১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত


প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম, আপনাদের জন্য আজ আমি নিয়ে এসেছি ,১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত। আমাদের প্রতিটি মুসলমানদেরই ১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানা দরকার। আবার১২ রবিউল আউয়াল কেন এত গুরুত্ব এবং কেন এত ফজিলতপূর্ণ সে সম্পর্কে বিস্তারিত আমাদের জানতে হবে।

তো যারা ১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান। তারা ১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারণ এই পোস্টটিতে আমি ১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তো চলুন বন্ধুরা আর দেরি না করে জেনে নেই ,১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে।

১২ই রবিউল আউয়াল ২০২৩ কবে

১২ই রবিউল আউয়াল বা ঈদে মিলাদুন্নবী প্রতিবছর মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা খুব আনন্দের সাথে পালন করে থাকে। এই দিনটিতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আমাদের দেশের অর্থাৎ বাংলাদেশের অনেকেই ঈদে মিলাদুন বা ১২ই রবিউল আউয়াল কবে সে সম্পর্কে হয়তো জানেন না। যারা জানেন না তারা জানুন ১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত এর মাধ্যমে জানুন ১২ই রবিউল আউয়াল ২০২৩ কবে সে সম্পর্কে ।

আরো পড়ুনঃমধু পূর্ণিমা কবে ২০২৩ - মধু পূর্ণিমা ২০২৩ কি সরকারি ছুটি

২০২৩ সালে ১২ ই রবিউল আউয়াল অনুষ্ঠিত হবে ইংরেজি মাসের ২৮ শে সেপ্টেম্বর । এবং বাংলার ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ১৩ আশ্বিন রোজ বৃহস্পতিবার।

বন্ধুরা আশা করছি আপনারা ১২ই রবিউল আউয়াল ২০২৩ কবে অনুষ্ঠিত হবে সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। নিম্নে চলুন জেনে নেই রবিউল আউয়াল মাসের আমল সম্পর্কে।

রবিউল আউয়াল মাসের আমল

ইসলাম ধর্ম অবলম্বী মানুষদের কাছে রবিউল আউয়াল মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ একটি মাস। এবং এটি প্রত্যেকটি মুসলমানদের কাছে একটি স্মরণীয় মাস হিসেবে পরিচিত। কারণ পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন ।এবং এ মাসেই তিনি মৃত্যু বরণ করেছিলেন। অর্থাৎ তারই রবিউল আউয়াল মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর জন্ম এবং মৃত্যুবার্ষিকী।

রবিউল আউয়াল মাসের জন্য নির্ধারিত কোন আমল বা এবাদত কোরআন বা হাদিসে উল্লেখ নেই। তবে অন্যান্য মাসের মত এ মাসেও কিছু আমল করা যায়। যেমন প্রতি চাঁদের ১৩, ১৪ ,১৫ তারিখে রোজা রাখা এবং প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা যাবে।

সোমবারে রোজা রাখার ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত আছে, হযরত আবু কাতাদা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, সোমবারে রোজা রাখার ব্যাপারে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন ,এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমি নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছি বা আমার উপর কোরআন নাজিল হয়েছে। (মুসলিম হাদিস ১১৬২)

একটি হাদিসে আবু হুরাইয়ারা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে জানা যায়, নবী কারীম বলেন, প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহ তাআলার দরবারে )আমল পেশ করা হয়। আর আমার আমল গুলো রোজা অবস্থায় আল্লাহর সামনে পেশ করা হোক এটাই আম পছন্দ করি। (তিরমিজি হাদিস ৭৪৭)

তাছাড়াও প্রতিটা মাসেই বা সময়ে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করা আমাদের কর্তব্য বা দায়িত্ব। এছাড়া আল্লাহ তাআলার দরবারে বেশি বেশি করে নামাজ পড়া ।বেশি বেশি করে দোয়া করা। বেশি বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত করা। বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা বেশি বেশি সালাম দেওয়া এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এর আদর্শে নিজের জীবন অতিবাহিত করা।

রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব

রবিউল আউয়াল মাস হল আরবি মাসের তৃতীয়তম মাস এ মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ এ মাসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্ম গ্রহণ করেন এবং একই ঋণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। অর্থাৎ বারই রবিউল আউয়াল মহানবী সাঃ এর জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকী। তাই এই মাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত রয়েছে।১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত এই আঁটি শিল্পীর মাধ্যমে নিম্নে আমরা রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে জানব।

