গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয়


সাধারণত কিছু লক্ষণ ও উপসর্গের মাধ্যমে কেউ গর্ভবতী হয়েছে কিনা তা বোঝা যায়। কেউ গর্ভবতী হইলে মাসিক মিস হওয়ার এক বা দুই সপ্তাহের মাঝে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। আর এইসব লক্ষণের প্রতি ১০ জনের মধ্যে সাতজনই গর্ভধারণের ছয় সপ্তাহের মধ্যে দেখা যায়।গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয় আজ আমরা আলোচনা করব এই পোস্টটি নিয়ে। আমার মহিলা বন্ধুরা কারো যদি এই শুভক্ষণ উপস্থিত হয়ে থাকে তাহলে, গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয় এই পোস্টটির সাথে আপনার লক্ষণগুলো মিলিয়ে দেখতে পারেন।
আসুন বন্ধুরা তাহলে আলোচনা করি গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয় এই সম্পর্কে।গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয় এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা আরো জানবো, গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ, আমি কি গর্ভবতী, কি করে বুঝবেন আপনি প্রেগন্যান্ট কিনা, মিলনের কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হয়, গর্ভবতী হলে করণীয় সম্পর্কে।

গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ 

গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয় এ পর্যায়ে আমরা জানবো ১০ গর্ভবতী হওয়ার দশটি লক্ষণ সম্পর্কে। নিম্নে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

বর্ধিত শারীরিক তাপমাত্রা

আপনার যদি শারীরিক তাপমাত্রার একটি চার্ট থাকে এবং আপনি সেখানে যদি দেখেন একনাকারে ১৮ দিনের বেশি আপনার শারীরিক তাপমাত্রা বেশি, তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনি খুব সম্ভবত গর্ববতী।

মাসিক মিস হওয়া

গর্ভবতীর সবচেয়ে প্রধান বা প্রাথমিক লক্ষণ হল মাসিক মিস হওয়া। আপনার যদি পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী চক্র মেনে মাসিক ঠিক সময় না হয় ।তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে প্রেগনেন্সি ধারণা করতে হবে। আবার আপনার যদি অনেক ক্ষেত্রে মাসিক অনিয়মিত হয় তবে টেস্ট কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত হতে পারেন।

বমি বমি ভাব

গর্ভবতীর আরেকটি প্রাথমিক লক্ষণ হলো বমি বমি ভাব। সাধারণত গর্ভধারণের এক মাসের আগে বমি বমি ভাব দেখা দেয় না ।তবে যাদের ব্যতিক্রম আছে তাদের গর্ভধারণের দুই সপ্তাহের মাঝেই বমি বমি ভাব দেখা দেয়। সাধারণত সকলেরই এই বমি বমি ভাব হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ ইমাজেন্সি ও ফেমিকন পিল সম্পর্কে জানুন

তবে অনেকে দ্বিতীয় ট্রিটমেন্টের সময় এই ভবি ভাব থেকে রক্ষা পায়। আবার কারো ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘায়িত হয়ে থাকে। মোটকথা কখনোই এই বমি বমি ভাব একেবারে নিরাময় হয় না। খুব কম সংখ্যক গর্ভবতী মা এর থেকে মুক্তি পেয়ে থাকেন।

 ঘন ঘন প্রসাবের বেগ

গর্ভ অবস্থায় হরমোন জনিত পরিবর্তনের কারণে শরীরে যে কয়টি পরিবর্তন আসে তার একটি হল রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি। আর রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে বারবার প্রসবের বেগ হয়। আর এই উপসর্গ আপনার প্রথম ট্রিটমেন্টের বা ছয় সপ্তাহের মাথায় দেখা দেয়। এই সমস্যাটি চলতেই থাকে এবং আপনার শরীরে বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে এই সমস্যা আরও বাড়তে থাকে।

মন মেজাজের ওঠা নামা

মায়ের শরীরে এ সময় হরমোনের ওটা নামার কারণে মন মেজাজ এর কোন ঠিক ঠিকানা থাকে না। হরমোন বদল এর কারনে ব্রেনের অভ্যন্তরে মেজাজ বহনকারী নিউরোট ট্রান্সমিটারের পরিমাণে পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তন বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এই সময় মা খুব বেশি আবেগী অনুভব করেন আবার অনেক সময় দুশ্চিন্তায় ভুগেন।

