লিভারে হজম শক্তি কমে গেলে কি হবে - হজম শক্তি বৃদ্ধির সিরাপ
হজমশক্তি কমে যাওয়ার পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ থাকে। তাই আমাদের সর্ব প্রথমে সেই কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে । কারণগুলো খুঁজে বের করার পর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমাদের সুবিধা হবে, লিভারের হজম শক্তি কমে যাওয়ার উপসর্গ ও লক্ষণগুলো সম্পর্কে বোঝার। লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে রক্তে গ্লুকোজের সমস্যা এবং স্থূলতার মতো নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।
লিভারের হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণ
লিভারের হজম শক্তি যদি কমে যায়। তাহলে এমন কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন যে ,আপনার লিভারের হজম শক্তি কমে গিয়েছে। চলুন নিম্ন জেনে নেই লিভারের হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কে।
- খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া
- খাওয়াতেই পেট ভরে যাওয়া
- খাওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ ধরে পেট ভারী ভারী ভাব
- অনেক আগে খাবার পরেও আপনার মনে হবে সেই খাবার পেটে রয়ে গেছে।
- গ্যাস্টিকের সমস্যা হতে পারে
- শারীরিক দুর্বলতা
- শরীরের ওজন কমে যাওয়া
- পেটে জ্বালাপোড়া
- বদহজম ইত্যাদি
আর এইসব লক্ষণগুলি যদি আপনার শরীরে দেখা দিয়ে থাকে ।তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার হজম শক্তি কমে গেছে। বন্ধুরা আশা করছি লিভারের হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণ গুলি ব্যাপারে আপনারা জানতে পেরেছেন।
লিভারের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ
আমরা প্রতিদিন যে সকল খাবার গ্রহণ করি সে সকল খাবারের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে টক্সিক পদার্থ। লিভার থেকে নিষ্কৃত পিত্তরস এই সকল ট্যাক্সি পদার্থ গুলো নিঃশেষ করে থাকে। কিন্তু যখন লিভারের সমস্যা দেখা দেয় তখন এই টক্সিক পদার্থ আমাদের শরীরে বেড়ে যায়। আসুন জেনে নেই টক্সিক পদার্থ বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ অথবা লিভারের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে।
- হজমের সমস্যা
- ত্বকে চুলকানি
- দেহে টক্সিকের মাত্রা বেড়ে যাওয়া
- টেস্টস্টেরন হরমোন কমে যাওয়া
- হর মনে পরিবর্তে করটিসল বৃদ্ধি পাওয়া
- পেটে ব্যথা হওয়া
- জন্ডিস
- ইস্টোজেন হরমোনের লেভেল বৃদ্ধি
লিভারের হজম শক্তি দূর করার উপায়
যারা লিভারের হজম শক্তি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান ।তারা জেনে নিন যে কিভাবে লিভারের হজম শক্তি দূর করা যায়। যেমন-
- শারীরিক পরিশ্রম লিভারে হজম শক্তির ব্যাপারে বিশেষভাবে কাজ করে থাকে।
- খাবার ব্যাপারে সচেতন। আমাদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে যে কোন খাবার আমাদের সহজে হজম হচ্ছে না। যে খাবারে আমাদের সমস্যা রয়েছে বা হজমে সমস্যা দেখা দেয় সেই খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো ঘুম। যে বয়সেরই মানুষ হোক না কেন তার যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হয় তাহলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। তাই আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে সঠিক রাখতে ঘুম অপরিহার্য।
লিভারে হজম শক্তি কমে গেলে কি হবে
লিভারে হজম শক্তি কমে গেলে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে নিম্নে সে সকল সমস্যা গুলো আলোচনা করা হলোঃ
পেটব্যথা
লিভারে হজম শক্তি কমে গেলে খাদ্য হজমে বিঘ্ন ঘটে। যার ফলে দেহে খাদ্য শোষিত হয় না। ফলে পেটে দেখা দেয় ব্যথা।
কোষ্ঠকাঠিন্য
