চাচা, ছোট- বড় সবাই যেন পিটা খাবার আনন্দে মেতে ওঠে। এই সময় ঘরে ঘরে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি হয় যেমন পুলি পিঠা, চিতই পিঠা ,ভাপা পিঠা ,দুধ পিঠা, গোলাপ পিঠা ইত্যাদি। শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা তখন বিভিন্ন ঘরে ঘরে উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।

শীতের পিঠা নিয়ে স্ট্যাটাস

শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা ও শীতের পিঠে নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের স্ট্যাটাস দিয়েছেন। নিম্নে শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা ও শীতের পিঠা নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়া হলঃ

  • পিঠা খাব খেজুর রসের শীতের রোদে বসে তোমরা বানাও অধিক পিঠা কোমর বেঁধে কষে- সংগৃহীত।
  • ভোরের সময় ভীষণ তারা পিঠে যাবে কুটুমপাড়া-দিনা
  • পরব চলে সারা বাড়ি পিঠা নিয়ে কাড়াকাড়ি পিঠাপুলির মিষ্টি  রসালো চুলায় বসে শীতের সকাল-আলী আকবর হিমু।
  • শীত এলে চলে পিঠা নিয়ে বাড়াবাড়ি কেই বা আবার পিঠা নিয়ে চলে কুটুমবাড়ি-দিনা।

শীতের পিঠা নিয়ে বাণী

পিঠা পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। শীতকালে বাঙ্গালীদের একটি পছন্দের খাবার হল পিঠা। যদি ও এটি প্রতিদিন এর খাবার নয়  তবু এটা নিয়ে ঘরে ঘরে চলে মাতামাতি। প্রাচীনকালের এই ঐতিহ্য বর্তমানে তা আর খুব একটা দেখা যায় না। ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে শীতকালের এই পিঠা উৎসব তবে শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা ও শীতের পিঠা নিয়ে বানী আজও রয়ে গেছে । নিম্নে শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা ও শীতের পিঠা নিয়ে বাণী আলোচনা করা হলো যেমনঃ

  • শীতের পিঠার মেলা বসবে এবার গ্রামের মাঠে শিশুরা তাই মেলায় যাবে যাবে না আর পাঠে- সংগৃহীত
  • শীতকাল চলে আসছে আমি জানিনা আমার অনেকদিন পর্যন্ত ভাপা পিঠা খাওয়া হয় না- অনন্ত আরাফাত।
  • উড়ছে পাখির দিচ্ছে ডাক কুয়াশা আসে ঝাঁকে ঝাক খেজুর গাছে রসের হাড়ি আমি যাব তোমার বাড়ি উঠবে মাঝি তুলবে পাল বন্ধুদেরকে জানাই শুভ সকাল- সংগৃহীত।
  • শীতের পিঠা খেতে কার না মন চায় গ্রামের ঘরের শীতের ভরে পিঠার সাদ সবাই পায়।
  • পিঠা নিয়ে এলো শীতের বুড়ি দাদি নানি তোমরা বলো আছো কোথায় কই - সংগৃহীত

পিঠা নিয়ে কবিতা

শীত এলে চলে পিঠা নিয়ে বাড়াবাড়ি কেবা চলে কুটুমবাড়ি। আবার কেউবা আবার তৈরি করে পিঠা নিয়ে স্ট্যাটাস বা কবিতা। তেমনি শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা ও পিঠা নিয়ে কবিতা হলঃ

ইষ্টিকুটুম, মিষ্টি কুটুম

 এসো মোদের বাড়ি

 খেতে দেবো রসের পিঠা

 বসো তাড়াতাড়ি।

চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা

আছে আমার কাছে

 গরম গরম খাও ,না হলে

 ফুরিয়ে যাবে পাছে।

শীতের পিঠা উৎসব অনুচ্ছেদ

ষড়ঋতুর দেশ এই বাংলাদেশ।  শীতকাল এগুলোর অন্যতম ঋতু। শীতকালে নতুন ধান উঠে। সে ধানে ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর উৎসব শুরু হয়। নতুন চালের গুড়া আর খেজুর রসের গুড় দিয়ে বানানো হয় নানান রকম পিঠা। এগুলো নানা রকম নাম নানা রকম রূপের বাহার। ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা,পুলি পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা ছাড়া আরও অনেক পিঠা তৈরি হয় বাংলার ঘরে ঘরে। । পায়ের কি ইত্যাদি মুখরোচক খাবার আমাদের রচনা কে তৃপ্ত করে শীতকালে। এর সময় শহর থেকে অনেকে গ্রামে যায় শীত কালের বিভিন্ন রকমারি পিঠা খেতে।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা

তখন গ্রামের বাড়ি গুলো নতুন অতিথি আগমনে মুখর হয়ে ওঠে। শীতের সকালের চুলার পাশে বসে গরম গরম ভাপা পিঠা খাওয়ার মজায় আলাদা। গ্রামের মতো শহরে শীতের পিঠা সেরকম তৈরি হয় না। তবে শহরে রাস্তাঘাটে  শীতকালে ভাপা ও চিতই পিঠা বানিয়ে বিক্রি করা হয়। এছাড়া অনেক বড় বড় হোটেলে পিঠা উৎসব হয় ।পিঠা বাঙালি এর সংস্কৃতির একটি অন্যতম উপাদান। আর শীতের পিঠা আমাদের খাদ্য তালিকায় এনেছে বৈচিত্র। শীতের পিঠা উৎসব অনুচ্ছেদ -ষষ্ঠ শ্রেণীর বই থেকে সংগৃহীত


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url