খাবারের অনীহা

গর্ভাবস্থায় শুরুর দিকে খাবারের বেশ অনিহা দেখা দেয়। এ সময় খাদ্যদ্রব্যের প্রতি বেশ অনিহা লক্ষ্য করা যায়। এমনকি পছন্দের খাবারও সে সময় বিষাদ লাগলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই বরং এরকমই হয়ে থাকে।

পেট ফুলে যাওয়া

সন্তান সম্ভবা মায়ের পেট হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে ফুলে যাওয়ার অনুভূতি হয়। এটা অনেকটা মাসিক হওয়ার আগ মুহূর্তের অনুভূতি। এ সময় আপনার এমনও হতে পারে যে আপনার পরী দেহ বস্ত্র কোমরের কাছে ছোট হয়ে গেছে যদিও এখন পর্যন্ত আপনার জরায়ুতেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি।

রক্তপাত

অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় পিরিয়ডের সময় খুব সামান্য পরিমাণ রক্তপাত হয়ে বন্ধ হয়ে যায় ।এটি হতে পারে গর্ভধারণের লক্ষণ।

স্তনের পরিবর্তন

গর্ভবতী হওয়ার সাধারণত আরেকটি লক্ষণ হল স্তনের পরিবর্তন। আপনি যদি গর্ভধারণ করেন তাহলে স্তনের আকৃতি কিছুটা বৃদ্ধি পাবে এবং নিপল গারো রং ধারণ করবে।

মাথা ঘোরা

সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার পর সকালে ঘুম থেকে উঠলে শরীর প্রচন্ড দুর্বল মাথা, ঘোরা বোধ হতে পারে। আর এটি গর্ভবতী হওয়ার কারণ গুলোর মধ্যে একটি।

আমি কি গর্ভবতী

আপনার মনের যদি প্রশ্ন ওঠে যে আমি গর্ভবতী কিনা। তাহলে আর দেরি না করে তা পরীক্ষা করুন। আর আপনার হাতের নাগালে রয়েছে বেশ কয়েকটি উপায় যেমনঃ

বাসায় প্রেগনেন্সি টেস্ট

আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট করার জন্য টেস্টকিট আপনার বাড়ির পাশে ফার্মেসিতেই পাবেন। আর এই টেস্টকীট আপনার প্রসাবে প্রেগনেন্সির হরমোনের উপস্থিতি পরীক্ষা করে। তবে এই কিট ব্যবহারে কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে খেয়াল রাখুন;

আরো পড়ুনঃ অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণ

  • আপনাকে কিটের গায়ে লেখা নির্দেশনা ভালোমতো অনুসরণ করতে হবে।
  • মাসিক মিস হওয়ার কমপক্ষে এক সপ্তাহ পর পরীক্ষা করুন।
  • কোন কারনে কিট ভুল তথ্য দিতে পারে সেজন্য কীটের ফলাফলকে চূড়ান্ত মনে না করাই শ্রেয়।
  • কিটে আপনার প্রেগনেন্সির লক্ষণ যদি প্রকাশ পায় তারপরেও কয়েকদিন ব্যবধানে আবার টেস্ট করে আরো নিশ্চিত হন।
  • এবং সবশেষে ভালো ফলাফল পেতে ডাক্তার বা স্বাস্থ্য কর্মীর পরামর্শ নিয়ে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে পুরোপুরি নিশ্চিত হন।

রক্ত পরীক্ষা

প্রেগনেন্সিতে রক্ত পরীক্ষা বেশ নির্ভরযোগ্য। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ডাক্তার আপনার রক্তের Human Chorionic Gonadotrophin (HCG) হরমোনের উপস্থিতি দেখেন।

