হার্টের রোগীর খাবার তালিকা - হার্টের জন্য ক্ষতিকারক খাবার
হার্টের রোগ বা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতিতে যেন পড়তে না হয় সেজন্য খাবার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। হার্টের রোগীর খাবার কেমন হওয়া উচিত সেটা বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা রয়েছে। এবং হার্টের রোগীর খাবার তালিকা - হার্টের জন্য ক্ষতিকারক খাবার এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি হার্টের রোগীর খাবার তালিকা - হার্টের জন্য ক্ষতিকারক খাবার গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
হার্ট অ্যাটাক কেন হয়
শরীরে যখন কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যাধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। তখন হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা অধিক বেড়ে যায়। আমাদের শরীরে দুই ধরনের কোলেস্টরেল রয়েছে ।একটি হল ভালো কোলেস্টরেল আর একটি হল খারাপ কোলেস্টরেল।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস কমানোর উপায় ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন
খাদ্যা অভ্যাসের অনিয়ম বা জীবন যাত্রার অবনতির কারণে মানুষের শরীরে কোলেস্টরেল
তৈরি হতে থাকে। যেটি উচ্চ কলেজস্টরেল হিসেবে গণ্য হয়। আর এইসব কলেজস্টরেল যদি
অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে যায় ,তাহলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি
পায়।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গুলো কি কি
হার্ট অ্যাটাকের আগে কিছু লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে মানুষের শরীরে। তবে সবগুলো লক্ষণই যে একবারে দেখা দেবে এটা কিন্তু নয়।হার্টের রোগীর খাবার তালিকা - হার্টের জন্য ক্ষতিকারক খাবার এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে চলুন জানি হার্ট এটাক এর লক্ষণ গুলো কি কি সে সম্পর্কে।
- বুকে ব্যথা অনুভূত হওয়া
- মাথা ঘোরার সমস্যা হওয়া
- ক্লান্তি অনুভব করা
- শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা হওয়া
- শরীর ঘেমে যাওয়া
- গ্যাস্টিক বা অ্যাসিডিটি সমস্যা হওয়া
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
- মাথাব্যথা হওয়া
- দীর্ঘ দিনের বেশি সমস্যা থাকা
- অনিয়মিত পালস রেট থাকা
আর এই সকল লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই আপনাকে মনে করতে হবে যে ,আপনার শরীরে হার্ট
অ্যাটাকের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অতি দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সে
অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন।
হার্টের ঔষধের নাম
হার্টের জন্য কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলো সেবনের মাধ্যমে আমাদের শরীরে হার্ট
অ্যাটাকের সম্ভাবনা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। নিম্নে চলুন জেনে নেওয়া যাক হার্টের
ওষুধের নাম সম্পর্কে।
- Mibeta Sr-40 Tablet
- RTV 5 Tablet Taka =5
- Preclot Tablet Taka=12
- Vastarel MR 60mg Tablet Taka=9-10
তবে বন্ধুরা এ সকল ট্যাবলেট সেবন করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর সেবন করবেন
হার্ট অ্যাটাকে প্রাথমিক চিকিৎসা
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা - হার্টের জন্য ক্ষতিকারক খাবার এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে বন্ধুরা চলুন জানি হার্ট অ্যাটাকে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে।
কারো হার্ট অ্যাটাক দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে এবং রোগীকে বিশ্রামে
রাখতে হবে। এ সময় অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট দিতে হবে। কারণ অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট
রক্তপাতলা করে এবং হৃদপিন্ডের রক্ত সরবরাহ বাড়াতে সাহায্য করে।
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের উপায়
কিছু নিয়ম মেনে চললে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করা সহজ।হার্টের রোগীর খাবার তালিকা - হার্টের জন্য ক্ষতিকারক খাবার এ প্রশ্নের মাধ্যমে চলুন জানি হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে।
- হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
- ধূমপান ও মধ্যমানের অভ্যাস ছেড়ে দিতে হবে।
- শরীরে অতিরিক্ত ওজন ঝরাতে হবে।
