ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায়
ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা আলোচনা করব ওভারিয়ান সিস্ট সম্পর্কে।বর্তমান সময় বেশিরভাগ নারীদের ওভারিয়ান সিস্ট দেখা দেয়। আর এর ফলে অনেকেই দূর চিন্তায় ভুগতে থাকেন। তবে বর্তমান সময় নারীদের হরমোন জনিত সমস্যা ও ওভারি সিস্ট দূর করার বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা হাতের নাগালে এসেছে। আবার এর পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু উপায়ে ওভারি সিস্ট দূর করা সম্ভব।
তবে আমাদের আগে জানতে হবে,ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। আমরা অনেকেই ওভারিয়ান সিস্ট সম্পর্কে জানিনা। তাই আমাদের ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় এ বিষয়ে জানা জরুরী। চলুন বন্ধুরা আর দেরি না করে জেনে নেই,ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।ওভারিয়ান সিস্ট কি
ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় এই পোস্টটির মাধ্যমে এখন আমরা জানবো ওভারিয়ান সিস্ট কি তা সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ বেস্ট ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ
ওভারিয়ান সিস্ট বলতে , ওভারিতে থাকা পানিপূর্ণ স্থল যা ওভারিতে তৈরি হয়। ওভারিয়ান সিস্ট কে অনেকে ক্যান্সারের লক্ষণ হিসেবে ধরে। অভালুশন তৈরি হওয়া এ ধরনের সিস্ট কোন ভাবেই ক্যান্সার হতে পারে না। এটিকে ডাক্তারী ভাষায় ফাংশনাল সিস্ট বলা হয়ে থাকে। নারীদের যেকোনো সময়ে এই সিস্ট হতে পারে ।তবে পঞ্চাশ বছরের নারীদের শরীরে বেশি অভারিয়ান সিস্ট হয়ে থাকে ।ওভারিয়ান সিস্ট তৈরি হওয়ার তিন থেকে ১০ মাসের মধ্যে নিজ থেকে ছোট হয়ে যায় ।
ওভারিয়ান সিস্ট কেন হয়
ডিম্বাশয় বা ওভারির কাজ হল শরীরের ডিম্বাণু তৈরি করা। প্রতি মাসে মূলত ওভারিতে
ডিম্বাণু তৈরি হয়ে থাকে। ওভারলুশনের সময় ওভারির ভেতরে সিস্ট এর মতো হলি কলের
সৃষ্টি হয় এবং ডিম্বাণুর নিঃসরণের পর পরিণত ফলিক কল গুলো নষ্ট হয়ে যায়।
ওভারিতে এই প্রক্রিয়াটি ঠিকঠাক মতো যদি না হয় তাহলে দেখা দেয় ওভারিয়ান সিস্ট।
তবে এই ধরনের শিষ্ট নন ফাংশনাল তবে সন্তান ধারণের সক্ষম।
ওভারিয়ান সিস্ট কয় ধরনের
ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় এই পোষ্টের মাধ্যমে এখন আমরা জানবো ওভারিয়ান সিস্ট কয় ধরনের হয়ে থাকে।
ওভারিয়ান সিস্ট মূলত অনেক কয় ধরনের হয়ে থাকে যেমনঃ
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম একাধিক শেষ টাকা ওভারিতে যে সকল ছোট ফল থাকে সেগুলো পূর্ণাঙ্গ না হলে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম সিস্ট হতে পারে। এর ফলে অনিয়মিত পিরিয়ড হয়। এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অবিবাহিত মেয়েদেরই দেখা দেয়। অনিয়মিত পিরিয়ড বলতে তিন চার মাস পর পর পিরিয়ড হয় আবার ব্লেডিং কম হয়ে থাকে অথবা অনেক বেশি ও হয়ে থাকে।
ফাংশনাল সিট
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েদের ফাংশনাল সিস্ট হয়ে থাকে। এটি হওয়ার কারণ ওভারি
থেকে ডিম না ফুটলে অথবা ডিম ফোটার পরও ফলিকল গুলো চুপসে না গেলে। এই ধরনের
শিষ্টেতেমন কোনো সমস্যা হয় না। এটি নিজে নিজেই সেরে যায়।
এনডিও মেট্রি ও ট্রিকস বা চকলেট সিস্ট
অভারিতে থাকা টিস্যুগুলো যদি জরায়ু ছাড়া শরীর বা পেটের অন্য কোথাও হয়ে থাকে
তখন এই সিস্ট দেখা দেয়। এ ধরনের সিস্ট এ পিরিয়ড অনিয়মিত হয় না এবং বন্ধ্যাত্ব
হতে পারে। এই সিস্টকে ডাক্তারি ভাষায় চকলেট সিস্ট ও বলা হয়ে থাকে।
ডারময়েট সিস্ট
এ ধরনের সিস্ট ওভারির ডারময়েট সিস্ট এর ভেতরে চামড়া কুচকানো থাকতে পারে। আর এই
ধরনের সিস্ট জন্ম দেয় ভয়ের ।কারণ এই ধরনের সিস্ট হলে শরীরে ক্যান্সার খুব সহজেই
