বিয়ে করা ফরজ কি - বিয়ে কখন করা ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ


বিয়ে করা আল্লাহর রাসূলগণের আচারিত নীতি। সেই হিসেবে বিয়ে করা সুন্নত। তবে ব্যক্তি বিশেষে অবস্থান অনুযায়ী এটি নানা পর্যায়ে যেতে পারে । ব্যক্তি ভেতে বিয়ের ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুকাদ্দা, মাকরু,হারাম বলে বিবেচিত হয়। আজ  আলোচনা করব,বিয়ে করা ফরজ কি - বিয়ে কখন করা ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ তা সম্পর্কে।

বন্ধুরা আপনারা কি বিয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত জানেন, যদি জেনে না থাকেন তাহলে, বিয়ে করা ফরজ কি - বিয়ে কখন করা ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ এই পোস্টটি আপনাদের জন্য। বন্ধুরা আসুন তাহলে জেনে নেই,বিয়ে করা ফরজ কি - বিয়ে কখন করা ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ তা সম্পর্কে।

ভূমিকা

মানব জীবনে বিয়ে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ইসলামে বিয়েকে ঈমানের অধ্যক্ষ বলা হয়। এমনকি বিয়ের মাধ্যমে ঈমানের অন্যতা পাওয়া যায়। বিয়েতে শুধু শারীরিক চাহিদা বা ঈমানের পূর্ণতা করে তাই নাই পুরুষের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটায়। তাই আজ আমরা আলোচনা করব,বিয়ে করা ফরজ কি - বিয়ে কখন করা ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ তার সম্পর্কে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা

এ বিষয়ে আমরা আরো জানবো, বিয়ে করা যার জন্য ফরজ, বিয়ে ফরজ নাকি সুন্নত কোরআন হাদিস কি বলে, বিয়ে করা ফরজ কি, বিয়ে করা কখন ফরজ, কখন নিষিদ্ধ এগুলো সম্পর্কে। আসুন তাহলে নিম্নে বিস্তারিত জেনে নেই।

বিয়ে করা যার জন্য ফরজ

মূলত ব্যক্তির শারীরিক ,মানসিক ও আর্থিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে বিয়ে। তাই বিয়ের হুকুম এক্ষেত্রে একরকম হয় বরং ব্যক্তি ভেদে বিয়ে ফরজ ,ওয়াজিব, সুন্নতে মুকাদ্দা, মাকরূহ, ও হারাম বলে বিবেচিত। ব্যক্তির জন্য বিয়ের ফরজ হয় চারটি শর্তেঃ

  • যে ব্যক্তি বিয়ে না করলে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।
  • ওই ব্যক্তির জন্য বিয়ে ফরজ যে ব্যভিচার থেকে বাঁচার জন্য রোজা রাখতেও অক্ষম।
  • সে ব্যক্তির বাদী গ্রহণেরও সুযোগ নেই।
  • সর্বোপরি যে ব্যক্তি বৈধ পন্থায় স্ত্রীর মোহর, ভরণ পোষণে ব্যয় করতে সক্ষম। এমন ব্যক্তির জন্য বিয়ের ফরজ।

বিয়ে ফরজ নাকি সুন্নত কোরআন হাদিস কি বলে

বিয়ে করা ফরজ কি - বিয়ে কখন করা ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ এই পোষ্টের মাধ্যমে জানব বিএ ফরজ নাকি সুন্নত কোরআন হাদিস কি বলে তা সম্পর্কে। এ বিষয়ে আলেমদের মতামত যেঃ

বিবাহ বা নিকা ইসলামিক আইন শাস্ত্রে পাঁচটি বিধানী গ্রহণ করতে পারে এটি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে থাকে। বিয়ে বাধ্যতামূলক ও ওয়াজিব, সুন্নাহ, মুবাহ,মাকরূহ বা হারাম হতে পারে। সেক্ষেত্রে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