প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ

মাসিক মিস হওয়ার দুই সপ্তাহ পরে ডাক্তারের কাছে গিয়ে আপনার প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে পারেন। ডাক্তার আপনার জরায়ু ও গলদেশ পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। গর্ভধারণ করলে সার্ভিস নরম হয় রং পরিবর্তন এবং জরায়ুর আকার বড় হতে থাকে। আপনি গর্ভবতী হলে তা নিশ্চিত হওয়ার আগে থেকে বাচ্চার গঠন শুরু হতে থাকে। তাই প্রাথমিক অবস্থাতেই আপনার নিজের যত্ন নিতে হবে। এবং নিশ্চিত হওয়ার পর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।

কি করে বুঝবেন আপনি প্রেগন্যান্ট কিনা 

গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয় এ প্রসঙ্গে আমরা জানবো কি করে বুঝবেন আপনি প্রেগন্যান্ট কিনা। প্রেগনেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিক সর্বপ্রথম লক্ষণটি হল পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়া। তাছাড়াও অনেকের ক্ষেত্রে আরও অনেক লক্ষণ উপস্থিত থাকতে পারে। যেমন ধরেন মাথা ঘোরানো, বমি বমি লাগা, চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা, ক্লান্তি অনুভব করা ইত্যাদি।

তবে একটা কথা এসব লক্ষণ থাকলেই যে আপনি গর্ভবতী হবেন তার সুনিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়। তাই আপনি গর্ভবতি কিনা তা জানার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হলো প্রেগনেন্সি টেস্ট করা। আপনি চাইলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিটের সাহায্যে খুব সহজে ঘরে বসে জেনে নিতে পারেন আপনি গর্ভবতী কিনা। এছাড়াও আপনার নিকৃষ্ট স্বাস্থ্যসেবা ,ক্লিনিক ,হাসপাতাল কিংবা গাইনি ডাক্তারের চেম্বারে গিয়েও আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে পারেন।

মিলনের কতদিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হয়

আপনার যদি কোন মাসে পিরিয়ড বাদ যায় এবং আপনি যদি এর আগের মাসে -অ নিরাপদ মিলন করে থাকেন অর্থাৎ কোন জন্মনিরোধক পিল, কনডম, বড়ি বা ইনজেকশন ব্যবহার না করে মিলন করে থাকেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট তারিখে পিরিয়ড শুরু না হলে তখনই আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট করে নিতে পারেন।

গর্ভবতী হলে করণীয়

গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয় সম্পর্কে আমরা জানবো গর্ভবতী হলে করণীয় কি।প্রেগনেন্সি টেস্টের মাধ্যমে আপনি যদি জানতে পারেন যে আপনি গর্ভবতী তাহলে আপনার কিছু করণীয় রয়েছে। আপনাকে যত দ্রুত সম্ভব একজন স্বাস্থ্যকর্মী বা গাইনি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে চেকআপ করিয়ে সুনিশ্চিত হওয়া এবং ডাক্তার যে সকল পরামর্শ দিবেন সে সকল পরামর্শ মেনে চলা। গর্ভঅবস্থায় এই সময়ে সাধারণত কিছু নিয়মকানুন মেনে চলা খুবই জরুরী। আর গর্ভঅবস্থায় সাধারণত যে সকল বিষয়গুলো মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয় সেগুলো হলঃ

আরো পড়ুনঃ কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা

  • গর্ভবতী হওয়ার পর তিন মাস পর্যন্ত দৈনিক ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড সেবন করতে হবে। এটা আপনি ট্যাবলেট আকারেও খেতে পারেন।
  • দৈনিক দশ মাইক্রগ্রাম ভিটামিন ডি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে।
  • গর্ব অবস্থায় নানান রকম ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে ।তাই সবসময় কাঁচা বা ভালোভাবে রান্না হয়নি এমন খাবার থেকে বিরত থাকুন।
  • গর্ভাবস্থায় শিশুর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে অবশ্যই অতিরিক্ত চা কপি পান , মদ্যপান করা এবং ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।

ইতিকথা

আমার প্রিয় মহিলা বন্ধুরা ,গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয় এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা গর্ভবতী হলে লক্ষণগুলো মিলিয়ে দেখতে পারেন। আশা করছি কিছুটা হলেও লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন। আর গর্ভবতী হওয়ার ১০ টি লক্ষণ - গর্ভবতী হলে করণীয় এই পোস্টটার মাধ্যমে আপনারা যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।-ধন্যবাদ বন্ধুরা


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url