কিডনির পাথর কি - কিডনির পাথর দূর করার ১২ টি ঘরোয়া উপায়
ভূমিকা
আজ আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আলোচনা করেছি,কিডনির পাথর কি - কিডনির পাথর দূর করার ১২ টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।বর্তমান সময়ে কিডনির পাথর একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে। পৃথিবীর প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান নিয়ে প্রাকৃতিকতে যেমন পাথর তৈরি হচ্ছে,
তেমনি মানবদেহর উপাদান ও খনিজ দিয়ে আমাদের শরীরে কয়েকটি অঙ্গে পাথর তৈরি হতে
পারে ।-যেমন কিডনি ,অগ্নাশয়, পিত্তথলি, তবে কিডনি ও মূত্রথলির পাথর আমাদের
দেশে বেশি দেখা যায়।
কিডনির পাথর কি
কিডনির পাথর কি বলতে, কিডনির ভেতরে মিনারেল জমে ক্রিস্টাল বা স্ফটিকের এর মত পদার্থ তৈরি করে, সাধারণত একেই কিডনি পাথর বলা হয়।পৃথিবীর প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান নিয়ে প্রাকৃতিকতে যেমন পাথর তৈরি হচ্ছে, তেমনি মানবদেহর উপাদান ও খনিজ দিয়ে আমাদের শরীরে কয়েকটি অঙ্গে পাথর তৈরি হতে পারে ।-যেমন কিডনি ,অগ্নাশয়, পিত্তথলি, তবে কিডনি ও মূত্রথলির পাথর আমাদের দেশে বেশি দেখা যায়।
কিডনির পাথর এই রোগের লক্ষণ
কিডনির পাথর কি - কিডনির পাথর দূর করার ১২ টি ঘরোয়া উপায় প্রসঙ্গে আমরা জানবো কিডনির পাথর এই রোগের লক্ষণ সম্পর্কে। নিম্নে কিডনির পাথর এই রোগের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
- এই রোগ হলে সাধারণত বমি বমি ভাব বা কখনো বমিও হতে পারে।
- কিডনির পাথর এই রোগ হলে সাধারণত তেল পেটের নিচে প্রচন্ড ব্যথা হয়।
- প্রস্রাব করতে গেলে ব্যথা হওয়া এবং কালসে লাল ,লাল কিংবা বাদামী রং এর প্রস্রাব হওয়া।
- স্বাভাবিকের তুলনায় প্রসাব বেশি হওয়া।
- বারবার প্রসাবের চাপ হওয়া।
- পাঁজরের নিচে অসহ্য যন্ত্রণা হওয়া এবং এই ব্যথা কমতে বাড়তে থাকে।
- দুর্গন্ধ ও ফেনাযুক্ত প্রসাব করা।
তবে কিডনিতে পাথরের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশনের অবদান অনেক বেশি। তাই প্রচুর পরিমাণে
পানি পান করুন ।এতে করে আপনার কিডনিতে পাথর নিরাময়ে সহায়তা করবে।
কিডনির পাথর দূর করার ১২ টি ঘরোয়া উপায়
এমন কিছু কিছু কয়েকটি ঘরোয়া উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে কিডনির পাথর দূর করা যেতে
পারে। তাহলে আসুন বন্ধুরা জেনে নেই কিডনির পাথর দূর করার ১২ টি ঘরোয়া
উপায় সম্পর্কে। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
পাতিলেবুর রস
পাতিল লেবুতে রয়েছে সাইটিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম যা পাথর তৈরিতে বাধা তৈরি করে
এবং ছোট পাথরগুলোকে ভেঙ্গে বের করে। এই রোগ প্রতিরোধের জন্য আপনি চাইলে রোজ সকালে
পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন ।অথবা দিনের যেকোনো সময় লেবুর রস খেতে
পারেন।
প্রচুর পানি পান
এই রোগ দেখা দিলে প্রচুর পানি পান করুন। কারণ ছোট আকারের পাথর দেখা দিলে প্রচুর
পানি পানির মাধ্যমে তার সারিয়ে তোলা সম্ভব। তবে হ্যাঁ অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ
নেবেন।
তুলসী পাতা
তুলসীর পাতায় রয়েছে অ্যাসিটিক এসিড যা কিডনির পাথর ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করে।
তাই এই রোগ প্রতিরোধে আপনি চাইলে প্রতিদিন অন্তত দুইবার তুলসীর রস খান। অথবা
তুলসির পাতা দিয়ে চা তৈরি করেও খেতে পারেন।
ডালিমের রস
ডালিমে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কিডনিকে সুস্থ রাখতে এবং পাথর ও অন্যান্য
টক্সিন কে দূর করতে সাহায্য করে। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সারা দিনে
কতটি এটা খেলে বা এটা খাওয়া ঠিক তা জেনে নিন।
কালোজিরার বীজ
একটি গবেষণা অনুযায়ী, কালোজিরার বীজ কিডনিতে ক্যালসিয়াম অকালেট স্টোন
গঠনে উল্লেখযোগ্য ভাবে বাধা দেয়। ২৫০ এম এল গরম পানিতে হাফ চা চামচ শুকনো
কালিজিরা বীজ নিন এবং এটি দিনে অন্তত দুইবার পান করুন।
আপেল সিডার