  • বাধ্যতামূলক (ওয়াজিব) তার জন্য যারা যৌনতার জন্য আকাঙ্ক্ষা করে এবং বিয়ের সামর্থ্য রাখে। কুরআন (৪ঃ২৫)।বিয়ে না করলে তারা অবৈধ যৌনকর্মে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে।
  • সুপারিশ করা হয়েছে (সুন্নাহ) তার জন্য যে তার যৌন আকাঙ্ক্ষাকে  নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং বিবাহ করার ক্ষমতা রাখে। কুরআন(৪ঃ৩)
  • তার জন্য জায়েজ (মুবাহ) যার কোন যৌন ইচ্ছা নেই। কুরআন(৪ঃ৩)
  • তার জন্য অপছন্দ কর (মাকরূহ) যার কোন যৌন ইচ্ছা নেই এবং সে ভয় পায় সে তার সঙ্গীর প্রতি দায়িত্ব পালন করতে পারবে না ।কুরআন(৬৫ঃ৬)
  • তার জন্য নিষিদ্ধ যার কোন যৌন ইচ্ছে নেই এবং সে জানে যদি সে বিয়ে করে তাহলে সে নারীর ক্ষতি করবে বা সমস্যার সৃষ্টি করবে। যেমন সে যদি সহবাস করার সামর্থ্য না রাখে কিন্তু সঙ্গী করে। কোরআন(৬৫ঃ৬)। আল্লাহর নারীদের ক্ষতি করা নিষিদ্ধ করেছেন।

বিয়ে করা ফরজ কি

বিয়ে করা ফরজ কি আসুন বন্ধুরা আমরা জানি,বিয়ে করা ফরজ কি - বিয়ে কখন করা ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা কলা ভর্তার উপকারিতা

যদি আপনার যৌন চাহিদা অত্যাধিক পরিমাণে বাড়তে থাকে আপনি পাপ কাজে জড়িয়ে পড়তে পারেন অথবা বিভিন্ন পাপ কাজের জড়িয়ে পড়ার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। তাহলে বিবাহ করা আপনার জন্য ফরজ।

হাদিসটি ইমাম বুখারী (৫০৬৬)ও ইমাম মুসলিম (১৪০০) ইবনে মাসুদ রাদিআল্লাহু থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে কিছু যুবক ছিলাম যাদের কিছুই ছিল না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন হে যুবক সমাজ তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থ্য রাখ ।তাদের উচিত বিয়ে করে ফেলা। কেননা বিয়ে দৃষ্টি অবনতকারী এবং লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী। আর যার সামর্থ্য নেই তার উচিত রোজা রাখা। কেননা রোজা যৌন উত্তেজনা প্রশমনকারী।

বিয়ে করা কখন ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ

বিয়ে করা কখন ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ এখন আমরা জানবো, বিয়ে করা ফরজ কি - বিয়ে কখন করা ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে। আসন বন্ধুরা আমরা নিম্নে জেনে নেই বিয়ে করা কখন ফরজ, কখন নিষিদ্ধ সে সম্পর্কে।

বিয়ে একটি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ইসলামে বিয়েকে ঈমানের অর্ধেকও বলা হয়। বিয়ের মাধ্যমে ঈমানের পূর্ণতা পাওয়া যায়। বিয়ের শুধু শারীরিক চাহিদাই পূরণ করে না এটি পুরুষের ব্যক্তিত্ব ও বিকাশ ঘটায। এবং সমাজে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে ।এর জন্য সময়মত বিয়ে করা গুরুত্ব ইসলাম দিয়েছেন। যারা বিয়ের উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও বিয়ে করেন না তাদেরকে শয়তানের দলভুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