আরো পড়ুনঃ ২০২৪ সালের রোজা ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ

প্রথমতঃ এ মাসে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেন। তার উম্মতের সঠিক পথ নির্দেশনার জন্য।

দ্বিতীয়তঃ এ মাসে আম্মাজান খাদিজাতুল কুবরা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহাকে বিয়ে করেন আমাদের প্রিয় নবী কারীম।

তৃতীয়তঃ এ মাসে মুসলমানদের জন্য সর্বপ্রথম মসজিদ তৈরি করা হয় কুবা নামক স্থানে ।এবং এটি ইসলামের ইতিহাসে নির্মিত প্রথম মসজিদ।

চতুর্থঃ এ মাসে আমাদের প্রিয় নবী কারীম  প্রিয় মাতৃভূমি মক্কা ছেড়ে মদীনায় হিজরত করেন। অর্থাৎ যেদিন তিনি মক্কা থেকে মদিনায় পৌঁছান সে দিনটি ছিল সোমবার ১২ই রবিউল আউয়াল।

পঞ্চমঃ এ মাসে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর আরোপিত রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে দিন ইসলাম পূর্ণতার মাধ্যমে নিজের প্রভুর আহবানে সারা দেন।

আর এজন্যই ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ১২ই রবিউল আওয়াল মাসের গুরুত্ব অনেক বেশি। এবং এই মাসে অনেক ঘটনা ও ইতিহাস রয়েছে। তো আশা করছি বন্ধুরা আপনারা অবশ্যই ১২ই রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত

১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত সেই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জানব রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত সম্পর্কে। রবিউল আউয়াল মাসের ফজিলত এর কথা বলে শেষ করা যাবেনা। কারণ ১২ই রবিউল আউয়াল মাসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ মাস। আর এই মাসটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম এবং মৃত্যু বার্ষিকীর মাস।

তাছাড়া এই দিনেই নবী কারীম জন্ম লাভ করেছিলেন এবং এই দিনেই তিনি নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমি নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছি বা আমার উপর কোরআন নাজিল হয়েছে। (মুসলিম হাদিস ১১৬২)। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসা এবং তার প্রদর্শিত পথ অনুযায়ী জীবন যাপন করা আমাদের উচিত এবং এটা ঈমানের অঙ্গ। এ প্রসঙ্গে ইমাম বুখারী (রা)তার কিতাবের স্বতন্ত্র একটি শিরোনাম এনেছেন ,যার অর্থ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ।

বিশিষ্ট সাহাবী আনসার (রা )ও আবু হুরাইয়া (রা )থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেন, ওই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ। তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবেনা ,যতক্ষণ আমি তার নিকট নিজ পিতা-মাতা সন্তান সন্তুষ্টি ও সকল মানুষ হতে প্রিয় না হবো। (বুখারী শরীফ হাদিস ১৫, মুসলিম শরীফ হাদিস ৪৫ ,মুসনাদে আহমদ ১২ ৪৩)

এছাড়াও এই মাসের খাদিজাতুল কুবরা (রা)এর সঙ্গে রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিবাহ হয়েছিল ১০ রবিউল আউয়াল। নবীজি হিজরতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন এক রবিউল আউয়াল। এবং তিনি মদিনায় পৌঁছেছিলেন ১২ই রবিউল আওয়াল। ১৬ই রবিউল আউয়াল প্রিয় নবী মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে কুবা নির্মাণ করেন।

আরো পড়ুনঃ ফজরের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানুন

আর এই কারণেই আমাদের নবী কারীমের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের অনুসরণ করা অত্যা আবশ্যক। আর তাই এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমাদের মধ্য থেকে যারা পরকালে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের আশা রাখে ও আল্লাহকে অধিক স্বরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মাঝে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ। (আল-আহযাব আয়াত ২১)

শেষ কথা

বন্ধুরা আপনাদের কাছে ১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত কেমন লেগেছে। আশা করছি ১২ই রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আপনারা খুশি হয়েছেন। আর এটা থেকে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এতক্ষণ ধরে আমাদের পোস্টে পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url