লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা


বাঙ্গালীদের খাওয়ার প্লেটে এক টুকরো লেবু থাকবে না এটা কখনো হবার না। আবার এই করিম গরমে শরীরকে একটু আরাম দিতে অনেকেই লেবুর পানি পান করি ।লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও ফাইবার । অতিরিক্ত গরমে শরীরকে ঠান্ডা করে স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে আসতে সাহায্য করে লেবুর শরবত। এই লেবুর যেমন অনেক উপকারীতা রয়েছে আবার তেমনি অপকারিতাও রয়েছে।আসুন জেনে নেই,লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।

প্রিয় বন্ধুরা আজ এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি বিস্তারিত আলোচনা করব,লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে আসুন আর দেরি না করে জেনে নেই,লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা প্রসঙ্গে।

লেবু খাওয়ার উপকারিতা

লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জানবো লেবু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

আরো পড়ুনঃ ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা

  • লেবু রক্ত পরিশোধন করে।
  • শরীরে ভেতরে টনিক দূর করে, অন্তনালি ,যকৃত ও পুরা শরীরকে পরিষ্কার রাখে।
  • শ্বাসনালী ও গলার প্রদাহ সারাতে সাহায্য করে।
  • লেবু ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • লেবু আর্থাইটিস রোগীদের জন্য ভালো।
  • লেবুর ভিটামিন সি অ্যান্টি সেপটিক এর কাজ করে এবং ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করে।
  • লেবু বুক জ্বালা প্রতিরোধ করতে ও আলসার সারাতে সাহায্য করে।
  • লেবুর ভিটামিন সি ক্যান্সার কোষ গঠন প্রতিরোধ করে।
  • সামান্য গরম পানিতে লেবুর রস পরিপাক প্রক্রিয়াকে কার্যকর করে এবং লিভার কে সুস্থ রাখে।
  • ব্রণের লেবুর রস দিলে ব্রণ দূর হবে আর নতুন ব্রণ উঠতেও বাধা প্রদান করবে।
  • লেবুর খোসা শুকিয়ে গুড়ো করে ব্যবহার করা যায় গোসলের সময় ।গরমে শরীরকে ঠান্ডা করবে। এছাড়া গুড়ো মাথাব্যথা দূর করবে।

লেবুর খোসার উপকারিতা

লেবুর খোসার উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

  • লেবুর খোসা হাড়ের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে।
  • লেবুর খোসায় রয়েছে পেকটিন ,ক্যালসিয়াম ,ভিটামিন সি, ফাইবার এবং খনিজ।
  • লেবুর খোসায় থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • লেবুর খোসা বাজে কলেস্টরলের মাত্রা কমায়।
  • লেবুর খোসার মধ্যে পটাশিয়াম থাকায় এটি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
  • লেবুর খোসাতে থাকা ফাইবার বা আস অন্তকে পরিষ্কার রাখে।
  • এটি হজমের সাহায্য করে এবং পেট ফোলা রোধ করে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য লেবুর খোসা বেশ কার্যকর। এটি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • লেবুর খোসা মুখে বা কনুইয়ের কালো দাগ বলিরেখা বার্ধক্যের সাপ দূর করতে সাহায্য করে।

লেবু ও গরম পানির উপকারিতা

লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা এ প্রসঙ্গে আমরা জানবো লেবু ও গরম পানির উপকারিতা সম্পর্কে। নিম্নে এই সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

  • লেবু ও গরম পানি দেহের হরমোনকে স্বয়ংক্রিয় রাখে।
  • এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে সারা দিনের হজম শক্তি ভালো থাকে।
  • ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে দেহের পিএইচ এর ভারসাম্য ঠিক থাকে।
  • লেবু ও গরম পানি একসাথে মিশিয়ে খেলে দেহের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

লেবুর শরবত এর উপকারিতা

লেবুর শরবত এর উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

ক্যান্সার প্রতিরোধ

লেবুতে থাকা ভিটামিন এ, সি, ই ,বিটা ক্যারোটিন পাকস্থলী, স্তন, জরায়ু, লিভার, ফুসফুস ও অগ্নাশয় এর ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

ওজন কমায়

ঔষধের চেয়েও দ্রুত গতিতে লেবু ওজন কমায়। কারণ লেবু শরীরে অতিরিক্ত চর্বি ছড়াতে সাহায্য করে।

পাকস্থলীর পাথর দূর করে

লেবুতে থাকা চর্বি বিরোধী উপাদান যা চর্বিকে গলাতে সাহায্য করে। এছাড়াও পাকস্থলীর পাথর দূর করতে দরকার উচ্চ ফাইবার বা আঁশ যুক্ত খাবার যা লেবুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান রয়েছে।

ঠান্ডা জনিত রোগ উপশম করে

হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে চায়ের মত খেলে অল্পতে সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা দূর হয়। তাছাড়াও লেবুস্নায়ু ও মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়। আবার এটি ফুসফুস পরিষ্কার করে অ্যাজমা সমস্যা সমাধান করে।

