সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা


বন্ধুরা আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন ,সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আপনারা অনেকে সরিষার তেলের গুনাগুন সম্পর্কে জানতে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘাটাঘাটি করে থাকেন। তো আপনাদের সুবিধার জন্য তাই আমি নিয়ে এসেছি,সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা। তো বন্ধুরা আপনারা যদি ধৈর্য সহকারে আমার এই পোস্টটি পড়েন তাহলে সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আরো জানবো, সরিষার তেলের উপকারিতা স্বাস্থ্যের জন্য, সরিষার তেলের প্রকারভেদ, সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ, সরিষার তেল ব্যবহার করার নিয়ম, সরিষার তেল দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার নিয়ম, সরিষার তেলের অপকারিতা সম্পর্কে।

সরিষার তেলের উপকারিতা স্বাস্থ্যের জন্য

সরিষার তেলের উপকারী গুনাগুনের কথা বলে শেষ করা যাবে না। বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি নিরাময়ে সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে এখন আমরা জানবো সরিষার তেলের উপকারিতা স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু সে সম্পর্কে । নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

আরো পড়ুনঃ মাশরুম চাষ পদ্ধতি - মাশরুম এর উপকারিতা

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে

হার্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সরিষার তেলের জুড়ি মেলা ভার। সরিষা তেল মনোস্যাচুরেটেড এবং আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড, ওমেগা -৩ এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ ।এই দুটি ফ্যাটি অ্যাসিড ইসকমিক হৃদরোগে ঝুঁকি  ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে সরিষার তেলের হাইপোকলেস্টেরোলেমিক এবং হাইপো লিপিডেমিক প্রভাব রয়েছে। যার কারনে এটি খারাপ কোলেস্টরেলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে ।এর ফলের হৃদরোগের ঝুকি কমে অনেক।

পেশি ব্যথা, বাত ব্যথা, জয়েন্ট ব্যথা

বহু বছর ধরেই সরিষার তেল পেশি ব্যথা ,বাত ব্যথা ,জয়েন্ট ব্যথা মুক্তির কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আবার নিয়মিত এই তেল শরীরে মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। সরিষার তেলে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড জয়েন্টের ব্যথা ও বাতের ব্যথায় সহায়ক বলে প্রমাণিত।

দাঁতের সমস্যা

বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদের সাথে সরিষার তেল মিশিয়ে ব্যবহার করলে মাড়ির প্রবাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ।সরিষার তেল এবং লবণের ব্যবহার মৌখিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটিয়ে থাকে। তাছাড়াও সরিষার তেল লবন ও হলুদ পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ক্যান্সার

ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ ।এটাকে সবাই ভয় পেয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সরিষার তেল কি সেটা হলেও ভূমিকা পালন করে। সরিষার তেলে থাকা এলিল আইসোথিওসায়ানেট ক্যান্সার বিরোধী ভূমিকা পালন করে, এবং এটি কোষের বৃদ্ধিতে বাধা দিতে কাজ করে।

হাঁপানি

হাঁপানি থেকে মুক্তি পেতে সরিষার তেলের ভূমিকা অপরিসীম। হলুদ এবং সরিষার তেল এটা থেকে রেহাই পেতে অনেকটা সহায়ক।

পোকামাকড় প্রতিরোধক

সরিষার তেল প্রয়োগের সুবিধা হল এটা পোকামাকড় প্রতিরোধক। এই তেল শরীরে লাগালে মশা বা অন্যান্য পোকামাকড় দূরে থাকে ।

সামগ্রিক স্বাস্থ্য

সরিষার তেল সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এবং এটা শরীরে বিভিন্ন ধরনের ব্যথা মারাত্মক রোগ থেকে মুক্তি দেয়। শরীরে বিভিন্ন ধরনের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে, ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।

ত্বকের জন্য

ত্বকের জন্য সরিষার তেল খুবই উপকারী। এটি বার্ধক্যের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। সরিষার তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩,অমেগা ৬,ফ্যাটি অ্যাসিড ,অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই যা বার্ধক্য জনিত সমস্যাকে ত্বরান্বিত করে।

চুলের জন্য

অনেকেই আছেন যারা চুলে সরিষার তেল ব্যবহার করেন। সরিষার তেল মাথা ত্বক এবং চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটা চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাছাড়াও এতে থাকা এন্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রভাব যা খুশকি সমস্যা কে বাড়তে বাধা দেয়। এটি মাথার ত্বকে চুলকানি সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।

সরিষার তেলের প্রকারভেদ

পরিশোধিত তেলঃ হল মেশিনের সাহায্যে সরিষা থেকে যে তেল বের করা হয় তাকে বোঝায়। তবে এই তেলের স্বাদ তিক্ত এবং এটি রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাদা ,কালো, বাদামি সরিষার বীজ থেকে পরিশোধিত সরিষার তেল বের করা হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ ডাবের পানির ২০ টি উপকারিতা

