টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত - টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে


টাইফয়েড জ্বর মূলত সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়ে থাকে । টাইফয়েড মূলত বর্ষাকালে বেশি হওয়ার প্রবণতা থাকে এবং এটি দূষিত খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের ফলে হয়ে থাকে। টাইফয়েড জ্বর দেখা দেওয়ার প্রধান লক্ষণ হল মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা, সর্দি কাশি হওয়া, ডায়রিয়া, তাপমাত্রা শরীরের অধিক বৃদ্ধি পাওয়া, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি।

তাছাড়াও টাইফয়েড হলে শরীরের রক্তস্বল্পতা হতে পারে। টাইফয়েড এ সময় প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। তাছাড়া তরল খাবার ,ডিম সিদ্ধ ,ফল জাতীয় খাবার ইত্যাদি খেতে হবে। তো চলুন আজকে আর্টিকেলটিতে আমরা জেনে নেই টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত সেই সাথে আরও জেনে নেই টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে সে সম্পর্কে।

টাইফয়েড কি

টাইফয়েড মূলত সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়ে থাকে। টাইফয়েড জ্বর এ লক্ষণ মূলত মৃদু থেকে তীব্রতর হতে পারে। টাইফয়েড জ্বরের জীবাণু প্রবেশের ৬ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে লক্ষণ গুলি প্রকাশ পেয়ে যায়। এবং কয়েক দিনের মধ্যেই জ্বরের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

টাইফয়েড যেভাবে ছড়ায়

টাইফয়েড মূলত আক্রান্ত রোগীর মলের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। আবার টাইফয়েডের জীবাণু দ্বারা দূষিত খাবার ও পানি কোন সুস্থ মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে সেও এ রোগে আক্রান্ত হন।

টাইফয়েড জ্বর হওয়ার কারণ

টাইফয়েড মূলত মারাত্মক একটি পানি বাহিত রোগ। এই রোগটি দুটি জীবানুর সংক্রমনে হয়ে থাকে একটি হল সালমোনেলা টিইফি অন্যটি হলো সালমোনেলা প্যারাটাইফি ।সালমোনেলা টাইফি সংক্রমণ হলে টাইফয়েড জ্বর বা এন্টারিক ফিভার আর সালমোনেলা প্যারাটাইফির সংক্রমণ হলে প্যারা টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত

টাইফয়েড জ্বর হলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, প্রোটিন ও পর্যাপ্ত পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট খাবার খাওয়া উচিত। এই সময় জলীয় খাবারের পরিমাণ বেশি খাওয়া উচিত কারণ এটা শরীরের জন্য ভালো। চলুন নিম্নে টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত জেনে নেই।

কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার

টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীদের প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার দিতে হবে। কারণ টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীরা যদি রেগুলার কার্বোহাইড এর জাতীয় খাবার খায় ।তাহলে সেগুলো হজম করতে কোন সমস্যা হয় না, আর এর ফলে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি বৃদ্ধি পায়। কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারগুলো হলঃ

  • মাছ 
  • আলু সিদ্ধ 
  • চিকেন 
  • সবজি 
  • ভাত 
  • ডিম 
  • পাকা কলা 
  • ডালের খিচুড়ি ইত্যাদি।

তরল খাবার

টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীদের প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার দিতে হবে। কারণ এ সময় টাইফয়েড রোগীদের শরীরে পানির অভাব দেখা দেয়। টাইফয়েড জ্বর হলে অনেক সময় রোগীদের ডায়রিয়া হতে পারে যার ফলে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় অনেক পানি। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকেরা রোগীদের প্রচুর পানি বা তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে বলেন।

যেমন-টাটকা ফলের রস, ডাবের পানি, পাতি লেবু, পুদিনা পাতার শরবত ,দইয়ের ঘোল বা বাটার মিল্ক, শসা ,বাতাবি লেবু ,তরমুজ ,জামরুল, পানিফল ইত্যাদি। এগুলো ছাড়াও মুগডালের স্যুপ, গাজরের স্যুপ ,মাশরুম স্যুপ , চিকেন ক্লিয়ার স্যুপ , বিন্সস্যুপ ইত্যাদি খাবার পানির বিকল্প হিসেবেও দেওয়া যেতে পারে।

ফল জাতীয় খাবার

টাইফয়েড আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ ও ভালো রাখতে ফল জাতীয় খাবার খেতে দিন। তা ছাড়াও খেতে দিতে পারেন শুকনো আঙ্গুর । কারণ আঙ্গুর ইউনানী ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এগুলো ছাড়াও খেতে পারেন কমলা, মালটা, বেদানা, লেবু ,আনারস ইত্যাদি। কারণ এগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি।

ক্যালরিযুক্ত খাবার

টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া খুবই জরুরী। যেমন-খেজুর, মাখন, কলা, ঘি ,মিষ্টি আলু ,পিনাট বাটার ইত্যাদি

দুগ্ধ জাতীয় খাবার

দুদ্ধ জাতীয় খাবার টাইফয়েড রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এগুলো রোগীদের শরীরে দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে থাকে। যেমন-টক দই , ছানার মত দুদ্ধ জাতীয় খাবার ইত্যাদি।

শুকনো আঙ্গুর

শুকনো আঙ্গুর টাইফয়েড আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্বাস্থ্য পুনরাবধান করতে সাহায্য করে থাকে। তা ছাড়াও শুকনো আঙ্গুর ইউনানী ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। রোগীর যখন প্রচন্ড জ্বর আসে তখন শুকনো আঙ্গুর চারপাশে পানিতে ভিজিয়ে খেতে দিতে পারেন। এতে রোগীর খুব উপকার হবে।

টাইফয়েড জ্বর কিছু ছোঁয়াচে

টাইফয়েড রোগটি অবশ্যই একটি ছোঁয়াচে রোগ। এই রোগটি মূলত টাইফয়েড আক্রান্ত ব্যক্তির দ্বারা সংক্রমিত হয়ে থাকে। তাছাড়াও টাইপ হার্ট একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এ হয়ে থাকে। 

কোন ব্যক্তি যদি টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং সেই আক্রান্ত ব্যক্তির সংক্রমণ তার ব্যবহারিত জিনিস পত্রের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাই আমাদের যতদূর সম্ভব টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীদের সাথে দূরত্ব বজায় রেখে মেলামেশা করতে হবে। এবং তার ব্যবহারিত জিনিসপত্র জীবাণু নাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

শেষ কথা

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। আশা করছি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা টাইফয়েড সম্পর্কে কিছু তথ্য পেয়ে থাকবেন। তো আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং এই আর্টিকেল বিষয়ে আপনাদের যদি কোন মতামত থেকে থাকে তাও কমেন্ট করে জানাবেন।-ধন্যবাদ


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url