মাসিকের সময় পেটে ব্যথা হলে করণীয় - পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় ঔষধের নাম
মেয়েদের মাসিকের সময় পেটে ব্যথা একটি কমন বিষয়। তবে পিরিয়ডের সময় যদি জরায়ুতে চাপ পড়ে থাকে ।তখন জরায়ুর পেশীতে সংকোচন প্রসারণের জন্য পেটে ব্যথা বা যন্ত্রণা দেখা দিয়ে থাকে। এই ব্যথা তীব্রতা ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরে ও কোমরে। এ সময় নারীদের মোট সুইং বা মেজাজ উঠানো বা অবসাদ, ক্লান্তি দেখা দেয়।
মাসিক বা পিরিয়ড কি
মাসিক বা পিরিয়ড বলতে প্রতি চন্দ্র মাস পরপর হরমোনের প্রভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের জরায়ুর চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এবং রক্ত জরায়ু নিষ্কৃত অংশ যৌনি পথে বের হয়ে আসে তাকেই মাসিক বা পিরিয়ড বলে। আর মাসিক বা পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে মেয়েদের পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা হতে পারে।
পিরিয়ডের ব্যথার কারণ
মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তবে পিরিয়ডের সময় যদি জরায়ুতে চাপ পড়ে থাকে ।তখন জরায়ুর পেশীতে সংকোচন প্রসারণের জন্য পেটে ব্যথা বা যন্ত্রণা দেখা দিয়ে থাকে। এই ব্যথা তীব্রতা ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরে ও কোমরে। এ সময় নারীদের মোট সুইং বা মেজাজ উঠানো বা অবসাদ, ক্লান্তি দেখা দেয়।
মাসিকের সময় পেটে ব্যথা হলে করণীয়
মেয়েদের প্রত্যেক মাসে ঋতুচক্রের সাথে সাথে পেটে ব্যথা বা যন্ত্রণা দেখা দিয়ে থাকে। যা তাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তবে এ থেকে রেহাই পেতে কিছু করণীয় রয়েছে। যেগুলো করলে আপনারা খুব সহজেই পেটের ব্যথা বা যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে পারেন। নিম্নে চলুন সে সম্পর্কে জেনে নিই।
আদা চা
পিরিয়ডের ব্যাথা থেকে মুক্তি দিতে পারে আদা চা। তাই পিরিয়ড চলাকালীন সময় ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে আপনারা আদা চা খেতে পারেন। তাছারাও আদা চা বমি বমি ভাব দূর করে থাকে।
হট ওয়াটার ব্যাগ
পিরিয়ডের ব্যথা থেকে রেহাই পেতে হট ওয়াটার ব্যাগ অর্থাৎ গরম পানির চেক দিতে পারেন। কারণ এই পদ্ধতিটি প্রাকৃতিক উপায়ে ব্যথা কমানোর প্রথম পর্যায়। গরম পানিতে ব্যথা কমিয়ে আরাম প্রদান করে থাকে ।
শরীরে মাসাজ করুন অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল
রূপচর্চায় শুধু অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল ব্যবহারিত হয় না। এটি পিরিয়ডের ব্যথা যন্ত্রণা কমাতেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই পিরিয়ডকালীন সময়ে ব্যথা যন্ত্রণা দেখা দিলে শরীরে মেসেজ করুন এসেনশিয়াল অয়েল।
ক্যামোমাইল টি
কেমো মাইটি পিরিয়ডের সময় বেশ উপকারী। এইটিতে রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি এবং এন্টি স্প্যাসমোডিয়্যাক বৈশিষ্ট্য যা পিরিয়ড জনিত ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে।
হালকা ব্যায়াম
পিরিয়ডের সময় এমনি নড়াচড়া করাই খুবই কষ্টকর ।সে ক্ষেত্রে হালকা ব্যায়াম আপনাদের কাছে হাস্যকর মনে হলেও শরীর সুস্থ রাখতে গেলে ব্যায়াম প্রয়োজন। কারণ এ সময় হালকা ব্যায়াম করলে ব্যথা যন্ত্রণা থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যায়।
খাবার ব্যাপারে সচেতন
ভোটের সময় আপনাকে অবশ্যই খাবার এর ব্যাপারে সচেতন হতে হবে ।এ সময় অবশ্যই জুস, চিপস, চকলেট, কেক, চানাচুর, কুড়কুড়ে, ভাজাপোড়া এইসব জিনিসগুলো এড়িয়ে চলুন।
পেঁপে
পিরিয়ডের ব্যথা যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে পেঁপে বেশ উপকারী। তাই পিরিয়ড চলাকালীন সময় পেপে খান। কারণ পেঁপে আপনার পিরিয়ডের ব্যথা কমিয়ে দেবে।
পানি ও পানি জাতীয় খাবার
পিরিয়ড চলাকালীন সময় প্রচুর পরিমাণে পানি ও পানি জাতীয় খাবার খান। কারণ অনেক সময়, এই সময়ে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিয়ে থাকে।
