কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা


কাঁঠাল এর ইংরেজি নাম জ্যাকফুট, এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus heterophyllus । কাঁঠাল আলসার, ক্যান্সার ,উচ্চ রক্তচাপ ,বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম কারণ এতে রয়েছে ফাইটো নিউট্রেন্টস। কাঁঠালের উপকারী গুনাগুন যেমন রয়েছে আবার এর মধ্যে অপকারিতাও রয়েছে। তাই আজ আমরা আলোচনা করব কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। আশা করছি কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে আপনারা খুশি হবেন। তাহলে চলুন আজ আমরা আলোচনা করি কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে।
কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা প্রসঙ্গে আমরা আরো জানবো, কাঁঠালের উপকারিতা, হজম শক্তি বাড়ায়, বয়সের ছাপ দূর করে, মানসিক চাপ কমায়, ওজন কমায়, উচ্চ রক্তচাপে, দাঁতের মাড়ির শক্তি বৃদ্ধিতে, শিশু স্বাস্থ্য, হাড় কে শক্তিশালী করতে, শর্করা নিয়ন্ত্রণ, শ্বেত কণিকার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে, ক্লান্তি দূর করতে, সর্দি কাশি, বাধ্যক্য জনিত দুর্বলতা, রক্তস্বল্পতায়, হাঁপানি তাড়াতে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে, ত্বকের মসৃণতায়, দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে, ডাইবেটিস রোগীদের জন্য কাঁঠাল খাওয়া যাবে কি ,কাঁঠালের অপকারিতা এগুলো সম্পর্কে।

কাঁঠালের উপকারিতা 

কাঁঠালে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা আমাদের দেহের ক্ষতি কর ফ্রিরেডিক্যালস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও কাঁঠাল আলসার, ক্যান্সার ,উচ্চ রক্তচাপ ,বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম কারণ এতে রয়েছে ফাইটো নিউট্রেন্টস।

আরো পড়ুনঃ সজনে পাতা ও ডাটার উপকারিতা

আবার আমাদের সর্দি কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতেও কাঁঠাল বেশ উপকারী। কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা প্রসঙ্গে নিম্নে আমরা কাঁঠালের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

হজম শক্তি বাড়ায়

কাঁঠাল মানুষের পেটের মতো দেখতে হলেও এটা পেটের নানা রকমের রোগ সারাতে বেশ উপকারী। কাঁঠাল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার পাশাপাশি এটা অন্তের নড়াচড়া বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁঠালে যে আঁশ থাকে তা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। তাছাড়া অম্লতা ও আলসার প্রতিরোধে কাঁঠাল বেশ উপকারী।

বয়সের ছাপ দূর করে

কাঁঠাল বয়সের ছাপ দূর করতে বেশ কার্যকরী। এর ফলে বয়সের ছাপ দূর করে তারুণ্য ধরে রাখা সম্ভব। কাঁঠাল মুখে বলিরেখা পড়তে দেয় না। এমনকি এটি শরীরের ত্বকে করে মসৃণ। কাঁঠালের থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহের ক্ষতি কর ফ্রিরেডিক্যালস থেকে রক্ষা করে। এমনকি কাঁঠাল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।

মানসিক চাপ কমায়

সাধারণত কাঁঠাল খেলে মানসিক চাপ তথা টেনশন দূর হয়। এমনকি কাঁঠাল নার্ভাসনেস কমিয়ে মনকে প্রফুল্ল করে তোলে।

ওজন কমায়

কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ খুবই কম থাকে ।তাই এটি বেশি খেলেও ওজন বাড়ার আশঙ্কা নেই। এমনকি কাঁঠাল পেট ভরে খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

উচ্চ রক্তচাপে

কাঁঠালের থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পটাশিয়াম ৪৪৮ ইনকাম থাকে যা শরীরের জন্য বেশ উপকারী। কাঁঠাল উচ্চ রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি স্টোক, হৃদরোগের ঝুঁকি ও কমায়।

দাঁতের মাড়ির শক্তি বৃদ্ধিতে

কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে যা দাঁতের মাড়ির শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রাকৃতিকভাবে মানবদেহে ভিটামিন সি তৈরি হয় না। বিভিন্ন ফলমূল শাকসবজি খাওয়ার মাধ্যমে এই ঘাটটি পূরণ হয়। কাঁঠাল মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে।