খাদ্য গ্রহণ করার পরে পরিপাকতন্ত্র খাদ্যকে সম্পূর্ণরূপে দেহের গ্রহণ উপযোগী করে তুলে। কিন্তু লিভারের হজম শক্তি যদি কমে যায় ,তখন লিভার পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতা কমিয়ে ফেলে। যার ফলে দেখা দেয় কোষ্ঠকাঠিন্যের মত ভয়ংকর সমস্যা।
পুষ্টিহীনতা
আমরা যে সকল খাবার খেয়ে থাকি সে খাবার থেকে পুষ্টিকর উপাদান গুলো আমাদের শরীর গ্রহণ করে এবং বাকি অংশ বোজ্য পদার্থ হিসেবে বের করে দেয়। কিন্তু যখন হজম শক্তি কমে যায় তখন খাবারের এসব পুষ্টি উপাদান গুলো শরীর গ্রহণ করতে পারেনা ।যার ফলে দেখা দেয় পুষ্টিহীনতা।
ডায়রিয়া
হজম শক্তি কমে গেলে তা পরিপাকতন্ত্রের উপর বিরাট প্রভাব ফেলে। যার ফলে খাদ্য পুরোপুরি ভাবে হজম হয় না। খাদ্য পুরোপুরি হজম না হওয়ায় ,তা অন্তে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ।যার ফলে সৃষ্টি হয় ডায়রিয়া।
স্থুলতা
লিভারের হজম শক্তি যখন কমে যায় তখন পরিপাকতন্ত্রের উপর বিরাট প্রভাব ফেলে ।যার ফলে খাদ্য সঠিকভাবে হজম হয় না। আর এই অবস্থা বিদ্যমান থাকা কালিন আমরা যদি খাবার খেয়ে থাকি তা সম্পূর্ণরূপে হজম হয় না। আর এই অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের ফলে আমাদের শরীরে ক্যালরি বা চর্বি হিসেবে অবস্থান করে। যার ফলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ওজন বৃদ্ধি পায়।
পিত্তথলিতে পাথর
যখন লিভারের হজম প্রক্রিয়া কমে যায়, তখন এটি পর্যাপ্ত পরিমাণে পিত্তরস উৎপাদন করতে পারে না। অর্থাৎ পরিমাণ মতো পিত্তরস উৎপাদন না করাই বর্ধিত অংশটুকু পাথর গঠনের দিকে ধাবিত হয়। আর এর ফলশ্রুতিতে ধীরে ধীরে পিত্তথলিতে পাথরে পরিণত হয়।
লিভারে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি
লিভারের হজম প্রক্রিয়া যখন কমে যায়। তখন লিভার সঠিকভাবে কাজ করে না। ফলশ্রুতিতে লিভারে বিভিন্ন মারাত্মক রোগ দেখা দেয়। যেমন- লিভার ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস এর মত মরণব্যাধি হতে পারে।
হজম শক্তি বৃদ্ধির সিরাপ
অজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য ডাক্তাররা বিভিন্ন ধরনের এসি রাফ দিয়ে থাকেন তার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সিরাপ হল "হজমি" যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩৫ টাকা। এটি উৎপাদন করে থাকেন ইবনে সিনা।
এই ওষুধটি কাজ করে থাকে লিভারের দুর্বলতায় যেমন-ক্ষুদা মন্দা, পেটব্যথা ,পেট ফাঁপা, পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে, কোষ্ঠকাঠিন্য, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে , বদ হজম , বায়ু নিষ্কাশনে , অন্তের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে, ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধক হিসেবে ,বমি বমি ভাব দূরীকরণে, ডায়রিয়া, আমাশয় সাথে পেট ব্যথা, বল বৃদ্ধি, জ্বর নাশক, পাকস্থলীর উত্তেজনা নিঃসরণ সহবিভিন্ন ক্ষেত্রে এই ওষুধটি বেশ কার্যকারী।
শিশুদের ক্ষেত্রে ১ থেকে ২ চামচ দৈনিক ২ বার থেকে ৩ বার সেবন করতে পারবে। আর প্রাপ্তবয়স্কের জন্য ২ থেকে ৪ চামচ দৈনিক ২ থেকে ৩ বার সেবন করতে পারবে।
হজমি সিরাপ টিতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই । বরং এটি শরীরের জন্য ঝুঁকিমুক্ত।
শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলটিতে আমি আলোচনা করেছি লিভারে হজম শক্তি কমে গেলে কি হবে - হজম শক্তি বৃদ্ধির সিরাপ সম্পর্কে। আশা করছি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে। এই আর্টিকেল বিষয়ে যদি আপনাদের কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এ ধরনের আরো অনেক পোস্ট পেতে আমাদের পেজটি ফলো রাখবেন। আর যারা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url