সালামের উত্তর - সালামের উত্তর দেওয়া কি সম্পর্কে জানুন


আসসালামুয়ালাইকুম বন্ধুরা আজকে আর্টিকেলটি আমরা আলোচনা করব সালামের উত্তর ও সালামের উত্তর দেওয়া কি সে সম্পর্কে। আশা করছি বন্ধুরা যারা সালামের উত্তর বা সালাম দেওয়া কি এ সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি কাজে আসবে। আবার অনেকেই সালামের উত্তর দেওয়া কি, আবার সালামের উত্তরই বাকি সে সম্পর্কে জানেন না।

যারা সঠিক নিয়মে সালামের উত্তর এবং সালামের উত্তর দেওয়া কি সে সম্পর্কে জানতে চান ।তারা এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাছাড়া এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা সালাম সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য পেয়ে থাকবেন। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে সালাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

সালাম শব্দের অর্থ

আমরা অনেকেই সালাম শব্দের অর্থ সম্পর্কে হয়তোবা জানিনা। আসুন আমরা যারা জানি না আরবি সালাম শব্দের অর্থ কি তারা জানি। আরবি সালাম শব্দের অর্থ হলঃ প্রশান্তি , কল্যাণ,আরাম, শান্তি, আনন্দ ইত্যাদি।

সালামের সঠিক উচ্চারণ

আসন বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা জেনে নেই সালামের সঠিক উচ্চারণ সম্পর্কে। এর পাশাপাশি সালামের বাংলা অর্থ সম্পর্কে।

সালামের সঠিক উচ্চারণঃ আস- সালামু আলাইকুম, ওয়া রাহমাতুল্লাহি, ওয়া বার-কাতুহ।

সালামের বাংলা অর্থঃ আপনার উপর শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।

সালামের উত্তর 

আসন বন্ধুরা আমরা যারা সালাম এর সঠিক উত্তর সম্পর্কে জানিনা ।তারা নিম্নে সালামের সঠিক উত্তর জেনে নিই।

সালামের উত্তরঃ ওয়া আলাইকুমুস সালাম, ওয়া রাহমাতুল্লাহি, ওয়া বার-কাতুহ।

সালামের উত্তর এর বাংলা অর্থঃ আপনার উপর শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।

সালামের ফজিলত সম্পর্কে কোরআনের বাণী

আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

"হে মুমিনগণ ,তোমরা নিজেদের গৃহ ছাড়া অন্য কারও গৃহ প্রবেশ করো না ,যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীকে সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর ,যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো"। (সূরা নূর আয়াত ২৭)

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,

"তবে তোমরা যখন কোন ঘরে প্রবেশ করবে তখন তোমরা নিজেদের ওপর সালাম করবে ,আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকতপূর্ণ ও পবিত্র অভিবাদন স্বরূপ"।( সূরা নূর আয়াত ৬১)

আল্লাহ তাআলা  আরো বলেন,

"আর যখন তোমাদেরকে সালাম দেয়া হবে তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে ।অথবা জবাবে তাই দেবে ।(সূরা নিসা আয়াত ৮৬)

সালামের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বাণী

বন্ধুরা আজকের রাতে আমরা সালামের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বাণী সম্পর্কে জানব। আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল "আস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত ,তিনি বলেন,

"এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল !ইসলামে কোন আমলটি সর্বোত্তম? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মানুষকে যখন খানা  খাওয়ানো এবং তুমি যাকে চেনো আর যাকে চেননা সবাইকে সালাম দেওয়া"।(বুখারি হাদিস ১৮/১১, মুসলিম হাদিস ৩৯, আবু দাউদ হাদিস ৫১৯৪)

আবু ওমারা আল বারা ইবন আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

"রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি বিষয়ে নির্দেশ দেনঃ রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাযাযর সালাত তে অংশগ্রহণ করা ,হাচির উত্তর দেওয়া, দুর্বলদের সাহায্য করা, অত্যাচারিত লোকদের সহযোগিতা করা, সালামের প্রসার করা ও শপথকারীকে মুক্ত করা"।বুখারী ৯০/৩ ,১৫, ১৬/১১ এবং মুসলিম ২০৬৬।

