স্বপ্নদোষ কি - অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায় জানুন বিস্তারিত
আজ আমরা আলোচনা করব,স্বপ্নদোষ কি - অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায় নিয়ে।স্বপ্নদোষ মূলত একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সাধারণত এটি বয়সন্ধিকাল বা বাড়ন্ত বয়সে ঘটে থাকে সবচেয়ে বেশি । এটাকে নিদ্রা রতি, যৌন স্বপ্ন, সিক্ত স্বপ্ন ,ঘুমন্ত রাগ মোচন, নৈশকালীন নির্গমন ,বা নৈশ পতন নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। বন্ধুরা আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করেন স্বপ্নদোষ কি ,অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায় কি বা স্বপ্নদোষ দূর করার ঔষধের নাম এমন অনেক ধরনের। যারা স্বপ্নদোষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তারা স্বপ্নদোষ কি - অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায় এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
স্বপ্নদোষ কি
স্বপ্নদোষ মূলত একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সাধারণত এটি বয়সন্ধিকাল বা বাড়ন্ত বয়সে ঘটে থাকে সবচেয়ে বেশি । এটাকে নিদ্রা রতি, যৌন স্বপ্ন, সিক্ত স্বপ্ন ,ঘুমন্ত রাগ মোচন, নৈশকালীন নির্গমন ,বা নৈশ পতন নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। ছেলেমেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর স্বপ্ন দোষের অভিজ্ঞতা লাভ করে থাকে। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে বয়সন্ধিকালে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে স্বপ্নদোষ হয়।
স্বপ্নদোষ সাধারণত একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তাই এতে গুনাহ নেই। আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত, আর রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, তিন ধরনের লোকের ওপর থেকে কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে,১ অসুস্থ বা পাগল ব্যক্তি যতক্ষণ না আরোগ্য লাভ করে,২ নিদ্রিত ব্যক্তি যতক্ষণ না জাগ্রত হয় ,৩ অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক যতক্ষণ না বালেগ হয়।
ছেলেদের নামাজ ফরজ হয়ে থাকে প্রথম স্বপ্নদোষ হওয়ার পর থেকে। ১৫ বছর পুরা হওয়ার পরও যদি কারোর স্বপ্নদোষ দেখা না দেয়। তবে চন্দ্র বছর হিসেবে ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার দিন থেকে ছেলে মেয়ে উভয়ে বালের তথা প্রাপ্তবয়স্ক বলে গণ্য হবে। আলবাহারুল রায়েকঃ ৮/৮৪ থেকে ৮৫;
মানুষের শরীর যেসব কারণে অপবিত্র হয়ে থাকে তার মধ্যে একটি স্বপ্নদোষ ।এ থেকে পবিত্র হওয়া জরুরী ।পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তালা বলেছেন, আর যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও ।(সূরা মায়েদা আয়াত ৬)
আর স্বপ্নদোষের পর বিনা ওজরে অপবিত্র থাকা গুনাহও। তাই দ্রুত গোসল করে পবিত্র হওয়া উচিত। এমন কি অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামার সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার মারাত্মক গুনাহের কাজ। এক্ষেত্রে তীব্র লজ্জা কিংবা গোসলের পরিবেশ নাই মনে করা শরীয়ত সম্মত ওজর নয়। বাদায়েউস সানায়েঃ১/১৫১
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায়
একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দেহে সব সময় টেস্টোরন হরমোন সহ আরো অনেক হরমোন নির্গত হতে থাকে। আর পুরুষের শরীরে দেশ ধরনের সিমের মানে বীর্য তৈরি হয় অন্ডকোষের মাধ্যমে। ছেলেদের অন্ডকোষের৭ এমএল পর্যন্ত বীর্যধারণ করতে পারে। কিন্তু যখন অন্ডকোষে বীর্যধারণ বেশি হয়ে যায়। তখন শরীর থেকে সে অতিরিক্ত বীর্য স্থানান্তরের জন্য একটা প্রসেসের দরকার হয়। আর এই প্রসেসি হলো স্বপ্নদোষ। স্বপ্ন দোষের মাধ্যমে পুরুষের যৌনাঙ্গ দিয়ে অতিরিক্ত বীর্য শরীর থেকে বাইরে বেরিয়ে যায়।