- প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের কমপক্ষে সপ্তাহে আড়াই ঘন্টা কিংবা মাঝামাঝি ধরনের ব্যায়াম করতে হবে।
- চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিয়ে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।
- খাবার তালিকায় প্রতিদিন ফলমূল ও শাকসবজি রাখুন।
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা
কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন আনার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাক এর
ঝুঁকি থেকে বাঁচা সম্ভব। অর্থাৎ এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো হৃদপিন্ড ভালো
রাখতে সাহায্য করে। যেমন-
- বাদাম ও বীজ
- ফলমূল ও শাকসবজি
- সিম ও মোটর জাতীয় খাবার
- লাল চাল লাল আটার মত খাবার
- মাছ ও সামুদ্রিক খাবার
- ডিম
- অলিভ অয়েল এর মত তেল
- চামড়া ছাড়া মুরগি
- কম ফ্যাটযুক্ত মাংস
এইসব খাবারগুলোতে সোডিয়াম ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট বাড়তি চিনি কম থেকে থাকে। আর এ
সকল উপাদান যদি বেশি থাকে তাহলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার
আমাদের হাট কে সুস্থ রাখার জন্য ভালো খাদ্য অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। যেসব খাবার
খেলে হার্টের ক্ষতি হয় সেসব খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত ।তবে এমন কিছু কিছু খাবার
রয়েছে যেগুলো হার্টের জন্য ক্ষতিকারক খাবার। যেগুলো হার্টের জন্য মোটেও
স্বাস্থ্যকর নয়। আবার আপনি যদি সে সব খাওয়ার সম্পর্কে জানেন তাহলে আপনি চমকে
যাবেন। যেমন-
মার্জারিন
এই খাবারগুলো সুপার শপ এ পাওয়া যায়। এই খাওয়ার গুলোর ঠিক মাখন এর মত এবং
অনেকেরই এই খাবার খুবই প্রিয়। অনেকেই এই খাবারকে মাখনের চেয়ে ভালো মনে করেন।
কিন্তু এই খাবার হার্টের জন্য ভালো নয়। এটি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা
বাড়িয়ে দেয়। অনেক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মার্কিন তৈরিতে পামওয়েল ব্যবহার
করে থাকে। এতে করে স্যাচুরেটেড ফ্যাট যা কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
পাউরুটি
আপনারা শুনে অবাক হবেন যে পাউরুটি এবং বেকিং করা খাবার খেলে এর প্রভাব পড়ে গিয়ে
হার্টের উপর। এগুলো শরীরের সোডিয়ামের সাথে জড়িত। শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা
অত্যাধিক বাড়িয়ে দেয় অর্থাৎ লবণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে পাউরুটি এবং
বেকিং করা খাবার। তাই সোডিয়াম বেড়ে গেলে উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে হতে পারেন। যার
ফলে হূদরোগের ঝোঁকির বা স্টোকের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এছাড়াও পাউরুটিতে মিহি আটাও
আমাদের রক্তের শর্করার পরিমাণ বাড়াতে পারে।
কোমল পানীয়
কোমল পানীয় হার্টের জন্য ক্ষতিকারক। কারণ এতে যে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা হয়
তা হার্টের ক্ষতিসাধন করে। আবার তিনি যেটাই হোক না কেন তার ডাইবেটিসের ঝুঁকি
বাড়িয়ে দেয়। ফলে হার্টের উপর প্রভাব পড়ে। তাই এর বদলে আপনি খাইতে পারেন চা
,জুস ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় - রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ঔষধ
স্ক্রিম মিল্ক বা সর তোলা দুধ
দুধ এবং দুধ জাতীয় খাবার কোলেস্টেরল বাড়ায়। কারণ দুধে রয়েছে স্যাচুরেটেড
ফ্যাটি অ্যাসিড। স্ক্রিম মিল্ক থেকে যদিও শর তুলে ফেলা হয় তারপরেও এটি খাওয়া
খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ।তাই এর বিকল্প হিসেবে আপনারা খেতে পারেন বাদামের দুধ ,সয়া
দুধ অথবা ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ সবজি।
গ্রানোলা বার
এই খাবারটি বাজারে বর্তমানে পাওয়া যায় ।এটি বানানো হয় বাদাম ও শুকনো ফল দিয়ে
সঙ্গে ব্যবহার করায় চিনি এবং অনেক রকম কৃত্রিম চিনি এবং পামওয়েল। তাই এটা
হার্টের জন্য খুবই ক্ষতিকারক।
শেষ কথা
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা - হার্টের জন্য ক্ষতিকারক খাবার এই আর্টিকেলটিতে আমি আলোচনা করেছি,হার্ট অ্যাটাক কেন হয়,হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গুলো কি কি,হার্টের ঔষধের নাম,হার্ট অ্যাটাকে প্রাথমিক চিকিৎসা,হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের উপায়,হার্টের রোগীর খাবার তালিকা,হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার সম্পর্কে। তো এই আর্টিকেলটি কেমন লাগলো বন্ধুরা, অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url