যৌনাঙ্গে চুলকানি হলে ঘরোয়া উপায় - যৌনীতে চুলকানি হলে ঔষধ ও ক্রিম

আমাদের দেশের মেয়েরা তাদের যৌনিতে কোন ধরনের সমস্যা বা চুলকানি দেখা দিলে লজ্জায় তা চেপে রাখেন। যার ফলে সৃষ্টি হয় কষ্টদায়ক এবং অস্বস্তিকর একটি পরিস্থিতি। তবে যোনিতে এনার্জি কিংবা সংক্রমণ যেটাই হোক না কেন, একটু সচেতন হলে খুব সহজেই তা দূর করা সম্ভব। ঘরোয়া কিছু উপায় রয়েছে যা যৌনাঙ্গী চুলকানি হলে তা সমাধান করা সম্ভব।
আবার চুলকানি মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে তা দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ঔষধ বা ক্রিম রয়েছে। যেগুলো ব্যবহারে সহজেই চুলকানি দূর করা যায়। তো চলুন বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা যৌনাঙ্গে চুলকানি হলে ঘরোয়া উপায় - যৌনীতে চুলকানি হলে ঔষধ ও ক্রিম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

যোনিতে চুলকানি হওয়ার কারণ

যোনিতে চুলকানি খুবই কষ্টদায়ক এবং অস্বস্তিকর একটি পরিস্থিতি। যৌনিতে এনার্জি কিংবা সংক্রমণ যেটা দ্বারাই চুলকানির সৃষ্টি হোক না কেন, একটু সচেতন হলে খুব সহজেই তা দূর করা সম্ভব। মেয়েদের যোনিতে বিভিন্ন উপায়ে চুলকানি দেখা দিতে পারে। চলুন যৌনিতে চুলকানি হওয়ার কারণগুলো জেনে নেই।

  • ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস
  • হরমোনের পরিবর্তন
  • ইস্ট সংক্রমণ
  • ত্বকের অবস্থা
  • মাসিকের সময় অস্বাস্থ্যকর প্যাড ও কাপড় ব্যবহার করা।
  • বিভিন্ন বিরক্তিকর পদার্থ যেমন- বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ,সুগন্ধিযুক্ত ,সাবান, ডিটারজেন্ট ,রংওয়ালা টিস্যু, পেপার, ফেমিনিন হাইজেনিক স্প্রে ব্যবহার করলে যোনিতে চুলকানি হতে পারে।
  • ট্রাইকমোনিয়াসিস এর আক্রমণ।
  • ছত্রাকের আক্রমণ।
  • ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিসের সংক্রমণ।
  • যৌনাঙ্গে উকুন খোসপাচড়া এর সংক্রমণ হলে চুলকানি হতে পারে।
  • মনোপজের পর মহিলাদের ইস্টোজেন নামক হরমোন কমে যায়। ফলে যৌনি শুকিয়ে যায়। এর ফলে বিভিন্ন পরজীবী সংক্রমণ হয়। ফলে যোনিতে চুলকানি দেখা দেয়।
  • কিছু সেক্সুয়ালি ট্রান্রামিটেড ডিজিট যেমন- গনোরিয়া, সিপিনিস, এইডস ইত্যাদির কারণে যৌনাঙ্গে চুলকানি হতে পারে।
  • ডায়াবেটিস, রেনাল ডিজিজ ,রক্তে কোন ধরনের রোগ, একজিমা ইত্যাদির কারণেও যৌনাঙ্গে চুলকানি হয়ে থাকে।
  • অপরিষ্কার থাকলে।
  • যৌনাঙ্গ সব সময় আর্দ্র বা গরম রাখলে।
  • স্ট্রেস এবং হাইজিন

যৌনাঙ্গের চুলকানি হলে ঘরোয়া উপায়

আপনার যৌনাঙ্গে যদি চুলকানি বা সংক্রমণ হয়ে থাকে তাহলে ভয়ের কিছু নেই। কিছু ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করলেই এ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। তাই না ঘাবড়িয়ে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জেনে নিন যৌনাঙ্গে চুলকানি হলে ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।

নারিকেল তেল

নারিকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি এবং এন্টি ফাঙ্গাস। তাই চুলকানি দূর করার জন্য অল্প পরিমাণে জৈব ও কুমারী নারিকেল তেল লাগান। এতে করে আপনি খুব সহজেই চুলকানি দূর করতে পারবেন এবং এটি খুবই কার্যকর।

আপেল সিডার ভিনেগার

আপেল সিডার ভিনেগারে থাকা পি এইচ ভারসাম্য পুনরায় করতে এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনার যৌনাঙ্গে চুলকানি হলে আপিল সিটার ভিনেগারেকে পানি দিয়ে পাতলা করে আক্রান্ত স্থান ধুয়ে ফেলুন। এতে ভালো ফলাফল পাবেন।

চা গাছের তেল

চা গাছের তেলকে ক্যারিয়ার অয়েল দিয়ে পাতলা করে আক্রান্ত স্থানে লাগান। কারণ এটি এন্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল যুক্ত ।যার ফলে এটি চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

দই

চুলকানি দূর করতে দই বেশ কার্যকর। কারণ প্রোবাটোটিক সমৃদ্ধ দই প্রাকৃতিক যৌন উদ্ভিদ পুনরোদ্ধার করতে সাহায্য করে থাকে। তাই যৌনাঙ্গে মিষ্টি ছাড়া দই লাগাতে পারেন ।এতে করে চুলকানি এবং জ্বালা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

এলোভেরা

এলোভেরা গাছের জেল মশারাইজিং এবং শীতল ।তাই এটি চুলকানির জায়গায় অল্প পরিমানে লাগালে আরাম পাওয়া যায়।