গ্রেড -১ কাচ্চি ঘানিঃ কাচ্চি ঘানি সরিষার তেল বিশুদ্ধ ।তাই বেশিরভাগ গৃহিনী  রান্নার জন্য এই তেল পছন্দ করে থাকেন। আবার এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

গ্রেট- ২ঃ গ্রেড ২ রান্নার জন্য নয় । এই তেলটি সাধারণত থেরাপির জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ 

সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা এয়ার টিকিটের মাধ্যমে আমরা জানবো সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। নিম্নে সরিষা তেলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

  • পুষ্টি উপাদান প্রতি১০০ গ্রাম
  • ফ্যাটি অ্যাসিড, মোট স্যাচুরেটেড - ১১.৫৮২ গ্রাম
  • ফ্যাটি এসিড, মোট মনোস্যাচুরেটেড - ৫৯.১৮৭ গ্রাম
  • ফ্যাটি অ্যাসিড, মোট পলিআনস্যাচুরেটেড - ২১.২৩ গ্রাম
  • শক্তি ৮৮৪ কিলো ক্যালরি

সরিষার তেল ব্যবহার করার নিয়ম

সরিষার তেল আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরির কাজে ব্যবহার করি ।তা ছাড়াও এই তেল অন্যভাবেও ব্যবহার করা যায় ।তো চলুন জানি সরিষার তেল ব্যবহার করার নিয়ম সম্পর্কে।

  • এই তেল আচার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
  • নিরামিষ এবং আমিষ খাবার তৈরিতে সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়।
  • এটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রান্না এমন কি ডাল ফ্রাই করা যেতে পারে।
  • সরিষার তেল লেবু এবং মধুর সাথে সালাদের যোগ করেও ব্যবহার করা যায়।
  • আবার এই তেল আমরা মাথার চুল ও ত্বকে লাগাতে ব্যবহার করি।

সরিষার তেল কখন ব্যবহার করবেন

  • দুপুরের খাবার ও রাতের খাবার ছাড়া সকালের নাস্তায় সরিষার তেল দিয়ে তৈরি আসার খেতে পারেন।
  • সরিষার তেল দিয়ে আমিষ নিরামিষ রান্না খাবার আপনি বিকেলে বা রাত্রে খেতে পারেন।
  • সরিষার তেল দিয়ে তৈরি টিকা পনির মন্সুরিয়ান সন্ধ্যার নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন।
  • আবার সরিষার তেল মাথা এবং চুলে লাগাতে গেলে গোসলের পর চুলে লাগাতে পারবেন। আবার রাতে ঘুমানোর আগেও চলে সরিষার তেল লাগাতে পারবেন।

কতটা ব্যবহার করবেন

সরিষার তেল ব্যবহার করার জন্য কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ নেই ।তবে এটি সব সময় পরিমিতভাবে ব্যবহার করা উচিত। এবং সঠিক পরিমাণ যাতে খাদ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন।

সরিষার তেল দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার নিয়ম 

সরিষার তেল সংরক্ষণের জন্য সবসময় প্রয়োজনীয় পরিমাণে সরিষার তেল কিনুন।তেল ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখলে অনেকদিন ব্যবহার করা যায়। তাই বায়ুরোধী পাত্রে এবং ঘরের তাপমাত্রায় তেল সংরক্ষণ করুন।

সরিষার তেলের অপকারিতা 

সব উপদানেরই একটা ভালো দিক যেমন রয়েছে তেমনি একটি খারাপ দিক ও রয়েছে। তাই সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা এই প্রশ্নের মাধ্যমে আমরা জানবো সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে। সরিষার তেল অতিরিক্ত খাওয়া কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

আরো পড়ুনঃ অশ্বগন্ধার অপকারিতা - মেয়েদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা

ইরুসিক নামের এক ধরনের এসিড রয়েছে সরিষার তেলে যা হার্টের ক্ষতি সাধন করতে পারে। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইরোসিক এসিড হৃদপিন্ডের পেশীতে লিপিডোসিস ঘটিয়ে থাকতে পারে এবং হার্টের টিস্যুর ও ক্ষতি সাধন করতে পারে।

আবার সরিষার তেল কিছু মানুষের শরীরে এলার্জি সৃষ্টি করে।

তো বন্ধুরা জানলেন তো সরিষার তেলের অপকারিতা সম্পর্কে। আশা করছি আপনারা সরিষার তেলের অপকারিতা বিষয়ে অবহিত হয়েছেন।

শেষ কথা

আমরা সকলে কম বেশি সরিষার তেল ব্যবহার করে থাকে। তবে আমরা অনেকেই জানিনা সরিষার তেলের উপকারী গুনাগুনের কথা। তো সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি সরিষার তেলের উপকারিতা ,অপকারিতা, গুনাগুন, ব্যবহারবিধি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। তুই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করবেন এবং আমাদের পেজটি ফলো করবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url