তাই একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের মাসে অন্তত দুই থেকে তিনবার স্বপ্নদোষ হওয়া ন্যাচারালি ব্যাপার। কিন্তু স্বপ্নদোষ যদি মাসে তিন থেকে আরও বেশি হয়ে থাকে তাহলে আমাদের শরীরের জন্য এটি ক্ষতিকারক। তো বন্ধুরা চলুন জানি,স্বপ্নদোষ কি - অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায় এই পোস্টটির মাধ্যমে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায় সম্পর্কে।
মূলত পুরুষের অণ্ডকোষের উপরে থাকে মূত্রথলী আর মূত্রথলি থেকে প্রসব নির্গমনের নালী দিয়ে যোগ দেয় পুরুষের যৌনাঙ্গের মাঝখানে নালীতে। আবার অন্ডকোষ থেকেও বীর্য নির্গমনের একটি নালী দিয়ে যোগ হয় পুরুষের যৌনাঙ্গের মাঝখানের নালীতে গিয়ে একসঙ্গে মিলিত হয়। আর এই পুরুষাঙ্গের বীর্য এবং মূত্র একসাথে যাতেমিলতে না পারে তার জন্য মাঝখানে একটি ভালভ থাকে। একে আমরা দরজাও বলতে পারি। মূত্রনালী এবং ২০ জন আলী মধ্যখানে যে দরজাটি থাকে তাকে প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বলা হয়ে থাকে। আর যা ছেলেদের মূত্র এবং বীর্য সমানভাবে কন্ট্রোল করে।
অর্থাৎ যখন ছেলেরা মূত্র নির্গমন করে তখন প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বীর্য নির্গমনে বাধা দেয়। অপরদিকে যখন বীর্য নির্গমনের সময় হয় তখন মূত্র নির্গমনে বাধা দেয়। কিন্তু যখন এই প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড দুর্বল হয়ে যায় তখন পুরুষেরা সঠিকভাবে তাদের বীর্য ধরে রাখতে পারে না ।ফলে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ এবং ধাতব রোগের মত সমস্যায় ভুগতে হয়।
আর যাদের এ সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ যে সকল পুরুষদের অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ এবং ধাতব রোগের সমস্যা আছে ।তাদের উচিত সময় নষ্ট না করে যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ এবং চিকিৎসা গ্রহণ করা।
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ক্ষতি হয়
জেনে রাখা উচিত প্রত্যেকেরই স্বপ্নদোষ কোন অসুখ নয়। এটা একটি শারীরিক প্রক্রিয়া। তবে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে শরীরের ক্ষতি সাধিত হয়ে থাকে। তার শরীর বিকাশে হরমোন ও প্রোটিন এর ভূমিকা অধিক।সিমেন হলো আমাদের দেহের এক অভিন্ন প্রোটিনের একটি অংশ বিশেষ।
আর যা অতিমাত্রায় স্বপ্নদোষের ফলে আমাদের শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলে। আর এ কারণে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে শরীর স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় ,স্মৃতিশক্তি কমে আসে ,যৌন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, খিটখিটে চেহারা ,শরীরে রুগ্ন দশা হয়ে যায়।
স্বপ্নদোষ কি - অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায় বন্ধুরা এই পোস্টটির মাধ্যমে জানলেন তো অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে। আশা করছি এ সম্পর্কে আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধ
বন্ধুরা আমাদের সকলেরই জানা উচিত স্বপ্নদোষ হলে কি করা উচিত এবং স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধ সম্পর্কে চলুন এ সম্পর্কে আমরা জানি।
স্বপ্নদোষ হলে শরীর থেকে পুরনো বীর্য বের হয়ে যায় । মানুষের শরীরে প্রাকৃতিক নিয়মের নেয় অন্ডকোষে ৭ এমএল এর বেশি বীর্য হয়ে গেলে নতুন বীর্য তৈরীর জন্য স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে। কিন্তু যে সমস্ত পুরুষ বিবাহিত তাদের সচরাচর স্বপ্নদোষ হয় না। কারণ বিবাহিত পুরুষরা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সহবাস জনিত কারণে তাদের আলাদা করে বীর্য স্থানান্তরের দরকার পড়ে না।
কিন্তু যে সকল পুরুষরা অবিবাহিত তাদের সচরাচর স্বপ্নদোষ হতে দেখা যায় ।তাই আপনারা যদি প্রাকৃতিক উপায়ে স্বপ্নদোষর মাধ্যমে বীর্য স্থাপন করতে চান।
