বসন্ত রোগের ঔষধের নাম - চিকেন পক্স হলে কি গোসল করা যাবে


বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা আলোচনা করব ,বসন্ত রোগের ঔষধের নাম - চিকেন পক্স হলে কি গোসল করা যাবে তা নিয়ে। বসন্ত ভাইরাস সংক্রমণে হয়ে থাকে। এটি দেখা দিলে সারা গায়ে চুলকানি ও র্যাসের মত সৃষ্টি হয়। এই রোগের সংক্রমণ যদি শরীরে প্রবেশ করে থাকে তাহলে ১০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে তা প্রকাশ পায়।

বসন্তের আরেকটি রোগ হচ্ছে সেটি চিকেন পক্স। এই রোগটি সংক্রমণ দ্বারা হয়ে থাকে। এই রোগটি খুবই সংক্রমণ দ্বারা হয়ে থাকে এর কারণে এই রোগ একজন থেকে আরেকজনের চড়িয়ে যেতে পারে। তবে এই রোগটি যদি কখনও একজন মানুষের শরীরে হয়ে থাকে তাহলে পরবর্তীতে আর দেখা দেয় না। চলুন নিম্নে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

বসন্ত রোগ কি কারনে হয়ে থাকে

বসন্ত বা চিকেন পক্স সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণে হয়ে থাকে। ভেরিসেলা জোসটার নামক একটি ভাইরাসের কারণে বা সংক্রমণে এই রোগটি দেখা দেয়।

বসন্ত রোগটি কিভাবে ছড়ায়

বসন্ত রোগটি সাধারণত ত্বকের সংস্পর্শ, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশি , ব্যবহৃত পোশাকের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। এই রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসকুড়ি দেখা দেওয়ার দুদিন আগে থেকে শুকিয়ে যাওয়া খোসা থেকেও অন্যরা সংক্রমিত হতে পারে। ফুসকুড়ি শুকিয়ে যাওয়া খোসা বাতাসে উড়ে গিয়েও এই রোগ ছড়িয়ে থাকে। অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগ থেকে এই রোগ ছড়াতে শুরু করে।

লক্ষণ

এতক্ষণ আমরা জানলাম বসন্ত রোগটি কিভাবে ছড়ায় সে সম্পর্কে এখন আমরা জানবো বসন্ত রোগের লক্ষণ সম্পর্কে। চলুন নিম্নে সে সম্পর্কে জেনে নেই।

  • বসন্ত রোগটির ভাইরাস শরীরে প্রবেশের ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যেই লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে।
  • শরীরের ত্বকে ঘামাচির মত বা ফুসকুড়ি উঠতে শুরু করে।
  • শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া দু থেকে তিন দিন আগেই শরীরে ব্যথা অনুভূত হয় ,জ্বর দেখা দেয়, পেট ব্যথা হতে পারে।
  • লালচে ফুসকুড়িতে অনেক সময় চুলকুনি ও জ্বালা পোড়া হয়ে থাকে।
  • ফুসকুড়িতে পানি জমে যা পরবর্তীতে শুকিয়ে কালো বনের খোসায় পরিণত হয়।
  • বসন্ত রোগটি দেখা দিলে পাতলা পায়খানা কিংবা কাঁশি হতে পারে।
  • অনেক সময় এই রোগটি দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

বসন্ত রোগের জটিলতা

বসন্ত রোগের জটিলতা অনেক সময় ভয়াবহ হয়ে থাকে। বাচ্চাদের বা শিশুদের যদি এই রোগ হয়ে থাকে অনেক সময় শ্বাসনালী, পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমনে প্রাণহানির কারণ হতে পারে। আবার এই রোগ আক্রান্তের ফলে ত্বকের জীবাণু সংক্রামিত হয়ে ত্বকের গর্তের সৃষ্টি করে থাকে।

বসন্ত রোগ প্রতিরোধ

বন্ধুরা চলুন জেনে নেই বসন্ত রোগ প্রতিরোধ এর উপায় সম্পর্কে।

  • বসন্ত রোগটি হাঁচি কাঁশির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই প্রয়োজনে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাঁশি থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • বসন্ত রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা রাখতে হবে।
  • বসন্ত রোগ প্রতিরোধে নিয়ম অনুযায়ী টিকা নিতে হবে।এই রোগের টিকা যেকোনো বয়সের মানুষেরাই নিতে পারবে।
  • তবে এই রোগ একবার দেখা দিলে পুনরায় আর দেখা দেয় না।

বসন্ত রোগের ঔষধের নাম

বসন্ত বা চিকেন পক্স রোগের নির্দিষ্ট কোন ঔষধ নেই। তবে চিকিৎসকেরা কিছু ঔষধ রোগীদের দিয়ে থাকে। যাতে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া কমে থাকে ।নিম্নে সে সকল ঔষধের নাম দেওয়া হলঃ

  • Napa Tablet
  • Histacetamol Tablet
  • Moxacil Tablet
  • Paracetamol Tablet
  • Virux Tablet

মূলত এই ঔষধ গুলো বসন্ত রোগের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে এগুলো ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।

বসন্ত বা চিকেন পক্স রোগের দাগ দূর করার ক্রিম

বসন্ত বা চিকেন পক্স যদি শরীরে হয়ে থাকে। তাহলে তার ফুসকুড়ি থেকে শরীরে বিভিন্ন দাগ তৈরি হয়। আর সে সকল দাগ দূর করার জন্য চিকিৎসকেরা কিছু ক্রিম সাজেস্ট করে রাখেন। আসুন নিম্নে সেই ক্রিমগুলোর নাম জেনে নেই।

  • Soneta
  • Skinova Antiseptic
  • Batamason-N
  • Berberis

এই ক্রিম গুলো সাধারণত বসন্ত বা চিকেন পক্স রোগের দাগ দূর করার ক্রিম। তবে এই ক্রিম গুলো ব্যবহারে পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

চিকেন পক্স হলে কি গোসল করা যাবে

আপনারা অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন যে চিকেন পক্স হলে কি গোসল করা যায় নাকি। তবে গ্রাম অঞ্চলে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে যে চিকেন পক্স হলে গোসল করা যায় না, মাছ মাংস খাওয়া যায় না। তবে এই ধারণাটি সম্পূর্ণই ভুল ।চিকেন পক্স হলে আপনারা স্বাভাবিক পানি দিয়েই গোসল করতে পারবেন এবং স্বাদমতো খাবারও গ্রহণ করতে পারবেন।

কিন্তু চিকেন পক্স হলে সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহারে বিরত থাকবেন। এই সময় যদি ডাবের পানি দিয়ে গোসল করেন তাহলে অনেক ভালো হয়। গোসল শেষে শরীর শক্ত কোন কাপড় দিয়ে মুছবেন না কিংবা ঘষে ঘষে শরীরের পানি মুছবেন না। এতে করে ফুসকুড়ি গলে গিয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে।

শেষ কথা

মূলত চিকেন পক্স একটি ভাইরাস জনিত সংক্রমিত রোগ। আর এই রোগটি ছড়িয়ে থাকে মানুষের হাঁচিও কাঁশি থেকে বেশি। তাই এ রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত রোগী থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। তবে এই রোগ একবার কারো শরীরে দেখা দিলে দ্বিতীয়বার আর দেখা দেয় না।

বন্ধুরা এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। আপনারা কি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে বসন্ত বা চিকেন পক্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি কিছুটা জানতে পেরে থাকেন অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের যদি এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এ ধরনের আরো অনেক পোস্ট পেতে আমাদের পেজটি ফলো রাখুন।-ধন্যবাদ


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url