জাল দলিল চেনার উপায় - জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য


আজ আমি আলোচনা করব, জাল দলিল চেনার উপায় - জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে। আমাদের জমি জামা কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই জমির কাগজপত্র ভালো করে যাচাই করে নেওয়া উচিত। যেমন কবলা দলিল ,বায়নামা দলিল পত্র ,দান দলিল পত্র ইত্যাদি। অনেকেই আছে যারা জাল দলিল পত্রের মাধ্যমে জনি কেনাবেচা করে থাকে। এতে করে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়ে যান। তাই আমাদের জাল দলিল চেনার উপায় - জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য সম্পর্কে জানা জরুরি।

এতে করে প্রতারণার হাত থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যাবে। তাই জমি কেনা বা দলিলের বিষয়ে কোন সন্দেহ হলে কিভাবে দলিলটি চাল না সঠিক সেটি নির্ধারণ করবেন তা আমরা আলোচনা করব জাল দলিল চেনার উপায় - জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য এই পোস্টটির মাধ্যমে। তো বন্ধুরা আপনারা জাল দলিল চেনার উপায় - জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আপনারা জাল দলিল চেনার উপায় এবং চাল দলিল বাতিল করা তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

জাল দলিল চেনার উপায়

জাল দলিল চেনার উপায়,জাল দলিল চেনার উপায় - জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য এই পোস্টটির মাধ্যমে আমরা সে সম্পর্কে আলোচনা করব। তো চলুন বন্ধুরা জাল দলিল চেনার উপায় সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ পদ্ধতি

  • দলিল জাল কিনা এটি চেনার জন্য বা যাচাইয়ের জন্য প্রথমে আপনাকে দলিলের উপরের দিকে একটু ভালো করে খেয়াল করতে হবে। দলিলের বাম দিকে একটি নাম্বার এবং ডানদিকে একটি নাম বললে লেখা থাকে বাম দিকের নাম্বারটিকে দলিলে সিরিয়াল নাম্বার বলা হয় আর ডান দিকে নাম্বারটিকে বলা হয় দলিল নাম্বার। দলিলের বাম দিকে সিরিয়াল নম্বরটি সর্বক্ষেত্রে দলিল নাম্বার থেকে বড় হয়ে থাকে। তাই কোনো দলিলে সিরিয়াল নাম্বার দলিলের নাম্বার থেকে যদি ছোট হয় কিংবা অন্যরকম দেখায় তাহলে বুঝবেন এটা জাল দলিল।
  • সাধারণত সাব রেজিস্ট্রি অফিসে একটি দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী চারটি ভলিউম বা রেজিস্টার লেখা হয়। তাই কোন দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসের সংরক্ষণ করার দলিলের সাল, দাতা, গ্রহীতার নাম দিয়ে অনুসন্ধান করতে পারেন ।এজন্য নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করে আপনি দেখতেও পারেন।
  • দলিল যদি জাল মনে হয় তাহলে খেয়াল করুন যে অনেক আগে দলিলে আগের চিহ্ন কিছু সাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।আগের দলিলের সাল যদি নতুন হয় তাহলে ধরে নিতে হবে দলিলটি জাল।
  • দলিলের নাম জারি কেস উল্লেখ থাকলে সহকারী কমিশনার ভূমি অফিস হতে নামজারি সংক্ষেপে খোঁজ নিতে হবে। এবং নামচারীদের ধারাবাহিকতা ঠিকমত বজায় আছে কিনা তাও যাচাই করে নিতে হবে।
  • দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ যদি সরকারি বন্ধের দিনে হয়ে থাকে। তাহলে সে দলিলটি জাল হওয়ার সম্ভাবনা হয়ে থাকে অনেক বেশি ।তাই দলিলের রেজিস্ট্রি তারিখ অবশ্যই যাচাই করে নিবেন।
  • অর্পিত সম্পদের গেজেট প্রকাশের পর অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করা সম্পত্তির ক্রয় বিক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই কোন দলিলের সম্পত্তি যদি অর্পিত তালিকাভুক্ত সম্পত্তি হয়ে থাকে। তাহলে সেই দলিল জাল হওয়া সম্পন্ন রয়েছে।
  • জাল দলিল মনে হলে, যে দলিল লিখেছে সেই দলিলের লেখকের নাম , ঠিকানা জেনে তার কাছে যাচাই করলে সত্যতা মিলে যাবে।
  • জমির ক্রয় করার আগে অবশ্যই জমির দাগ নম্বর এর সাথে খতিয়ান নম্বরটি ঠিক আছে কিনা তা মিলিয়ে নেবেন ।কোন খাজনার রশিদ থাকলে সেটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস তহাসিল অফিসে যাচাই করে নিতে পারেন।

এগুলো ছাড়াও চাল দলিল চেনার জন্য বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে সেগুলো হলঃ