এজন্য আপনাকে মাসে দু থেকে তিনবার হস্তমৈথুনের মাধ্যমে বীর্য স্থানান্তর করতে হবে ।এতে করে আপনার স্বপ্নদোষ হবে না এবং দুই থেকে তিনবার হস্ত মৈথুন করলে শরীরের কোন খারাপ প্রভাব পড়বে না। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন এই বিষয়টাকে বদ অভ্যাসে পরিণত করবেন না।
নিয়মিত যৌগ আসন শরীর এবং মন দুই ভালো রাখে। সে সাথে সাথে শরীরে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি দূর করে। করলে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষের মতো রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং এটি স্বপ্নদোষ বন্ধে ঔষধের নেয় কাজ করে। নিম্নে কয়েকটি সেরকম যোগাসনের নাম দেওয়া হলোঃ
গোমুখাসনঃ এই যোগাআসনটি নিয়মিত অভ্যাসে যেমন পুরুষের বীর্য ঘন হয়, ঠিক অপরদিকে পুরুষের প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড মজবুতে সহায়তা করে ।
ভদ্রাসনঃ এই যোগব্যায়ামটি নিয়মিত করলে এটি স্বপ্নদোষ বন্ধের ঔষধের মতো কাজ করে।
হোমিওপ্যাথিক ঔষধঃDamiaplant এবং Damiagra Forte ট্রপ মাসে দুইবার ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
ফরজ গোসলের কারণ
স্বপ্নদোষের পর গোসল করা জরুরি হয়ে পড়ে। অনেকেই হয়তো এ ব্যাপারটি নিয়ে অত মাথাব্যথা দেখান না। তাই যেসব কারণে গোসল ফরজ হয় তা নিম্নে তুলে ধরলাম ঃ
- নারী-পুরুষ মিলনে (সহবাসে বীর্যপাত হোক আর না হোক)
- স্বপ্নদোষ বা উত্তেজনাবশত বীর্যপাত হলে।
- ইসলাম গ্রহণ করলে (নব মুসলিম হলে)।
- মেয়েদের হায়েজ নিফাস শেষ হলে।
স্বপ্নদোষ হলে পবিত্র হবেন যেভাবে
স্বপ্নদোষ থেকে পবিত্র বা পরিচ্ছন্ন হওয়ার জন্য নিয়ত করতে হবে। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর সঙ্গম ,স্বপ্নদোষ, ঋতুস্রাব ও প্রসব ইত্যাদির কারণে যে নাপাকি আসুক না কেন সেটা দূর করার জন্য নিয়াত করতে হবে। অর্থাৎ মনে মনে এই চিন্তা করবেন যে নাপাকি দূর করার জন্য গোসল করছি। এরপরে লজ্জাস্থানে লেগে থাকা নাপাকি ধুয়ে ফেলবেন। তারপর দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নেবেন। এজন্য সাবান জাতীয় কোন কিছু দিয়েও ধুয়ে নিতে পারেন ।আবার না ধুলেও কোন অসুবিধা নেই। এরপর নামাজ পড়ার ওজুর মত করে সম্পূর্ণ অজু করবেন। এরপর পানি দিয়ে মাথা ভিজিয়ে নেবেন তারপর প্রথমে শরীরের ডান অংশে এবং পরে বামে পানি ঢালবেন। তারপর সারা দেহে পানি ঢালবেন।
স্বপ্নদোষের উপকারিতা
স্বপ্নের দোষের ক্ষতিকর প্রভাব থাকলেও এর কিছু উপকারিতা রয়েছে। স্বপ্নদোষ মাসে দুই থেকে তিনবার হলে এটি আমাদের শরীরে নিয়মিত বীর্য পরিবর্তন ঘটাতে সাহায্য করে। যার ফলে শরীর থেকে পুরনো বীর্য বের হয়ে যায় এবং আমাদের শরীরে নতুন বীর্যর তৈরি হয়।
আরো পড়ুনঃ নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায় জানুন
নতুন বীর্য তৈরি হওয়ার কারণে শরীরে শুক্রাণুর পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ।পুরুষের শুক্রাণু মজবুত হয় যার ফলে শুক্রাণু সহজেই ডিমানো সঙ্গে মিলিত হয়ে ফাটিলাইজেশন করতে পারে।
শেষ কথা
স্বপ্নদোষ কি - অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায় এই পোষ্টের মাধ্যমে বন্ধুরা আজ আমি আলোচনা করেছি ,স্বপ্নদোষ কি, অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ দূর করার উপায় ,অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ক্ষতি হয়, অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ঔষধ , ফরজ গোসলের কারণ ,স্বপ্নদোষ হলে পবিত্র হবেন যেভাবে, স্বপ্নদোষের উপকারিতা সম্পর্কে। তো বন্ধুরা পোস্টটি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো। আপনারা স্বপ্নদোষ সম্পর্কে কিছু কি ধারনা পেয়েছেন। যদি আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এবং আমাদের পেজটি ফলো রাখবেন।-
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url