হতে পারে। ডারমায়েট সিস্ট হলে অভারিতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এবং ওভারি
পেঁচিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে বিনাইন ক্যান্সার হতে পারে।
সিস্ট অ্যাডানোমা
তরল জাতীয় পদার্থ বেঁধে এক ধরনের ওভারিয়ান সিস্ট তৈরি হয় যাকে সিস্ট
এডোনামা বলে। এ ধরনের সৃষ্টি তেমন কোন সমস্যা তৈরি হয় না ।তাই এ নিয়ে ভয়
পাওয়ার কোন কারণ নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করলে খুব দ্রুতই
এটি থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
ওভারিয়ান সিস্ট এর লক্ষণ
ওভারিয়ান সিস্ট এর লক্ষণ সম্পর্কে জানব আমরাওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় এই পোস্টটির মাধ্যমে। তো চলুন নিম্নে এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
- বমি বমি ভাব হওয়া
- অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়া
- বন্ধ্যাত্ব
- অল্প খেলেও পেট ভরে যাওয়া
- তলপেটে ব্যথা অনুভূত হওয়া
- পেট সবসময় ভরা মনে হওয়া
ওভারিয়ান সিস্ট এর র চিকিৎসা
ওভারিয়ান চিকিৎসার জন্য ডাক্তার সর্বপ্রথম আলট্রাসনোগ্রাফি করে নেন ।এরপর রোগের
অভারিয়ান সিস্টেম প্রকারভেদের ওপর নির্ণয় করে চিকিৎসা পদ্ধতি তে ভিন্নতা
রয়েছে। কিছু কিছু সিস্ট রয়েছে যেগুলো ঔষধের মাধ্যমে নিরাময় করা সম্ভব। আবার
কিছু ক্ষেত্রে টিউমার মার্কার দেখে ফেলে দিতে হয় কিংবা অভারি সহ ফেলে দিতে হয়।
তবে বর্তমানে ল্যাপ্রোস্কোপের এর মাধ্যমে খুব সহজে পেট ছিদ্র করে সিস্ট ফেলে
দেওয়া যায় এবং ৭ দিনে মানুষ সুষ্ঠু জীবন যাপন করতে পারে।
চিকিৎসকের কাছে কখন যাবেন
যে মহিলারা সন্দেহ করেন যে তাদের ডিম্বাশয়ের সিস্ট রয়েছে তারা ঘরোয়া চিকিৎসার
চেষ্টা না করে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ করা উচিত । কারণ শিষ্টের কারণ নির্ণয়
করার পরবর্তীতে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। তাই সিস্ট লক্ষণগুলো শরীরে অনুভূত
হলে দেরি না করে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। যেসব লক্ষণ গুলো দেখা দিলে আপনি
চিকিৎসকের কাছে যাবেন সেগুলো হলঃ
- হঠাৎ পেটে ব্যথা করা
- বমি সহকারে ব্যথা
- জ্বরসহ ব্যথা
- পেলভিক অংশে ব্যথা
- পেট ভারী বা ফোলা ভাব
- শরীরে হঠাৎ শখ বা আঘাতে লক্ষণ দেখা দেয়
যে সকল খাবার এড়িয়ে চলবেন
ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা জানব যে সকল খাবার এড়িয়ে চলবেন সিস্ট দেখা দিলে। যেমনঃ
আরো পড়ুনঃ পাইলস হওয়ার কারণ ও লক্ষণ
- ভাজা খাবার
- অ্যালকোহল জাতীয় খাবার
- পরিষদিত চিনি সমৃদ্ধ খাবার
- লাল মাংস
ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায়
ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় এই পোস্টটির মাধ্যমে এখন আমরা জানবো ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। আসুন বন্ধুরা আমরা নিচে ওভারিয়ান সিস্ট দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নেইঃ
মালিশ করা
ওভারিয়ান সিস্টার এর কারণে ডিম্বাশয়সিস্ট এর ব্যথা চারপাশে পেশি গুলোকে
টান দিতে পারে। তাই আপনি মাসাজের মাধ্যমে টানটান বেশি আগলা করা এবং ব্যথা কমাতে
পারেন। এছাড়াও ওভারিয়ান সিস্ট হলে শরীরে দুই থেকে তিনবার হালকা মালিশ করলে
কিছুটা উন্নতি পাওয়া যায়।
পেটে ছেক বা তাপ দিলে রক্ত প্রবাহ বাড়ে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে ।তাই একটি
হেডিং প্যাড কিংবা গরম পানির বোতল তোয়ালে পেচিয়ে পেটে বা পিঠের নিচে দিয়ে
প্রায় ২০ মিনিটের জন্য সেট দিয়ে ব্যথা কমানোর চেষ্টা করুন ।এটি দিনে কয়েকবার
করলে শরীরের কোন ক্ষতি হবে না।
ওভারিয়ান সিস্ট দূর করার ঘরোয়া একটু উপরের মধ্যে ব্যায়াম অন্যতম। ব্যায়াম
