পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ
আজ আমরা আলোচনা করব পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে। আশা করছি এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হয়ে থাকবেন। আপনাদের যদি পা নিয়ে কোন সমস্যা থাকে তাহলে এই প্রশ্নের মধ্যে জানতে পারবেন পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে। তাহলে আসুন আর দেরি না করে জেনে নেই পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে।
পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ এ প্রসঙ্গে আমরা আরো জানবো,পা কামড়ানো কি, পা কামড়ানোর কারণ, যথেষ্ট হাঁটাচলা না করলে, ঋতু পরিবর্তন,পানি শূন্যতা,ভুল ভঙ্গিতে ঘুমালে, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা,পুষ্টির অভাব, গর্ভাবস্থা, পা কামড়ানো প্রতিরোধ, ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়া, হাইড্রেটড থাকুন।
পা কামড়ানো কি
পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন ,পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানো সাধারণত পেশির সংকোচনের জন্য হয়ে থাকে যা কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে। এটা পায়ের পাতা থেকে হাটু পর্যন্ত হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ গরমে ত্বকের ৫টি সমস্যা এবং সমাধান
এর কারণে হাটুর পেছনের পেশীতে টানও ধরতে পারে। আমরা অনেক সময়ই পা কামড়ানোর
সমস্যায় ভুগে থাকি তবে এই সমস্যা পঞ্চাশের পরে বেশি দেখা দেয়। বিএমসি ফ্যামিলি
প্র্যাক্টিস ২০১৭ এর এক গবেষণায় প্রকাশ হয়েছে।
পা কামড়ানোর কারণ
পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ এই প্রসঙ্গে জানব পা কামড়ানোর
কারণ সম্পর্কে।পা কামড়ানোর কারণে আপনাকে কি পুরো রাত জেগে থাকতে হয়। আপনি একা
নন আমেরিকান ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান এর প্রকাশিত ২০১২ সালের এক গবেষণা অনুসারে জানা
যায় যে ,প্রায় ৬০% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কখনো না কখনো রাতে পা কামড়ানোর সমস্যার
কারণে ঘুমাতে পারেন না। এবং সেই সাথে ব্যথা ও অস্বস্তি অনুভব করেন। তাহলে নিম্নে
পা কামড়ানোর কারণগুলো আলোচনা করা হলো।
যথেষ্ট হাঁটাচলা না করলে
গবেষণায় পা কামড়ানোর সমস্যার জন্য আমাদের আধুনিক জীবন যাপনের কর্ম ব্যবস্থাকেই
দায়ী করেছেন। কারণ দেখা যায় দীর্ঘ সময় আমরা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকি,
হাঁটাচলা করতে হয় এমন কোন কাজ করি না, হাঁটার বদলে রিক্সা বা অন্য কোন যানবাহন
ব্যবহার করি, সিঁড়ির বদলে লিফট ব্যবহার করি, অবসর সময় শুয়ে বসে কাটাই ইত্যাদি।
এর ফলে যথেষ্ট হাঁটাচলা না করলে পা কামড়ানো বেড়ে যায়।
ঋতু পরিবর্তন
বিশেষজ্ঞরা বলেন ঋতু পরিবর্তনের সময় পা কামড়ানোর সমস্যা দেখা দেওয়া খুবই
স্বাভাবিক। এই সমস্যাটি বিশেষ করে গরমে এবং শীতের আগে বেশি হতে পারে। এই সমস্যাটি
সবার ক্ষেত্রেই ঘটনা তবে এর আবার ভুক্তভোগীর সংখ্যাও কম নয়।
পানি শূন্যতা
রাতে পা কামড়ানোর সমস্যা দেখা দিলে, এটা সাধারণত পানি শূন্যতার কারণে বেশি হয়ে থাকে। জার্মানির গোয়েতে ইউনিভার্সিটির ক্রীড়া বিজ্ঞানের অধ্যাপক মাইকেল বেহরিঙ্গার বলেন, পেশীর স্ক্যাম্পের ক্ষেত্রে স্পষ্টই ঋতু ভিত্তিক প্যাটার্ন দেখা দেয়, এটি সংখ্যা গ্রীষ্মে বেশি এবং শীতে কালে কম হয়।
আরো পড়ুনঃ গরমে ত্বকের যত্ন - ত্বকের যত্নে ৭ টিপস
অতিরিক্ত তাপ এবং শরীরে পানি শূন্যতার কারনে ক্যাম্প বেড়ে যেতে পারে। আবার
অনেক সময় শরীরে ইলেকট্রিলাইটে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হতে পারে পানি শূন্যতার
কারণে। যার ফলে স্ক্যাম্প আরো বেড়ে যায়।