সালামের উত্তর দেওয়া কি

এ পর্যায়ে আসন বন্ধুরা আমরা জেনে নেই সালামের দেওয়া কি সে সম্পর্কে।

সালামের উত্তর দেওয়া হলো ফরজে কাফায়াহ। যদি সামনে একজন লোক উপস্থিত হয়ে থাকে ,তবে তাকে অবশ্যই সালাম দিতে হবে ।কারণ ছালাম সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন,

"আর যখন তোমাদেরকে সালাম দেওয়া হবে তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে ।অথবা জবাবে তাই দেবে "।(সূরা নিসা আয়াত ৮৬)।

আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে মারফু হাদিস বর্ণিত তিনি বলেন,

"যখন কোন জামাত অতিক্রম করে, তখন তাদের থেকে যে কোনো একজনের সালাম যথেষ্ট হবে এবং কোন মজলিস হতে যেকোনো একজন সালামের উত্তর দিলে তা সকলের পক্ষ থেকে যথেষ্ট হবে"।( আবু দাউদ হাদিস নং৫২১০)

খাবার সময় সালাম দেওয়া যায় কি

অনেকেই আছেন যারা খাবার সালাম দিতে চান, অথচ মনের মত প্রস্তু থেকে যায় যে খাবার গ্রহণ অবস্থায় কি সালাম দেওয়া যাবে। আসুন তাহলে জানি খাবার সময় সালাম দেওয়া যায় কি সে সম্পর্কে।

অবশ্যই খাওয়ার সময় সালাম দেওয়া বা সালামের উত্তর দেওয়া যাবে। এতে কোন ধরা বাধা নিয়ম বা নিষেধাজ্ঞা নেই।

পায়ে ধরে সালাম দেওয়া কি জায়েজ

অনেকেই পায়ে ধরে সালাম দেওয়াকে পছন্দ করেন না ।আবার অনেকেই আছেন যারা বয়স্ক বৃদ্ধ তারা পায়ে ধরে সালাম দেওয়াকে পছন্দ করে থাকেন। তো চলুন পায়ে ধরে সালাম দেওয়া কি জায়েজ এ বিষয়ে ইসলাম কি বলে সে সম্পর্কে জেনে নিন।

পায়ে ধরে সালাম শরীয়ত সম্মত নয় ।আবার এটা সালামের কোন পদ্ধতিও নয়। কারণ মুখের সালাম দেওয়াই ইসলামের বিধান। তাই পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা মোটেও শরীয়ত সম্মত হবে না। 

অমুসলিমদের সালাম দেওয়ার বিধান 

অনেকে আছে যারা অমুসলিমদের সালাম দিয়ে থাকেন। আবার অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে যে অমুসলিমদেরকে সালাম দেওয়া যাবে। তো চলুন জেনে নেই অমুসলিমদের সালাম দেওয়ার বিধান সম্পর্কে।

অমুসলিমদেরকে সালাম দেওয়া যাবে না ।এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তোমরা ইহুদি ও নাছারদেরকে প্রথমে সালাম দিবে না। (মুসলিম মিশকাত হাদিস ৪৬৩৫)। তবে যদি তারা সালাম দেয় তবে শুধু "ওয়ালাইকুম" বলে উত্তর দিতে হবে ।(মুত্তাফাক আলাইহ ,মিশকাত হাদিস ৪৬৩৭)।

শেষ কথাঃসালামের উত্তর - সালামের উত্তর দেওয়া কি সম্পর্কে জানুন

আশা করছি বন্ধুরা আজকে রাতে আপনারা সালামের উত্তর ও সালামের উত্তর দেওয়া কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আশা করছি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা আরও জানতে পেরেছেন অমুসলিমদের সালাম দেওয়ার বিধান ,পায়ে ধরে সালাম দেওয়া কি জায়েজ ,খাবার সময় সালাম দেওয়া যায় কি ,সালামের উত্তর দেওয়া কি ,সালামের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসের বাণী ,সালামের ফজিলত সম্পর্কে কোরআনের বাণী ,সালাম শব্দের অর্থ কি ,সালামের সঠিক উচ্চারণ সম্পর্কে বিস্তারিত। তো বন্ধুরা, আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং এ ধরনের আরো অনেক আর্টিকেল পেতে আমাদের পেজটি ফলো রাখবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url