বেকিং সোডা

চুলকানি দূর করতে বেকিং সোডা বেশ উপকারী। তাই গোসল করার সময় আপনি গোসলের পানিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট এটি ভিজিয়ে রাখুন।

কোল্ড কমপ্রেস

চুলকানি স্থানে কোল্ড কমপ্রেস প্রয়োগ করলে তা প্রদাহ কমিয়ে দেয় এবং স্বস্তি প্রদান করে থাকে।

ওটসমিলের ব্যবহার

চুলকানির কারণে যদি আপনার অস্বস্তি বা বিরক্তি কর লাগে তাহলে ওটস মিল আপনাকে তা থেকে  প্রশান্তি দিয়ে থাকবে।

স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন

চুলকানি থেকে রেহাই পেতে আপনাকে স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করতে হবে অর্থাৎ আপনাকে সুতি বা আরামদায়ক অন্তবাস পড়তে হবে এবং সুগন্ধযুক্ত পণ্য এড়িয়ে চলতে হবে।

হাইড্রেটেড থাকুন

আপনি যদি নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে পানি পান করেন ।তাহলে যৌনি স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং শুষ্কতা দূর হয় ।ফলে যোনির যে কোন ধরনের সমস্যা সমাধান হয়ে থাকে।


তবে অবশ্যই মনে রাখা উচিত যৌনাঙ্গে চুলকানি যদি ঘরোয়া উপায়ে না মিটে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে বা লাগাতে হবে।

যোনিতে চুলকানি হলে ঔষধ

যোনিতে চুলকানি হলে তা যদি না দূর হয় তাহলে কিছু ঔষধ সেবন করা যেতে পারে। সে সকল ওষুধের নাম আমরা নিম্নে আলোচনা করব। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন এই সকল ঔষধ সেবনের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেবার। তো চলুন নিম্নে সে সম্পর্কে জেনে নিই।

অ্যান্টিবায়োটিক

যোনিতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দেখা দিলে,যৌনাঙ্গে চুলকানি দূর করার জন্য ডাক্তাররা এন্টিবায়োটিক ঔষধ লিখে থাকেন যেমন-ক্লিন্ডমাইসিন, মেট্রো নিডাজল, অ্যাজিথ্রোমাইসিন।

অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ

যৌনাঙ্গে ছত্রাক এর সংক্রমণের কারণে ডাক্তাররা বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট বা ক্রিম সাজেস্ট করে রাখেন যেমন-মাইকোনাজোল, টারবিনাফাইন, ক্লোটিমাজোল, ফ্লকোনাজল।

টপিকাল স্টেরয়েড

যৌনাঙ্গীতে খুবই গুরুতর চুলকানি এবং প্রদানের জন্য ডাক্তাররা টপিকাল স্টেরয়েড সুপারিশ করে থাকেন যেমন-ক্লোবেটাসল, হাইড্রোকোটিসোন, বেটামেথাসোন।

মূলত উপরিক্ত এই ঔষধ গুলো যৌনাঙ্গের চুলকানি হলে ডাক্তাররা রিকোয়ারমেন্ট করে থাকেন। তবে এইসব ঔষধ গুলো ব্যবহার বা সেবনের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। এবং তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তা ব্যবহার করবেন।

যোনিতে চুলকানি হলে ক্রিম

যৌনাঙ্গে চুলকানি দূর করার জন্য ডাক্তাররা ক্রিম বা অয়েন্টমেন্ট জাতীয় ঔষধ লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আসুন নিমেষের সকল ক্রিমের নাম জেনে নেই।

এলার্জিজনিত কারণে ত্বকে কোন চুলকানি বা প্রদাহ দেখা দিলে ডাক্তাররা কিছু ক্রিম রিকোয়ারমেন্ট করে থাকেন। আর এই ক্রিমগুলো চুলকানি অস্বস্তি ও জ্বালা দূর করিয়ে আরাম প্রদান করে থাকেন। এ ধরনের ক্রিম বাজারে অনেক পাওয়া যায়। তবে একটা কথা মনে রাখবেন অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্রিম ব্যবহার করবেন। দিনে দু থেকে তিনবার ত্বকে মাসাজ বা ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। গুলো হলোঃ
  • Ointment 
  • Clobestasol
  • Metronidazole Vaginal Gel
  • Pevisone Cream
  • Steroid cream
Hydrocortisone Cream এই ক্রিমটি ডার্মাটাইটিস, এলার্জি, ইস্ত্রি প্রজাতন্ত্রের বাহ্যিক ত্বকের চুলকানি জন্য ডাক্তাররা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে এই ক্রিম ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা ঠিক নয়। এই ক্রিমটি দিনে অন্তত চারবার ব্যবহার করা যায়। এই ক্রিমটি ব্যবহারে পূর্বে অবশ্যই হাত এবং আক্রান্ত স্থান ভালো করে পরিষ্কার এবং পানি শুকিয়ে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।

অসহ্যরকম চুলকানি দেখা দিলে Lidocaine এই ক্রিম বাজেলটি আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন। এতে করে আপনি কিছুটা আরাম পাবেন তবে পুরোপুরি চুলকানি দূর করতে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

শেষ কথা

বন্ধুরা আমি যৌনাঙ্গে চুলকানি হলে ঘরোয়া উপায় এবং যৌন নিতে চুলকানি হলে ঔষধ ও ক্রিম সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশা করছি এই আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে। বন্ধুরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা যদি উপকৃত হয়ে থাকেন অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এবং এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এ ধরনের আরো অনেক পোস্ট পেতে আমাদের পেজটি ফলো রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url