ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
ফণীমনসা প্রজাতির এক ধরনের ফল হল ড্রাগন ফল। এই ফল বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন ভিয়েতনামে এর নাম মিষ্টি ড্রাগন, থাইল্যান্ডে এর নাম স্ফুটিক, চিনে এর নাম ড্রাগন মুক্তার বা আগুন ফল। কিন্তু বাকি সব দেশগুলোতে এটা ড্রাগন নামে পরিচিত। এই ড্রাগন ফলগুলোর কিছু উপকারিতা রয়েছে। তাই আমরা আলোচনা করছি এই পোস্টের মাধ্যমে,ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে ।
আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন,ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে । বন্ধুরা আমরা এমন অনেকেই আছি যারা,ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা। তবে এই পোষ্টির মাধ্যমে আমরা,ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি, আপনারা চাইলে এই পোস্টটির মাধ্যমে তা জানতে পারেন। তাহলে আর দেরি না করে ,ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।হার্টকে সুস্থ রাখতে ড্রাগন ফলের উপকারিতা
বাংলাদেশের বর্তমানে কার্ডিওভাসকুলার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমস্যাগুলো দূর করতে ড্রাগন ফল খুবই উপকারী। এই ফলটি একটি আশ্চর্যজনক ফল ।যা মানুষের পুরনো খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে এবং নতুন ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃমধু ও কালোজিরা খাবার উপকারিতা
হার্টকে সুস্থ রাখতে এই ফলের ভূমিকা অনেক। ড্রাগন ফলে ওমেগা -৩ এবং অমেগা-৯ ফ্যাটি এসিড থাকে যা হাটের জন্য স্বাস্থ্যকর। তা ছাড়াও ড্রাগন ফল হৃদরোগ, জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা এবং বিষন্নতা ভাব দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
ওজন কমাতে ড্রাগন ফলের উপকারিতা
ড্রাগন ফলে মূলত কোলেস্টরেল কম থাকে। এর ফলে আপনার শরীরে চর্বি বাড়ে না। ফলে
আপনাকে সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান রাখে। ড্রাগন ফল শরীরের সঠিক ওজন বড়জায় রাখতে
সাহায্য করে। এমনকি ড্রাগন ফল আপনার দাঁত কে শক্তিশালী ও সুস্থ রাখতে সাহায্য
করে।
হজম শক্তিকে শক্তিশালী করতে ড্রাগন ফলের উপকারিতা
ড্রাগন ফল হজম শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি পাকস্থলীর প্রক্রিয়া পরিষ্কার করতে
সাহায্য করে থাকে। এতে অতিরিক্ত ফাইবার থাকার কারণে দুর্বল হজম শক্তিকেও
শক্তিশালী করে তোলে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়। তাই শরীরকে শক্তিশালী
করতে বেশি বেশি ড্রাগন ফল এবং মাংস খান এতে প্রচুর প্রোটিনের পরিমাণ থাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক
ড্রাগন ফল ক্যান্সার প্রতিরোধে একটি ফল। এই ফলটিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
যুক্ত তাই আপনার রাডিক্যালস মুক্ত এবং ক্যান্সার উপাদানকারী উপাদান হ্রাস করে।
ড্রাগন ফল ৯০% এন্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আদর্শ খাবার
ড্রাগন ফলে অতিরিক্ত ফাইবার থাকায় এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই
ফলটি রক্তে চিনির মাত্রা কমায় এবং শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে। তাই আপনারা
চাইলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিয়মিত ড্রাগন ফল খেতে পারেন।
ত্বকের ছিদ্র ছিদ্র গত দূর করতে ড্রাগন ফল
ড্রাগন ফলে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় তা ত্বক টানটান রাখে এবং তারুণ্যতা ভাব মুখে
বজায় রাখে। আবার আপনি চাইলে এটি ফেস মাছ তৈরি করে মুখে লাগাতে পারেন।
হাড়ে জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা দূর করে