ভুল ভঙ্গিতে ঘুমালে
ভুল ভঙ্গিতে ঘুমালে অনেক সময় পা কামড়ানো হতে পারে। অনেক সময় ঘুমের ভঙ্গির
কারণে পায়ের পাতা উপরের দিকের পেশিতে টান পড়ে, পা দীর্ঘ সময় এভাবে থাকার কারণে
এই সমস্যা বাড়ে। এই সমস্যার দেখা দিলে ঘুমানোর সময় পায়ের পজিশনের দিকে খেয়াল
রাখুন ,এঁকেবেঁকে ঘুমাবেন না।
দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা
দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। গবেষণায় দেখা
গেছে, যারা সারাদিন বা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে পা কামড়ানোর
সমস্যা বেশি দেখা দেয় অন্যদের তুলনায়। আপনি দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন কিন্তু
নড়াচড়া করতে পারেন না তখন পানি ও রক্ত শরীরের নিচের অংশে এসে জমা হয় ।এটি
শরীরের তরল ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। ফলে পা কামড়ানো দেখা যায়।
পুষ্টির অভাব
অনেক সময় পুষ্টির অভাবেও পা কামড়ানো হতে পারে। ক্যালসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম অভাবে পা কামড়ানোর সমস্যা অনেক সময় বেড়ে যায়। এগুলো ইলেকট্রোলাইট গুলো রক্ত এবং পেশীতে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে যার কারণে এগুলোর অভাবে দেখা দেয় পা কামড়ানোর মত সমস্যা।
গর্ভাবস্থা
গর্ভাবস্থায় পা কামড়ানো ঘন ঘন দেখা দিতে পারে। এ সময় ওজন বৃদ্ধি এবং সঞ্চালন
ব্যাহত হওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। আমেরিকান পেগনেন্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে,
মায়ের রক্তনালি এবং স্নায়ুর ওপর ক্রমবর্ধমান ভুনের চাপের কারণে এটা হতে
পারে।
পা কামড়ানো প্রতিরোধ
পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ প্রসঙ্গে আজ আমরা জানবো পা কামড়ানো প্রতিরোধ এর উপায় গুলো কি। নিম্নে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়া
পা কামড়ানো থেকে রেহাই পেতে আমাদের নিয়মিত ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার খেতে হবে। অনেক মানুষ আছে যারা খনিজ উপাদানের ওপরে বেশি গুরুত্ব দেন না কিন্তু এটা খুবই প্রয়োজনীয়। সিমের বিচি ,বাদাম, শশা, সবুজ পাতাযুক্ত শাক এই উপাদানের সবচেয়ে বড় উৎস। আবার কোন এক গবেষণায় দেখা গেছে ,এটি কারো কারো ক্ষেত্রে কাজ নাও করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়
তাই সব থেকে ভালো হয় একজন বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিয়ে খাবারের তালিকা তৈরি করা। আবার
আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন বি পা কামড়ানোর সমস্যা দূর করতে কাজ করে।
তবে এগুলোর ক্ষেত্রে কোন শক্তিশালী প্রমাণ নেই। তবে ছোট মাছ ,শসা, শাকসবজি খাওয়া
ভালো।
হাইড্রেটড থাকুন
পা কামড়ানো থেকে রেহাই পেতে হাইড্রেটড থাকুন। পর্যাপ্ত পানি পান করার চেষ্টা করুন। আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘামেন এবং নিয়মিত এক্সারসাইজ করেন তাহলে শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে অধিক পরিমাণ পানি পান করুন।
গলা শুকিয়ে আসা, মাথা ব্যাথা ,ক্লান্তি ও শুষ্ক ত্বক হল শরীরে পানি শূন্যতার
অন্যতম লক্ষণ। আবার অনেক সময় প্রসাবের রং দেখেও এর ধারনা পাওয়া যায় ।
প্রসাব এর রং যদি হলুদ হয় তাহলে বুঝতে হবে শরীরে পানির ঘাটতি হয়েছে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ এই পোস্টটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। আপনারা কি ,পা কামড়ানো কি? পা কামড়ানোর কারণ এবং প্রতিরোধ এই পোষ্টের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের কমেন্টের আশায় থাকলাম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url