গম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
তাছাড়াও আমরা জানবো, গম চাষ পদ্ধতি। গমের বীজ বপণের সময়। গমের বীজ বপন পদ্ধতি। গম এর জাত সমূহ। গম চাষের সার প্রয়োগ। রোগ দমন করার নিয়ম। গমের ফলন বৃদ্ধি করার উপায়। বাংলাদেশের কোন ঋতুতে গম চাষ করা হয় এগুলো নিয়ে। তাহলে তাহলে গম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
গম চাষ পদ্ধতি
দানাদার খাদ্য হিসেবে বাংলাদেশ গমের অবস্থান তৃতীয়। বর্তমানে এদেশে বিপুল পরিমাণ
কম চাষ করা হয়। তবে রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া ,জামালপুর ,দিনাজপুর,
ঠাকুরগাঁও, যশোর ও কুষ্টিয়া বেশি গম চাষ করা হয়। যেসব উচ্চ ফসলশীল অনুমোদিত জাত
বাংলাদেশের চাষ করা হয় তার মধ্যে আকবর, অগ্রণী, কাঞ্চন, সৌরভ, প্রতিভা, শতাব্দি,
প্রদীপ, বিজয় ইত্যাদি অধিক জনপ্রিয়। নিম্নে গম চাষ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা
হলো।
গমের বীজ বপণের সময়
শীতকালীন ফসল হিসেবে গম পরিচিত। গমে চাষ বাংলাদেশের সাধারণত শীতকালে করা হয়ে থাকে। গমের বীজ বপণের সময় নভেম্বর মাস থেকে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত উপযুক্ত সময়। গম সাধারণত দো আঁশ ,উঁচু ও মাঝারি জমিতে ভালো জন্মে।
আরো পড়ুনঃ বেগুন চাষ করা কি লাভ জনক
গমের বীজ বপন পদ্ধতি
গমের বীজ বপন পদ্ধতি ,গম চাষের জন্য জমিতে ৩ থেকে ৪ টি চাষ ও ভালোভাবে মই
দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে। জমিতে রস না থাকলে শেষের ব্যবস্থা করতে হবে। এবার
একটি পাত্রে গম বীজ নিয়ে হাত দিয়ে পুরা জমিতে ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। এবার
চাষ ও মই দিয়ে জমি সমান করে দিতে হবে। দেখবেন বপন এর কিছুদিন পরে বীজ
গজাতে শুরু করবে।
গম এর জাত সমূহ
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ দেশে অতীত পরিমাণ কম উৎপাদন করা হয় । বর্তমানে
বাংলাদেশে আবাদকৃত গম এর মধ্যে সেসব জাতের গম বেশি চাষ করা হয় সেগুলো হলঃ
- কাঞ্চন
- প্রতিভা
- সৌরভ
- আকবর
- গৌরব
- বারি গম ১৯
- বারি গম ২০
- বারি গম ৩০
- বারি গম ৩১
- বারি গম ২৮
- বারি গম ২৬
- বারি গম ৩২ ইত্যাদি।
গমের এর জাত সমূহ এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল নতুন যাতে দুটি গমের নাম হলোঃবারি গম ১৯,বারি গম ২০।
আরো পড়ুনঃ
মরিচ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে
গম চাষের সার প্রয়োগ
গম চাষের সার প্রয়োগ খুবই উপকারী। সঠিক নিয়মে সার প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তাই সার সঠিক নিয়মে প্রয়োগ করতে হবে । অধিক ফলন পাওয়ার জন্য প্রতি শতক জমিতে ৩০ থেকে ৪০ কেজি জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়াও প্রতি শতক জমিতে টিএসপি ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম, ইউরিয়া ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম, এমওপি ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম, এবং জিপশাম ৪৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম সার প্রয়োগ করতে হবে। জমিতে শেষ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
রোগ দমন করার নিয়ম
পোকামাকড়ের আক্রমণ খুব একটা গম চাষে দেখা যায় না। তবে গমে ইঁদুরের উপদ্রব বেশি দেখা যায়। এছাড়াও ছত্রাক জনিত কিছু রোগ গমে দেখা যায়। যেমন গোড়া পচা রোগ, পাতার দাগ রোগ, মরিচা রোগ, বীজের কালো দাগ রোগ অন্যতম। রোগ দমন করার নিয়ম, ছত্রাক জনিত এইসব রোগ প্রতিরোধের জন্য সমন্বিত ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
হাইব্রিড বেগুন চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে
বীজ ভালোভাবে শোধন করে তা বপন করতে হবে। রোগ প্রতিরোধ জাত যেমন অগ্রণী, আকবর
,কাঞ্চন, সৌরভ, গৌরব ইত্যাদি গম চাষ করতে হবে। এছাড়া ইঁদুরের হাত থেকে গমকে
রক্ষা করতে জমিতে বিষ দিতে হবে কিংবা ফাঁদ তৈরি করে ইদুর চলাচলের
রাস্তা পেতে রাখতে হবে, এতে করে ইঁদুরের উপদেভ কমবে।
গমের ফলন বৃদ্ধি করার উপায়
গমের ফলন বৃদ্ধির করার উপায় হিসেবে গমের অধিক পরিচর্যা করতে হবে। সঠিক নিয়মে সার প্রয়োগ করতে হবে। ভালো বীর বপন করতে হবে। জমিতে আগাছা হলে তা পরিষ্কার করতে হবে। গমের জমিতে সঠিক নিয়মে পানি শেষ দিতে হবে।
বাংলাদেশের কোন ঋতুতে গম চাষ করা হয়
বাংলাদেশে দানাদার খাদ্য হিসেবে গমের স্থান দ্বিতীয়। বর্তমানে বাংলাদেশের
বিভিন্ন অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ গম চাষ করা হয়। যেমন রংপুর, দিনাজপুর ,পাবনা,
বগুড়া, যশোর ,খুলনা ইত্যাদি। আপনারা অনেকেই জানতে চান বাংলাদেশের কোন ঋতুতে কম
চাষ করা হয়। তাহলে জানুন শীতে গমের ফলন ভালো হয়ে থাকে। তাই ঋতুবেদের বাংলাদেশের
শীতকালে গম চাষ করা হয়। নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত গমের
বীজ বপন করা হয়।
শেষ কথা
আশা করছি আপনারা গম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এই পোষ্টটির মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকবেন। গম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের যদি কোন মতামত থাকে তাহলে আমাদের জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url