হযরত আবু জর(রা) থেকে বর্ণিত ,একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আক্কাফ (রা) কে বললেন, হে আক্কাফ !তোমার কি স্ত্রী আছে তিনি বললেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমার কি সম্পদ ও সচ্ছলতা আছে। তিনি বলেন ,আছে। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন তুমি এখন শয়তানের ভাইদের দলভুক্ত।যদি তুমি খ্রিস্টান হতে তবে তাদের রাহেব হতে ।নিঃসন্দেহে বিয়ে করা আমাদের ধর্মের রীতি। তোমরা কি শয়তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাও ।শয়তানের কাছে নারী হলো অস্ত্র। ইসলামে ব্যক্তির স্বাবলম্বী ও সক্ষমতার বিভিন্ন ধরন সাপেক্ষে বিয়েকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমনঃ

ফরজ বিয়ে

যদি সমস্ত থাকার সাথে সাথে চাহিদা এত বেশি থাকে যে বিয়ে না করলে ব্যভিচার বা হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তখন বিয়ে করা ফরজ। মানবজীবনে বিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়, ইসলামে বিয়ে ঈমানের অর্ধেক ও বলা হয়েছে। এর ফলে ঈমানের পূর্ণতা পাওয়া যায়। এবং দিয়ে শুধু মানুষের চাহিদা মেটায় তা নয় এটা পুরুষের ব্যক্তিত্ব বিকাশ ঘটায় এবং সমাজে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে। যারা বিয়ের উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও বিয়ে করে না তারা শয়তানের দলভুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়।

আরো পড়ুনঃ আপেলের উপকারিতা ও অপকারিতা

কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারী সংক্রান্ত ফেতনায় জড়িয়ে পড়ে সবাই। কিন্তু যারা বিয়ে করেছে তারা এই সমস্যায় পড়ে না থাকে পবিত্র নোংরামি মুক্ত। তারপর বলেন আক্কাফ, তোমার ধ্বংস হোক তুমি বিয়ে করো নতুবা তুমি সকল মানুষের মধ্য থেকে যাবে।

ওয়াজিব দিয়ে

যখন শারীরিক চাহিদা থাকে এবং এই পরিমাণ সমর্থ্য থাকে যে তার এবং স্ত্রীর প্রতিদিনের খরচ বহন করতে পারবে। তখন বিয়ে করা ওয়াজিব এ অবস্থায় বিয়ে থেকে বিরত থাকলেও গুনাহ হবে।

সুন্নত দিয়ে

যদি শারীরিক চাহিদা প্রবল না থাকে কিন্তু স্ত্রীর অধিকার আদায়ের সামর্থ্য রাখে তখন বিয়ে করা সুন্নত। এ অবস্থায় খারাপ কাজের প্রতি জোকার আশঙ্কা না থাকলে বিয়ে না করলে কোন অসুবিধা নেই।

নিষিদ্ধ বিয়ে

যদি কারো আশঙ্কা হয় যে সে স্ত্রী অধিকার আদায় করতে পারবে না ।দৈহিক হোক বা আর্থিক চাহিদা মেটাতে পারবে না ।তার জন্য বিয়ে করা নিষিদ্ধ। আবার সমর্থ্য না থাকলেও অনেকের বিয়ের ইচ্ছে আছে, সক্ষম পুরুষ কিন্তু স্ত্রীকে ভরণ পোষণ দেওয়ার ক্ষমতা নেই। এই অবস্থায় বিয়ে না করে রোজা রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাদিসে। কারণ রোজা দৈহিক কাম উত্তেজনা দূর করে থাকে এ সময় সক্ষমতা অর্জনের জন্য বেশি বেশি কাজ ও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন।

শেষ কথা

তাহলে বন্ধুরা আপনারা জানলেন তো, বিয়ে করা ফরজ কি - বিয়ে কখন করা ফরজ ,কখন নিষিদ্ধ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে বিয়ে সম্পর্কে। আশা করছি বিয়ে নিয়ে আপনাদের আর কোন মতবিরোধ থাকবে না। তার পরেও যদি কোন মতবিরোধ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।-ধন্যবাদ



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url