সুরা ইয়াসিন এর বিষয়বস্তু - সূরা ইয়াসিনের গুরুত্ব ও ফজিলত
সুরা ইয়াসিন
সুরা ইয়াসিন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুয়ত লাভের প্রথম দিকে এবং হিজরতের বহু আগে মক্কায় এই সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। সুরা ইয়াসিন কোরআনের ৩৬ তম সূরা।
আরো পড়ুনঃ বাংলা অর্থসহ সূরা হাশরের শেষের তিন আয়াত এবং এর ফজিলত
সুরা ইয়াসিন এর আয়াত সংখ্যা ৮৩ এবং রুকুর৫টি। সুরা ইয়াসিন এর মাধ্যমে কোরানের
বিশালত্ব সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা পাওয়া যায়। এই সূরাটি পবিত্র কোরআন শরীফের ২২ ও
২৩ নম্বর পাড়ায় বর্ণনা করা হয়েছে।
সুরা ইয়াসিন এর নামকরণ ও শানে নুযুল
যে দুটি হরফ দিয়ে সূরার সূচনা করা হয়েছে তা দিয়ে সূরা ইয়াসিনের নামকরণ করা
হয়েছে। সুরা ইয়াসিন মূলত দুটি আরবি শব্দের সমষ্টি। এই সূরাটির অর্থ একমাত্র
আল্লাহ তালাই জানেন। এই সূরার সঠিক অর্থ সম্পর্কে মূলত আল্লাহ তালাই জানেন।
সুরা ইয়াসিন কখন নাযিল হয়েছিল
সুরা ইয়াসিন এর বিষয়বস্তু - সূরা ইয়াসিনের গুরুত্ব ও ফজিলত এই পুষ্টির
মাধ্যমে আমরা জানবো সুরা ইয়াসিন কখন নাযিল হয়েছিল।মহানবী সাঃ নবুওয়াত লাভের
প্রথম দিকে এবং হিজরতের বহু আগে মক্কায় এই সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটি হলো
মক্কা অবস্থানের একেবারে শেষের দিনগুলোর একটি সূরা।
সুরা ইয়াসিন এর আলোচ্য বিষয় কি ছিল
সুরা ইয়াসিন মূলত যারা আল্লাহর নির্দেশ নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে তাদের পরিণতি
সম্পর্কে সতর্ক বাণী দিয়েছেন। অর্থাৎ যারা আল্লাহর অনুগত্য করে না তাদের জন্য
সতর্কবাণী। আর এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সতর্কবাণী।
আরো পড়ুনঃ হতাশা মুক্তির আল - কোরআনের ১০টি আয়াত
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুয়তের পর কুরাইশ বংশীয় কাফেরদের ঈমান না আনা এবং জুলুম বিদ্যুতের মাধ্যমে তার মোকাবেলা করার কি পরিণাম হয়েছিল এই সূরাতে সে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ ভয় দেখানো হয়েছে, শুধু ভয় নয় যুক্তি দিয়েও বিষয়বস্তু বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
সুরা ইয়াসিন শেষের দিকে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা এবং পুনরুত্থানের অস্তিত্বের
পক্ষে যুক্তি দেয়।
সুরা ইয়াসিন এর বিষয়বস্তু
সুরা ইয়াসিন এর বিষয়বস্তু - সূরা ইয়াসিনের গুরুত্ব ও ফজিলত এ প্রসঙ্গে আমরা জানবো সুরা ইয়াসিনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে।সুরা ইয়াসিন এর কোরআনের সমস্ত মূল বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়েছে বা মূল বিষয়বস্তু এসেছে। নিম্নে সুরা ইয়াসিন এর মূল বিষয়বস্তুগুলি আলোচনা করা হলোঃ
তাওহীদ
এটা প্রত্যেক মুসলমান বিশ্বাস করে যে, একমাত্র আল্লাহ যিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন
। যার সব ক্ষমতা, যা আর কারো নাই।
অর্থাৎ এই সূরাটি বিভিন্ন নির্দেশন ব্যাখ্যা করে খুব সুন্দর ভাবে আল্লাহর
একাত্মকে ব্যাখ্যা করেছেন। আর অবিশ্বাসকারীদের সর্তকতা বাণী দিয়েছেন।
রিসালাত
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল। তিনি সারা বিশ্বে
আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিতে এসেছিলেন বা পৌঁছে দিয়েছেন। সমস্ত মুসলিম জাতি মহানবী
(সা) কে বিশ্বাস করেন এবং মহানবী (সা) এর পথ ও শিক্ষা অনুসরণ করার চেষ্টা করে।
অর্থাৎ এই সূরায় যারা মহানবী (সা)এর উপর বিশ্বাস করে না তাদের জন্য সতর্কবাণী
রয়েছে। এখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে নবী মুহাম্মদ (সা) একজন সত্য আল্লাহর
রাসূল। যিনি মুসলমানকে সরল পথে পরিচালিত করার জন্য প্রেরিত রাসুল।
আখিরাত
সুরা ইয়াসিন এর অন্যতম প্রধান বিষয় হলো পরকালে বিশ্বাস করা অর্থাৎ আখিরাত
বিশ্বাস করা। অর্থাৎ সুরা ইয়াসিন অবিশ্বাসীদের ব্যাখ্যা করে যে ,হাশরের দিনে
আল্লাহ কিভাবে আবার মানুষকে জীবিত করবেন। এই সূরার মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে আল্লাহই
সর্বশ্রেষ্ঠ এবং চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী।
সূরা ইয়াসিনের গুরুত্ব ও ফজিলত
সুরা ইয়াসিন এর বিষয়বস্তু - সূরা ইয়াসিনের গুরুত্ব ও ফজিলত এ পর্যায়ে আমরা জানবো সুরা ইয়াসিনের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে। নিম্নে সুরা ইয়াসিন এর গুরুত্ব ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকা
- মহানবী (সা) বলেছেন, একবার একজন ব্যক্তির সুরা ইয়াসিন পাঠ করলে তাকে দশবার কুরআন খতম করার পুরস্কার দেওয়া হবে।
- মহানবী (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে কিয়ামতের দিন এই সূরাটি আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে।
- মহানবী (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে ঘুমানোর সময় সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে জেগে উঠবে সে নির্দোষ ভাবে। অর্থাৎ আল্লাহ তার পাপ ক্ষমা করবেন।
- যদি কোন মমিন নিয়মিত সূরা ইয়াসিন পাঠ করে তাহলে তার জন্য আল্লাহ জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেবেন।
- যদি কোন মৃত ব্যক্তির সামনে সূরা ইয়াসিন পাঠ করা হয় তাহলে তার মৃত্যুর যন্ত্রণা দূর হবে ।কবরে প্রশ্নের উত্তর সহজ হবে।
- কেউ যদি বিপদের মুহূর্তে সুরা ইয়াসিন পাঠ করে তাহলে সে বিপদ থেকে রক্ষা পাবে।
- নিয়মিত সূরা ইয়াসিন পাঠ করলে মহান আল্লাহতালা তার মনের সকল বৈধ আশা পূরণ করে দেয়।
- কোন ব্যক্তি যদি সুরা ইয়াসিন লিখে তার সাথে রাখে আল্লাহ তার সকল বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করেন।
- কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন সকালে সুরা ইয়াসিন পাঠ করেন তাহলে সেই ব্যক্তির সমস্ত কাজ সহজ হবে, আর্থিক সচলতা আসবে, সে সারাদিন আল্লাহর রহমতে থাকবে। যে কোন মহামারি থেকে নিরাপদে থাকবে। আল্লাহ তাকে শত্রু ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করবেন।
- সূরা ইয়াসিন পাঠকারীকে আল্লাহ জালিমের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেন।
ইতিকথা
প্রিয় বন্ধুরা আজ আমি আলোচনা করেছি,সুরা ইয়াসিন এর বিষয়বস্তু - সূরা ইয়াসিনের গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে। আশা করছি বন্ধুরা এই পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। বন্ধুরা যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। তাদের কমেন্টের আশায় থাকলাম।-ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url