আপেল সিডার ভিনিগারে থাকা অ্যাসিটিক এসিড কিডনিতে পাথর দূর করে এবং ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। কিডনির পাথর রোধ করতে আপেল সিডার ভিনেগারের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে একদিনে ১৬ চামচের বেশি খাবেন না।
মেথি বীজ
মেথি ও কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। একটি
সমীক্ষায় দেখা গেছে, মেথি বীজ কিডনির পাথর দূর করে ও কিডনির পাথর প্রতিরোধে
সাহায্য করে। আপনি চাইলে এক কাপ ফোটানো পানির সঙ্গে এক থেকে দুই চামচ শুকনো মেথি
বীজ নিন এবংএটি প্রতিদিন পান করুন।
হাইড্রেটেড থাকুন
আপনি কিডনিকে ভালো রাখতে নিয়মিত প্রচুর পানি পান করুন এবং হাইড্রেটেড থাকুন। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে প্রসাবের মাধ্যমে কিডনির পাথর বের হয়ে যায়। তবে অবশ্যই কফি, চা, কোমল পানীয়, ওয়াইন, বিয়ার পান করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এগুলো কিডনি পাথর হওয়ার ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে তোলে।
সাইট্রিক এসিড গ্রহণ করুন
সাইট্রিক এসিড একটি জৈব এসিড। এটা অনেক ফল এবং সবজিতে পাওয়া যায়। আর লেবুতে সবথেকে বেশি পাওয়া যায় সাইট্রিক এসিড । এই সাইটিক অ্যাসিড দুটি উপায়ে কিডনির পাথর দূর করতে পারে। এক টি হলঃ প্রসাবে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে ,নতুন পাথর গঠনে ঝুঁকি কমাতে পারে। দুইঃ পাথর বড় হওয়া রোধে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম অক্সালেট ফুটিক গুলোর সঙ্গে আবদ্ধ থাকে। তাই ডায়েট চাটে বেশি পরিমাণ সাইট্রিক এসিড জাতীয় ফল রাখুন যেমন-কমলা, লেবু, আমলকি, আঙ্গুর ইত্যাদি।
অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার কম খান
অক্সালেট এ রয়েছে এন্টি নিউট্রিয়েন্ট। যা উদ্ভিদ জাতীয় সব ধরনের খাবারে পাওয়া যায়। যেমন-সবজি, ফল, শাক এবং কোকো তাছাড়াও শরীর অনেকটাই অক্সালেট নিজেই তৈরি করতে পারে। অনেক সময় অক্সালেট ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ গুলো একসঙ্গে হয়ে কিডনিতে পাথর জমাতে সাহায্য করে। এর কারনে অনেক সময় কিডনি ধরা পড়লে চিকিৎসকরা অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার খেতে নিষেধ করেন।
পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ করুন
কি দিতে পাথর ক্যালসিয়াম দাঁড়ায় তৈরি হয় বলে অনেকেই মনে করেন ক্যালসিয়াম
গ্রহণ করা যাবে না। তবে এ ধারণাটি ভুল। কারণ ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কিডনিতে
পাথর হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে বিশেষজ্ঞদের মত। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হলঃ পনির,
দুধ, টক দই ইত্যাদি।
ভিটামিন সি বেশি খাওয়া যাবে না
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন সি যুক্ত খাবার গুলো কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণ করলে প্রসাবে অক্সালেটর নিঃসরণ বাড়াতে পারে। কারণ ভিটামিন সি শরীরে অক্সালেট রূপান্তরিত হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কানের ইনফেকশন সারানোর ঘরোয়া উপায়
মধ্যবয়সী এবং বয়স্ক পুরুষদের নিয়ে গবেষণায় করে দেখা গেছে যে, যারা ভিটামিন সি
বেশি খান তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হতে পারে। তবে হ্যাঁ সব
ধরনের ভিটামিন সি ঝুঁকির কারণ নয়। যেমন আপনি চাইলে লেবু খেতে পারেন।
প্রাণিজ প্রোটিন কম খান
মাছ-মাংস ও দুধজাতীয় খাবার বেশি খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণিস প্রোটিন গ্রহণে উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম নিঃসরণ বাড়াতে পারে এবং সাইট্রেটের এর মাত্রা কমতে থাকে।
উপসংহার
প্রিয় বন্ধুরা আজকের, কিডনির পাথর কি - কিডনির পাথর দূর করার ১২ টি ঘরোয়া উপায় এ পোষ্টটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। আশা করছি,কিডনির পাথর কি - কিডনির পাথর দূর করার ১২ টি ঘরোয়া উপায় এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হবেন। এমন অনেক পোস্ট পেতে আমাদের পেজটি ফলো করুন।-ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url