শিশু স্বাস্থ্য

ছয় মাস বয়সের পর থেকে শিশুকে মায়ের দুধের পাশাপাশি কাঁঠালের রস খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয় অন্যদিকে শিশুর প্রয়োজনীয় ভিটামিন এর অভাব পূরণ হয়।

আরো পড়ুনঃ তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা

 তাই শিশুর স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় কাঁঠাল বেশ উপকারী।

হাড় কে শক্তিশালী করতে 

কাঁঠালের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম যা হারের গঠন ও হাড়কে শক্তিশালী করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

শর্করা নিয়ন্ত্রণ 

কাঁঠালে রয়েছে অধিক পরিমাণ খনিজ উপাদান ম্যাগনেসিয়াম যা রক্তের চিনির পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

শ্বেত কণিকার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে

কাঁঠালের রয়েছে ভিটামিন সি যা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়। এবং রক্তের শ্বেত কণিকা কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

ক্লান্তি দূর করতে 

কাঁঠাল ক্লান্তি দূর করতে বেশ কার্যকর। ক্লান্ত শরীরে কেউ যদি ৩ থেকে ৪ চামচ কাঁঠালের রস আধা কাপ দুধের সাথে মিশিয়ে খায় তবে তার ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।

সর্দি কাশি 

সিজন চেঞ্জ অর্থাৎ এই গরম এই ঠান্ডা আবার বৃষ্টি। এর কারণে কারো যদি সর্দি কাশি হয়ে থাকে তাহলে এ ধরনের সমস্যা সারাতে কাঁঠাল বেশ উপকারী।

বাধ্যক্য জনিত দুর্বলতা

বার্ধক্য জনিত দুর্বলতায় কাঁঠাল বেশ উপকারী। কাঁঠালের রস ৫ থেকে ৬ চামচ সকাল বিকাল ২ বেলা কয়েক দিন খেলে বার্ধক্য জনিত দুর্বলতা দূর হয়ে যাবে।

রক্তস্বল্পতায় 

কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান এবং আয়রন যা দেহের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

হাঁপানি তাড়াতে

কাঁঠালে অনেক গুণাবলী থাকার মধ্যে আরেকটি গুণাবলী রয়েছে যা এজমা প্রতিরোধে কার্যকর। কাঁঠালের শিকড় ছেঁচে তা ফুটিয়ে পানি খাওয়ালে হাঁপানি তথা অ্যাজমার জন্য উপকারী হয়।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে

কাঁঠালে থাকা ভিটামিন বি৬ হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ।

ত্বকের মসৃণতায় 

ত্বক সুন্দর মসৃণ রাখতে নিয়মিত কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা অধিক। কাঁঠাল খেলে ত্বকের মসৃণতার পাশাপাশি তকে করে আকর্ষণীয়। কাঁঠাল ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। চেহারায় লাবণ্যকে দীর্ঘস্থায়ী করে দেয় কাঁঠাল।

দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে 

কাঁঠালের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং অন্যান্য উপাদান দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

ডাইবেটিস রোগীদের জন্য কাঁঠাল খাওয়া যাবে কি 

কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা জানবো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কাঁঠাল খাওয়া যাবে কি।ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কাঁঠাল খুব বেশি না খাওয়াই ভালো। কাঁঠাল খাওয়ার পর কারো কারো সমস্যা দেখা না দিলেও কোন কোন ক্ষেত্রে অনেকের আবার ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যায়।

আবার কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের যাদের রক্তে পটাশিয়াম এর মাত্রা বেশি তাদের কাঁঠাল না খাওয়াই ভালো। কারণ কাঁঠালের প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম বিদ্যমান থাকে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।

কাঁঠালের অপকারিতা

কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা এ প্রসঙ্গে আজ আমরা জানবো কাঁঠালের অপকারিতা সম্পর্কে।কাঁঠালের যেমন উপকারী গুনাগুনও রয়েছে তেমনি কিছু অপকারিতা রয়েছে। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণ আমিষ থাকায় কাঁঠাল একটি গুরুপাক ফল। তারমানে আমিষের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি হজম হতে বেশ সময় নেয়। 

আরো পড়ুনঃ ড্রাগন ফলের উপকারিতা 

তাই এটি অধিক পরিমাণ খেলে তা বদ হজমও হতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে কাঁঠাল খাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজন অনুসারে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কাঁঠাল খাওয়া উচিত।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। আপনারা কি কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কিছুটা জানতে পেরেছেন। যদি জানতে পারেন এবং উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।-ধন্যবাদ


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url