ক্লান্তি দূর করে

এক গ্লাস ঠান্ডা লেবুর শরবত নিমেষে ক্লান্তি দূর করে দেয়। এছাড়াও মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা দূর করে এই লেবু।

লেবু দিয়ে রূপচর্চা

লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জানবো লেবু দিয়ে রূপচর্চা সম্পর্কে। আসুন তাহলে নিম্নে জেনে নেই লেবু দিয়ে রূপচর্চা সম্পর্কে।

লেবু কালচে ভাব দূর করে

অনেকেরই কালচে কোনই ও হাঁটুর মধ্যে কালসে ভাব রয়েছে। এ সকল কালচে দাগ দূর করতে আক্রান্ত স্থানে লেবু ও লবণের মিশ্রণ ঘষে নিন। ফলাফল পাওয়ার জন্য সপ্তাহে দুই দিন কিংবা তিনদিন লেবু ও লবন এর মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। এতে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।

মুখে ব্যবহার

মুখের ত্বক ভালো রাখতে লেবুতে থাকা ভিটামিন সি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। বয়সের ছাপ পড়া থেকে রক্ষা করে, ত্বকের ক্ষয় দূর করে। লেবু ত্বক মসৃণ রাখে গরম ও ঘামের কারণে হওয়া তৈলাক্ত ভাব কমায়। 

আরো পড়ুনঃ কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা

এমনকি লেবু ত্বকের মৃতকোষ এবং ত্বক ফাটা দূর করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে তাই লেবু ব্যবহার করুন। লেবুর রসের সঙ্গে ডাবের পানি মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে১৫মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি তৈলাক্ত ত্বকে খুব ভালো কাজ করে।

মাথার ত্বকে ব্যবহার

লেবুতে থাকা অ্যান্টিসেপটিক ও প্রদাহরোধই উপাদান মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখে। লেবু খুশকি ও রক্ষতার বিরুদ্ধে লড়াই করে। ছিটচিটে ভাব দূর করে ফলে খুশকি দূর হয়। তাই মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে এলোভেরা জেল এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান। বিশ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এর ফলে খুশকি দূর হওয়ার পাশাপাশি চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং চুল পড়া কমে যায়।

দাঁতে ব্যবহার

ঝকঝকে সাদা দাঁত পেতে লেবুর তৈরি হোয়াইটিং প্যাক বেশ কার্যকর। এর জন্য ব্রেকিং সোডা ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশে পেস্ট তৈরি করে নিন এবং তা দাঁতের উপরে পাতলা করে প্রলেপ দিয়ে রাখুন। তারপর টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত মেজে নিন এবং পানি দিয়ে কুল কুচি করুন। দেখবেন দাঁত ঝকঝক করবে ।

ঠোঁটে ব্যবহার

গরমকালের ঠোঁট শুষ্ক ও মলিন হলে। এই সমস্যা দূর করতে লেবুর রস ও লাল চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। লেবু ও চিনির এই সংমিশ্রণটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করতেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এবার লেবু ও চিনি সংমিশ্রণ আলতোভাবে ঠোঁটে মালিশ করে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

লেবু পানি

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে একটি লেবু অর্ধ করে কাটুন। এক গ্লাস পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করুন। এটি দিনে যেকোনো সময়ে পান করতে পারেন।

পুদিনা পাতা ও লেবু

এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচ লেবুর রস ও কয়েকটি পুদিনা পাতার কচি মেশান। পানিটি প্রতিদিন পান করুন ।এটিরা সাদ বাড়াতে মধু ব্যবহার করতে পারেন।

মধু ও লেবু

এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচ লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু মিশন। এবং এটি সকালে খালি পেটে পান করুন এতে করে দ্রুত ওজন কমবে।

শশা ও লেবু

লেবু ও শশা স্লাইস করে এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন। শশায় থাকা পটাশিয়াম হজমের গন্ডগোল দূর করে।

আদা ও লেবু

আদা ও লেবু ওজন কমাতে বেশ কার্যকর। আদা ও লেবু মিশ্রিত পানিও নিয়মিত পান করলে বাড়তি মেদ দূর হয়ে যায়।

অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা

লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা এ প্রসঙ্গে আমরা জানবো অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। নিম্নে অতিরিক্ত লেবু খাবার অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

আরো পড়ুনঃ সজনে পাতা ও ডাটার উপকারিতা

  • অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ফলে মুখমণ্ডলের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে যায়।
  • পেট খারাপ হতে পারে।
  • এসিড এবং বমির আশঙ্কা থাকে।
  • মায়ের গ্রেনে সমস্যা হয়।
  • রক্তে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যায়।
  • ডিহাইড্রেশন তৈরি হয়।
  • সানবার্ন হতে পারে।
  • উৎসেচক ভেঙ্গে যায়।

শেষ কথা

আজ আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে,লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনারা এর মাধ্যমে,লেবু খাওয়ার উপকারিতা - অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এমন অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে আমাদের পেজটি ফলো করুন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url