আর্থ্রাইটিস সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় ড্রাগন ফল। আর্থাইটিস হলে শরীরের জয়েন
গুলিতে প্রচন্ড ব্যথা দেখা দেয় এবং অচলতা সৃষ্টি হয়। তাই আপনি যদি আপনার
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই ফলটি রাখেন।তাহলে এই ফলটি আপনার সমস্যার সাথে লড়াই
করতে আপনাকে সহায়তা করবে।
চুল পড়া বন্ধ করে
ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন এ প্রসঙ্গে আমরা জানবো চুল পড়া বন্ধ করা সম্পর্কে। পাকা চুল রোধ করতে ড্রাগন ফলটি বেশ কাজ করে। ড্রাগন ফলের রস মাথার ত্বকে ৩০ মিনিট লাগিয়ে যে কোন শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন ।
আরো পড়ুনঃ কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা
এটি আপনার পাকা চুল রোধ করতে এবং চুলকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। এর ফলে আপনার
চুলের কোষ গুলো পুনরাবৃত্তি হবে। আপনার চুলগুলি অক্সিজেন পাবে এবং মসৃণ ও
স্বাস্থ্যকর হবে।
মুখের ব্রণের সমস্যা দূর করে
ব্রণের সমস্যা দূর করতে ড্রাগন ফল এর ভূমিকা অধিক। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন সি থাকায় এটি ট্রপিকাল মলম হিসেবে কাজ করে। এই মলমটি তৈরি করতে প্রথমে
ড্রাগন ফলের টুকরাগুলো নিয়ে ব্লেন্ডারে পেস্ট তৈরি করে পরে মুখের আক্রান্ত
স্থানে লাগান। এই পেস্ট টি যদি আপনি প্রতিদিন সকালে ও রাতে ব্যবহার করেন তাহলে
ভালো ফলাফল পাবেন।
রোদে পোড়া ত্বক সুস্থ করতে ড্রাগন ফল
মুখে রোদে পোড়া ত্বক দূর করতে শসার রস, মধু এবং ড্রাগন ফলের টুকরা একসাথে মিক্সড
করে ব্লেন্ডারে পেস্ট তৈরি করে তা মুখে লাগাতে পারেন। দেখবেন মুখে লাগালে ত্বকের
দাগ প্রশমিত হবে। এছাড়াও ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন বি৩ ত্বককে মশ্চারাইজ করে এবং
রোদে পোড়া আক্রান্ত স্থানকে ঠান্ডা রাখে।
হাড়কে মজবুত করে
ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা
জানবো ড্রাগন ফল কিভাবে হারকে মজবুত করে।ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম
রয়েছে যার ফলে এটি হাড়কে মজবুত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবান রাখে।
চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে
ড্রাগন ফল চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে বেশ কার্যকর। মূলত বেগুনি ড্রাগন ফলে
রয়েছে বিটা ক্যারোটিন যার দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে ।এছাড়াও গাজরে ও
রয়েছে বিটা কেরোটিন যা খেলে চোখের দৃষ্টি শক্তি উন্নত হয়।
কিডনিকে সুস্থ রাখে
প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম পাওয়া যায় বেগুনি ড্রাগন ফলে। আর এই পটাশিয়াম
পিকনিকের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং কিডনিতে পাথর জমতে দেয় না। তাই কিডনিতে
সুস্থ রাখতে নিয়মিত বেগুনি ড্রাগন ফল খান।
অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধক
আমাদের শরীরে যদি ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের অভাব হয় তাহলে আমরা অস্টিওপোরোসিস রোগে ভুগি। আর এই অস্টিওপোরোসিস এর সমস্যা দূর করতে বেগুনি ড্রাগন ফল খুবই কার্যকর। কারণ বেগুনি ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস বিদ্যমান।
ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুকি কমায়
ড্রাগন ফল ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। কারণ ড্রাগন ফলে রয়েছে ফ্যানোলিক
নামক এসিড এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীরের ক্ষতিকারক ক্যান্সার কোষ গুলোকে ধ্বংস
করে ফেলে। তাই ড্রাগন ফলের উপকারিতা অধিক।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