এলোভেরা রস
পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে এলোভেরা রস বেশ উপকারী। তাই অ্যালোভেরার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে তৈরি করে ফেলুন একটি জুস। দিনে কয়েকবার এটি পান করুন ব্যথা অনেক কমে যাবে।
পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এমন খাবার
মেয়েরা পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা বা যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে পড়ে। তবে এই সময় যদি তারা কিছু খাদ্য গ্রহণ করে তাহলে এ থেকে অনেকটা রেহাই পায়। যেমন-
- কমলা লেবু
- কলা
- ব্রকলি
- ডাক চকলেট
- সূর্যমুখীর বীজ
- আদা চা
- গ্রিন টি
- ক্যামোমাইল
- এক মুঠো বাদাম
- পালং শাক ইত্যাদি।
এগুলো খাবার পরেও যদি ব্যথা না কমে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ দিন এবং সে অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন। আশা করছি সুস্থ বোধ করবেন।
মাসিকের ঔষধের নাম
মাসিকের ঔষধ হিসেবে আমি ভালো কিছু কোম্পানির ঔষধ নিম্নে আলোচনা করছিঃ
- একমি আয়ুর্বেদিক
- স্কয়ার
- ইবনে সিনা ইউনানী
- হামদাদ
তবে বন্ধুরা এ সকল ঔষধ আপনারা সেবনের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করায় ভালো।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় ঔষধের নাম
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় ঔষধের নাম সম্পর্কে যে সকল বন্ধুরা জানতে চেয়েছেন। আজ আমি তাদেরকে নিম্নে সে সকল ওষুধের নাম সম্পর্কে অবগত করলাম। যেমন-
- Aspirin
- Ibuprofen
- প্যারাসিটামল
Ibuprofen এই ওষুধটি পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর কেমিক্যাল কে থামিয়ে দেয়। ফলে পিরিয়ডের ব্যথা কমে যায়। এই ওষুধটি সেবনের ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই সাধারণত ব্যথা কমে যায়
Ibuprofen এই ঔষধটি প্যারাসিটামল ঔষধের চেয়েও বেশ কার্যকর। কিন্তু কোন কোন সময় কিছু ক্ষেত্রে এইসব ঔষধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। তাই অবশ্যই পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঔষধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নেবেন। এবং তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তা সেবন করবেন।
আবার ,যে সকল মহিলাদের এজমা বা হাঁপানি রোগ রয়েছে তারা পিরিয়ডের ব্যথা নাশক ঔষধ Ibuprofen থেকে বিরত থাকবেন।
যাদের পেটে লিভার ,,আলসার কিডনি, পাকস্থলী, হার্টের সমস্যা রয়েছে বা গ্যাস্টিকের সমস্যা রয়েছে তারাও Ibuprofen এই ঔষধটি সেবন থেকে বিরত থাকবেন।
ডাক্তারের কাছে যখন যেতে হবে
পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে যদি ব্যথা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায় এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়, মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত হয় ।তাহলে অবশ্যই আপনাকে একজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে। এবং তারা যে পরামর্শ দেবে সে অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে।
শেষ কথা
মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তবে পিরিয়ডের সময় যদি জরায়ুতে চাপ পড়ে থাকে ।তখন জরায়ুর পেশীতে সংকোচন প্রসারণের জন্য পেটে ব্যথা বা যন্ত্রণা দেখা দিয়ে থাকে। এই ব্যথা তীব্রতা ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরে ও কোমরে। এ সময় নারীদের মোট সুইং বা মেজাজ উঠানো বা অবসাদ, ক্লান্তি দেখা দেয়।
বন্ধুরা এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এ ধরনের আরো অনেক পোস্ট পেতে আমাদের পেজটি ফলো রাখুন। আবার এ বিষয়ে যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এর মাধ্যমে তা জানিয়ে দেবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url