  • ভলিউম এর তথ্য।
  • মূল মানিক সনাক্ত
  • নাম জারি
  • স্বাক্ষর যাচাই
  • তারিখ যাচাই
  • লেখক যাচাই
  • আমমোক্তার নাম
  • মালিকানা যাচাই
  • সিল স্ট্যাম্প যাচাই

দলিল জালিয়াতির শাস্তি

জাল দলিল চেনার উপায় - জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে এখন আমরা জানব দলিল জালিয়াতের শাস্তি সম্পর্কে। মানুষের জালিয়াতি করার হাত প্রত্যেক জনের এক রকম নয়। যেমন চোর একই স্টাইলে চুরি করে না তেমনি জালিয়াতি রাও একই স্টাইলে জালিয়াতি করে না। যার ফলে জালিয়াতের শাস্তি হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন। নিম্নে আমরা জালিয়াতির শাস্তি সম্পর্কে জানব।

আরো পড়ুনঃ গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ২০২৩

  • জালিয়াতির শাস্তি হতে পারে দুই বছর পর্যন্ত। হতে পারে কারাবাস, অর্থ দ্বন্দ্ব বা উভয় দন্ড। জাল দলিল জেনেও আসল হিসেবে ব্যবহার করলে তার শাস্তি যেমন দুই বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয়দণ্ড। অর্থাৎ জালিয়াতি করলে যেমন শাস্তি জালিয়াতি না করেও জাল দলিল জেনেও সেটিকে আসল বলে চালিয়ে দিলে তারও শাস্তি একই রকমই হবে।
  • জালিয়াতি যদি হয়ে থাকে আদালতের নথিপত্র ,সরকারি রেজিস্টার প্রকৃতিতে ,সেক্ষেত্রে হতে পারে সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো বর্ণনায় কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। যেমন অনেক সময়ই দেখা যায় আদালতের সিলমোহর নকল করে জালিয়াতি করা হয়েছে।
  • আবার মূল্যবান জামানত উই ল প্রভৃতি জাল করন করা হলে ।এক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাবাজ বা ১০ বছর পর্যন্ত যে কোন বর্ণনায় কারাবাস এবং অর্থদণ্ড হতে পারে।
  • অনেক সময় প্রতারণার প্রয়োজনে জালিয়াতি করা হয়ে থাকে ।এক্ষেত্রে কোন বর্ণনায় কারাদন্ডে যার মেয়াদ ৭ বছর পর্যন্ত এবং অর্থদণ্ড হয়ে থাকে।

জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য

জাল দলিল চেনার উপায় - জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে এখন আমরা জানব জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য সম্পর্কে। চলুন নিম্নে বিস্তারিত জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ কোথায় বিনিয়োগ করবেন মিউচুয়াল ফান্ড, স্টক না গোল্ড জেনে নিন

  • জাল দলিল রেজিস্ট্রেশন করা হয়ে থাকেলে তা বাতিল করার জন্য দেওয়ানী আদালতে মামলা করা যাবে।
  • দেওয়ানী আদালতে মামলার বিধান সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এর ৩৯ ধারায় বর্ণিত রয়েছে।
  • জাল দলিল বাতিল করার জন্য ফৌজদারি মামলা করা যাবে।
  • সম্পত্তি যার স্বার্থে থাকবে তিনি দলিল বাতিলের মামলা করতে পারবেন।
  • সম্পত্তি একাধিক ব্যক্তির পক্ষে হলে সবাই মিলে মামলা করতে পারবেন।
  • জাল দলিল সম্পর্কে জানার পর তিন বছরের মধ্যে জাল দলিল বাতিল সম্পর্কে মামলা করতে পারবেন।
  • এমনকি দলিল আংশিক বাতিলের  মামলাও করা যায়।
  • যিনি কোন দলিলকে জাল বা জোরপূর্বক সম্পাদিত বলে দাবি করবেন তাকে তার দাবির সত্যতা প্রমাণ করে দিতে হবে।
  • নাবালকের সম্পত্তির জাল দলিলের মাধ্যমে নিয়ে নিলে নাবালকের অভিভাবক বা ওই নাবালক সাবালকত্ব অর্জন করার পর সে নিজেও মামলা করতে পারবেন।
  • দলিল বাতিলের মামলার সাথে অন্য প্রতিকার ,যেমন দখল পাবার প্রার্থনাও করা যাবে তবে এর জন্য অতিরিক্ত কোট ফ্রি দিতে হবে।

শেষ কথা

জাল দলিল চেনার উপায় - জাল দলিল বাতিল করার কিছু তথ্য এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আজ আমি আপনাদের জাল দলিল চেনার উপায় এবং জাল দলিল বাতিল সম্পর্কে কিছু তথ্য দিয়েছি। আশা করছি বন্ধুরা এই পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আপনাদের যদি এ বিষয়ে আরো কিছু প্রশ্ন থেকে থাকে কিংবা এ সম্পর্কে যদি আপনাদের আরো ভালো কিছু জানা থাকে। তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।-ধন্যবাদ


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url