ওভারিয়ান সিস্ট এর সাথে যুক্ত ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
ওজন কমানো
শরীরে অধিক পরিমাণ ওজন থাকলে তা কমানো খুবই জরুরী ।কেননা এতে করে শরীরের হরমোন
গুলোকে আরো ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়
।এবং সিস্ট এর বিকাশকে রোধ করা যায় ।তাই ব্যথা ও ক্লান্তি
লক্ষণগুলো ভালোভাবে উপোম করা যায়।
খাদ্য তালিকা পরিবর্তন
পলিস্টেটিক ওভারিয়ান ক সিস্টরে অনেক মহিলার ইনসুলিন প্রতিরোধ ,হয় যার ফলে
ডায়াবেটিস রোগ হতে পারে। তাই এই সময় খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করা উচিত। যাতে করে
ওভারিয়ান সিস্ট কে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় ।এ যেসব খাবার ইনসুলিন প্রতিরোধে
অবদান রাখে এমন খাবার এগিয়ে যেতে হবে। যেমনঃ
- সাদা আলু
- সাদা রুটি
- পেস্টি
- সাদা ময়দা দিয়ে তৈরি কিছু
- চিনিযুক্ত খাবার
- বেশি সিদ্ধ করা সবজি
আবার এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলি ওভারিয়ান শিষ্ট এর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি রোধে
সাহায্য করে থাকে। যেমনঃ
- হারবাল টি
- স ডাব্বা নারিকেলের পানি
- ব্রুকলি
- বাদাম
- বেরি
- সবুজ শাক
- কোয়াশ
- ফাইবার যুক্ত খাবার
- মাছ এবং মুরগি
- চর্বিবিহীন প্রোটিন
- হলুদ তেল
- জলপাই তেল
- টমেটো
রিলাক্সেশন
রিলাক্সেশন শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তাই রিলাক্সেশন কৌশল যেমন ধ্যান
যোগব্যায়াম ও গভীর শ্বাস শরীরে ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে থাকে।
ইস্ট্রোজেন নিয়ন্ত্রণ
ইষ্টোজেন নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হওয়া ওভারিয়ান সিস্ট এর অন্যতম কারণ। তাই শরীরে
ইষ্টজেনের পরিমাণ বেড়ে গেলে ও ভলিউলোসন অনিয়মিত হয়। এর ফলে সৃষ্টি হতে পারে
ওভারিতে সিস্ট। তাই সিস্ট নিয়ন্ত্রণে শরীরে ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।
হারবাল উপায়
বেশ কিছু হারবাল হারবাল জিনিস রয়েছে যেগুলো শরীরের ব্যালেন্স বা হরমোনের সঠিক
মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এতে করে সিস্টএর হাত থেকে রক্ষা
পাওয়া যায়।
ডায়েট
ডাক্তাররা পরামর্শ দেন যে অস্বাস্থ্যকর ডায়েট ও অনিয়ন্ত্রিত বা অনিয়মিত
লাইফস্টাইলওভারিয়ান সিস্ট এর অন্যতম কাজ কারণ। তাইতো ডায়েটে যদি রাখেন
সবুজ শাকসবজি গোটা শস্য দানা এর পরিমাণ বেশি তাহলে সিস্ট এর মোকাবেলা করা খুবই
সহজ।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
অতিরিক্ত ওজনের ফলে বেশিরভাগ মহিলারাই ওভারিয়ান সিস্ট এর আক্রান্ত হয় ।তাই
অতিরিক্ত মেদ ভুরি ঝরিয়ে রাখতে পারলে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে করতে পারলে ওভারিয়ান
সিস্ট থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
সাপ্লিমেন্ট
ডায়েট এবং মেদ ছাড়াও কিছু ভিটামিন এবং সাপ্লিমেন্ট মেয়েদের শরীরে হরমোন ব্যালেন্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই ভিটামিন ই ফ্লাক্সিড অয়েল ম্যাগনেসিয়াম ভিটামিন বি তার মধ্যে অন্যতম ।
আরো পড়ুনঃ অনিয়মিত ঋতুস্রাব এর কারণ
এসব ভিটামিনের ফলে শরীরের ছরানোর পাশাপাশি ভিটামিনের অভাব দূর করে। যার ফলে অভারিয়ান সিস্ট হতে পারে না।
শেষ কথা
পরিশেষে বলতে চাই যে ওভারিয়ান সিস্ট মেয়েদের একটি কমন সমস্যা। তাই এ থেকে রেহাই পেতে আমাদের জানা উচিত ,ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। তো বন্ধুরা আপনারা এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন ওভারিয়ান সিস্ট কি - ওভারিয়ান সিস্ট দূর করতে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থেকে থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।-ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url