জরায়ু ইনফেকশন কি - জরায়ু ব্যাথার কারণ, লক্ষণ ,করণীয় ও ঔষধ
Dinalaila 2023322
26 Dec, 2023
নারীদের জরায়ু বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমিত হয়ে থাকে অনেক সময়। আর সংক্রমণটি মূলত হয়ে থাকে ভেজা ও সিন্থেটিক কাপড় অনেকক্ষণ পড়ে থাকার কারণে শরীরে বিভিন্ন ভাঁজেভাঁজে। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যৌনাঙ্গ সঠিক পরিচর্যা না করলে প্রদাহ জনিত ব্যথা, যোনি থেকে রক্তপাত ইত্যাদি ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ সকল ভাইরাস জরায়ুতে দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী হলে সংক্রামিত কোষগুলো অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পায় এবং ধীরে ধীরে তা ক্যান্সারের রূপান্তরিত হয়। আর এ কারণেই মহিলাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। তো চলুন নিম্নে আজ জেনে নেই জরায়ু ইনফেকশন কি - জরায়ুর ব্যাথার কারণ, লক্ষণ ,করণীয় ও ঔষধ সম্পর্কে।
জরায়ু ইনফেকশন কি
জরায়ু ইনফেকশন বলতে ডিম্বোনালিতে জীবাণু সংক্রমণকে বুঝিয়ে থাকে। আর এটি ডিম্বাশয় কেউ আক্রান্ত করতে পারে। যৌনবাহিত রোগের কারণেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ সকল সংক্রমণ হয়ে থাকে। আবার ডি এন্ড সি কপাটি, ইসটা রোসাল, ফিঙ্গোগ্রাফি, অ্যান্ড্রমেট্রিয়াল বায়োসি ইত্যাদি পরীক্ষার কারণে জীবাণু সংক্রামিত হতে পারে। এর ফলে প্রজনন অঙ্গের জটিলতা ও গর্ভধারণ সমস্যা সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা্রো সৃষ্টি হয়ে থাকে।
জরায়ু ব্যাথার কারণ
অনেক মহিলারাই আছেন যারা তলপেটের ব্যথা ও নিতম্বের ব্যথায় ভোগেন। অনেক সময় মাসিক হওয়ার আগে তল পেটে প্রচন্ড ব্যথা দেয় দেখা দেয়। এবং তা মাসিক হওয়ার পর আরো বেশি বেড়ে যায়। আর পিরিয়ড জনিত এই ব্যথা জরায়ু প্রাচীরের চারিদিকে প্রদাহের কারণ হতে পারে। তো চলুন জানি জরায়ু ব্যাথার কারণ গুলো সম্পর্কে।
সংক্রমণ
অনেক সময় সংক্রমণ কারণে যৌনাঙ্গে এবং যৌনিতে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। আর এসব লক্ষণ যদি প্রকাশ পেয়ে থাকে তাহলে আর দেরি না করে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। কারণ গর্ভধারণকালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ।যার ফলে এরকম মারাত্মক রোগের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
হরমোনের পরিবর্তন
হরমোনের পরিবর্তনের কারণে যৌনাঙ্গ শুষ্ক হয়ে যায়। এর ফলে যৌনিতে ব্যথা সৃষ্টি হয় এবং বিশেষত যৌন মিলনের সময়।
জরায়ু বৃদ্ধি
গর্ভাবস্থায় যোনিতে ব্যথা ,এটি একটি সাধারন সমস্যা । জরায়ুর সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করতে গিয়ে আকার বেড়ে যায় ।যার ফলে বেশি জরায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি হয় ।আর যার ফলে দেখা দেয় যোনিতে ব্যথা ।
জরায়ু বিভাজন
জরায়ু প্রসারণের ফলে যৌনিতে তীক্ষ্ণ এবং অসহ্য ব্যথা হতে পারে ।তবে এটি যদি তলপেটে হয় এবং ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে তবে আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
ভ্রুণের বৃদ্ধি
জরায়ুতে ভ্রুণের আকার বাড়ার সাথে সাথে নিস্তম্বে লিগামেন্ট গুলিও প্রসারিত হয়ে থাকে ।যার ফলে পেশির অধিক প্রসারণ এর ফলে তীক্ষ্ণ যন্ত্রণা দেখা দেয়। শিশুর ওজন পেলভিক মেঝেতে চাপ সৃষ্টি করার ফলে যৌনিতে ব্যথা সৃষ্টি হয়।
পেলভিক অরর্গান প্রোল্যাপস
পিওপি হলো গর্ভধারণকালিন এমন একটি অবস্থা যেখানে শ্রোণী বা তার আশেপাশের অঙ্গ-গুনি কখনো কখনো যৌন বা মলদ্বারে প্রবেশ করে।যার ফলে তীব্র ব্যথা বা অন্ত নিয়ন্ত্রণ করতে অসুবিধা হয় ।তবে অবিলম্বে আপনারা ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিয়ে।
জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ
জরায় ইনফেকশন মূলত জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবনের কারণে হতে পারে। এর ফলে তলপেটে এবং কোমরে অসহ্য ব্যথা হতে পারে ।এ রোগের কিছু পরিলক্ষিত লক্ষণ রয়েছে যেগুলো হল নরমাল স্রাব, জ্বর ,রক্তক্ষরণ ইত্যাদি। চলুন আরো কিছু লক্ষণ নিম্নে জেনে নেই।
মাসিকের সময় তীব্র যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা।
হাত-পা শরীর আগুনে পোড়ার মতো জ্বালাপোড়া করে।
সহবাসে ব্যথা অনুভূত হয়।
অনিয়মিত মাসিক এবং জ্বর জ্বর লাগা।
জরায়ুর গ্রীক ফোলা ও শক্ত থাকা।
মলমূত্র ত্যাগ করলে যৌনাঙ্গ দিয়ে রক্ত বের হয় ও ব্যথা অনুভূত হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি হয়।
অত্যন্ত ক্লান্তিকর অনুভূতি।
প্রসাব এর সময় ওপরে তীব্র যন্ত্রণাদায়ক বেদনা।
উল্লেখিত এই লক্ষণগুলোর মূলত জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ। এই লক্ষণ গুলি কম বা বেশি হতে পারে তবে। এই লক্ষণ গুলি যদি দেখা দেয় তাহলে আর দেরি না করে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।
জরায়ু ইনফেকশনের ঔষধ
আপনার যদি জরায়ু ইনফেকশন হয়ে থাকে তাহলে নিম্নলিখিত ঔষধ গুলো সেবন করতে পারেন। যেগুলো আপনাদের ও জরায়ু ইনফেকশনের কারণে ব্যথা ও প্রদাহ কমিয়ে থাকবে। ঔষধগুলো হলোঃ
Zycin 250 mg
Cefadur CA 250 mg
Zybact 250mg
Cef 250
Altaxime 500 mg
Pulmocef 1500mg
Zomycin 250
এইসব এন্টিবায়োটিক গুলো মূলত জরায়ু ইনফেকশন বা সংক্রমণ রোধে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।তবে এগুলো সেবনের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গ্রহণ করবেন।
জরায়ু ইনফেকশনে করণীয়
জরায়ু ইনফেকশন রোদে আপনারা কিছু ঘরোয়া অবলম্বন অনুসরণ করতে পারেন। যেগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে আপনাদের ভাইরাস সংক্রমণের সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।
যেমনঃ
ব্যবহার করতে পারেন দই
আপেল সিডার ভিনেগার
নারকেল তেল
রসুন ইত্যাদি
এই উপাদান গুলি মূলত জরায়ু সংক্রমণ বা ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে থাকে। তাই জরায় সম্ভাবন বা ইনফেকশন রোদে এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
এগুলো ছাড়াও কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি। যেমনঃ
ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে।
নিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক এবং কনডম ব্যবহার জীবাণু সংগ্রহমন থেকে জরায়ুতে রক্ষা করতে হবে।
যেখানেই গোসল করুন না কেন তা শাওয়ার নেওয়ার চেষ্টা করুন।
গোসলের পর যৌনাঙ্গ ভালোভাবে পরিষ্কার এবং শুষ্ক রাখতে হবে।
সুগন্ধি ও রুক্ষ সাবান যথাযথ পরিহার করুন।
যেকোনো ধরনের সংক্রমণ দেখা দিলে তা ও অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা জরুরী । এর পাশাপাশি আপনাকে মনে রাখতে হবে যৌন স্বাস্থ্য ভালো থাকা মানে শরীর ভালো থাকা।
শেষ কথা
বন্ধুরা আজকের আমি আলোচনা করেছি ,জরায়ু ইনফেকশন কি - জরায়ু ব্যাথার কারণ, লক্ষণ ,করণীয় ও ঔষধ সম্পর্কে ,ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এবং এই আর্টিকেলটি ব্যাপারে আপনাদের যদি কোন মতামত থেকে থাকে তাও কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করছি এইআর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হবেন। তো আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন থাকবেন। এ ধরনের আরো অনেক পোস্ট পেতে আমাদের পেজটি ফলো রাখবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url