ড্রাগন ফলে অতিরিক্ত মাত্রায় ফাইবার রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য
করে। ড্রাগন ফলে ৮ থেকে ১২ গ্রাম ফাইবার থাকে ।কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের মল সাধারণত
খুবই শক্ত হয়ে থাকে। কিন্তু ড্রাগন ফলে অতিরিক্ত মাত্রায় পানি থাকায় আমাদের
অভ্যন্তরীণ অংশকে হাইড্রেট রাখে ।তাছাড়াও ড্রাগন ফলে থাকা ফাইবার পাকস্থালির
বর্জ্য পদার্থ গুলোকে অপসারণ করে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ড্রাগন ফলে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং কিছু এন্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের
শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ড্রাগন
ফল ডায়াবেটিস রোগীদের বেশ উপকারী।
রক্তে অক্সিডেন্ট ধরে রাখে
রক্তে অতিরিক্ত মাত্রায় অক্সিজেন ধরে রাখতে সাহায্য করে আয়রন নামক খনিজ পদার্থ।
ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ। ধারণা করা হয়ে থাকে প্রতি শত
গ্রাম ড্রাগন ফলে প্রায় দুই গ্রাম আয়রন থাকে। রক্তে থাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন
এবং সেই আয়রন রক্তের মধ্যে লোহিত কণিকা গঠন করে। আর লোহিত রক্তকণিকা আমাদের
রক্তে অক্সিজেন ধরে রাখতে সাহায্য করে। অর্থাৎ রক্তে অক্সিজেন মাত্রা ধরে রাখতে
ড্রাগন ফল বেশ কার্যকর
শ্বাসকষ্ট সারাতে ড্রাগন ফল
শ্বাসকষ্ট সারাতে দাগন ফলের উপকারিতা অনেক। কারণ হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং
শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিকমত রাখতে ড্রাগন ফলে থাকা খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন গুলো বেশ
কার্যকরী। তাই আপনারা চাইলে শ্বাসকষ্ট দূর করতে ড্রাগন ফল খেতে পারেন।
ব্যথা দূর করে
আমাদের শরীরে জয়েন্ট গুলোর ব্যথা দূর করতে ড্রাগন ফলের ভূমিকা অপরিসীম। এছাড়াও
কিডনি সুস্থ রাখতে এবং শরীরের ব্যথা দূর করতে ড্রাগন ফল খুবই উপকারী।
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নি ন এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জানবো গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে।একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন ফাইবার জাতীয় খাবার রাখা প্রয়োজন। আর ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট জাতীয় পদার্থ।
আরো পড়ুনঃ সজনে পাতা ও ডাটার উপকারিতা
ফাইবার গর্ভবতী মায়ের হজমে সাহায্য করে, আর কার্বোহাইড্রেট সহ আরো যে সকল খনিজ
পদার্থ রয়েছে সেগুলো বাচ্চার গ্রোথবৃদ্ধি এর পাশাপাশি সুস্থ সবল রাখতে বিশেষ
ভূমিকা রাখে। তাই গর্ভবতীর মায়েদের এই সময় ড্রাগন ফল খাওয়ার ভালো।
লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা
আমাদের শরীরের জন্য লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা অনেক। ড্রাগন ফল কয়েক ধরনের হয়ে
থাকে কিন্তু লাল ড্রাগনেকিছু অতিরিক্ত উপকারিতা রয়েছে ।উদাহরণস্বরূপ লাল ড্রাগন
খাওয়ার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় ,শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়াও রয়েছে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারি, ওজন রাস করে, হৃদপিণ্ড ভালো
রাখে ,হজমে সাহায্য করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। তাই আমাদের নিয়মিত লাল
ড্রাগন ফল খাওয়া উচিত।
শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে, আশা করছি ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। আপনাদের কাছে যদি ড্রাগন ফল খাওয়ার ২২ টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমাদের পেজটি ফলো করবেন।-ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url