মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে জানুন
মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির কারণ
নারীদের যৌনাঙ্গে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় কিন্তু আমরা এ ব্যাপারে কোন পাত্তা দেই না। গরমের সময় বেশিরভাগ মেয়েদেরই প্রসবের রাস্তা বা যৌনাঙ্গে ফুসকুড়ি বা চুলকুনি দেখা দেয়। এইগুলো যদি বেশি চুলকানো যায় তাহলে এর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পায়। তাই এই ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। এবং নারীদের যৌনাঙ্গের সকল ধরনের সমস্যা এর ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। আসুন নিম্নে মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির কারণ সম্পর্কে জেনে নেই।
- মাসিকের সময় অস্বাস্থ্যকর প্যাড ও কাপড় ব্যবহার করা।
- বিভিন্ন বিরক্তিকর পদার্থ যেমন- বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ,সুগন্ধিযুক্ত ,সাবান, ডিটারজেন্ট ,রংওয়ালা টিস্যু, পেপার, ফেমিনিন হাইজেনিক স্প্রে ব্যবহার করলে যোনিতে চুলকানি হতে পারে।
- ট্রাইকমোনিয়াসিস এর আক্রমণ।
- ছত্রাকের আক্রমণ।
- ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিসের সংক্রমণ
- যৌনাঙ্গে উকুন খোসপাচড়া এর সংক্রমণ হলে চুলকানি হতে পারে।
- মনোপজের পর মহিলাদের ইস্টোজেন নামক হরমোন কমে যায়। ফলে যৌনি শুকিয়ে যায়। এর ফলে বিভিন্ন পরজীবী সংক্রমণ হয়। ফলে যোনিতে চুলকানি দেখা দেয়।
- কিছু সেক্সুয়ালি ট্রান্রামিটেড ডিজিট যেমন- গনোরিয়া, সিপিনিস, এইডস ইত্যাদির কারণে যৌনাঙ্গে চুলকানি হতে পারে।
- ডায়াবেটিস, রেনাল ডিজিজ ,রক্তে কোন ধরনের রোগ, একজিমা ইত্যাদির কারণেও যৌনাঙ্গে চুলকানি হয়ে থাকে।
- অপরিষ্কার থাকলে।
- যৌনাঙ্গ সব সময় আর্দ্র বা গরম রাখলে।
মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির লক্ষণ
আমরা কম বেশি মেয়েরা সবাই যৌনাঙ্গের কোনো না কোনো সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকি।গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতি চারজনের তিনজন মহিলা যৌনাঙ্গের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন। আর এই সমস্যাটি যে কোন সময় দেখা দিতে পারে। আসুন আজকের আর্টিকেলটিতে মেয়েদের যৌনাঙ্গের চুলকালীন লক্ষণসমূহ সম্পর্কে জেনে নেই।
- ক্ষত বা ঘা সৃষ্টি হওয়।
- জ্বালাপোড়া
- ফুলে যাওয়া
- চুলকানি
- প্রদাহ
- বিবর্ণ ত্বক যেমন- হলুদ লাল বেগুনি
- যোনিতে গন্ধ
- জ্বর
- ফুলে ওঠা লিম্ফ নোড
- যৌন মিলনের সময় ব্যথা
- একটা এলাকায় ত্বক ঘন হয়ে যাওয়া
- স্রাব
- কোমরে ব্যথা
আশা করছি বন্ধুরা আপনারা মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির লক্ষণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এবার আমরা জানবো যৌনাঙ্গে চুলকানির প্রতিকার সম্পর্কে।
মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির প্রতিকার
যে সকল মেয়েরা যৌনাঙ্গের সমস্যায় ভুগছেন অর্থাৎ যৌনাঙ্গের চুলকানির পত্রিকার সম্পর্কে জানতে চাইছেন। তারা আজ আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন নিম্নে সে সম্পর্কে জেনে নিই।
- যৌনাঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে অবশ্যই এন্টিবায়োটিক ড্রপ খেতে হবে। তবে যে এন্টিবায়োটিক ড্রপ খান না কেন তা অবশ্যই পাঁচ থেকে সাত দিন খাবেন ।
- যৌনাঙ্গে ছত্রাক এর সংক্রমণ হলে এন্টি ফাঙ্গাস ঔষধ যেমন -Clotrimazole ,miconazole ,ketoconazole,fluconazole,tioconazole ইত্যাদি ঔষধ খেতে পারেন তিন থেকে পাঁচ দিন। তবে এমন কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলো একদিনেও কাজ করে। যে ওষুধই খান না কেন অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাবেন।
- বেশি চুলকানি হলে Lidocaine নামক জেল আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন এতে করে আপনি কিছুক্ষণের জন্য আরাম পাবেন।
- যৌনাঙ্গের প্রধাহ কমাতে Steroid cream ব্যবহার করতে পারেন।
- প্যারাসাইটে সংক্রমণ হলে Metronidazole খেতে পারেন।
- মনো পোজে পড়ে চুলকানি হলে ইষ্টোজেন সাপজেটরি যোনিপথে ব্যবহার করতে পারেন।
- চুলকানি কমানোর জন্য এন্টিহিস্টামিন যেমন-loratadine,fexofenadine খেতে পারেন।
উপরিক্ত এই ঔষধ গুলি ব্যবহার বা সেবনের ফলে আপনার যৌনি পথের চুলকানি প্রতিকার করা সম্ভব। তবে এ সকল ঔষধ ব্যবহার বা সেবনের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। এবং পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ ব্যবহার করবেন।
মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির প্রতিরোধ
বন্ধুরা এবার আমরা জানবো মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির প্রতিরোধ সম্পর্কে। অনেক বন্ধুরাই রয়েছেন যারা যৌনাঙ্গে চুলকানির প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তো তাদের জন্য আজ আমি লিখেছি। আশা করছি আপনাদের উপকারে আসবে। তো চলুন নিম্নে সম্পর্কে জেনে নেই।
- সব সময় যৌনাঙ্গ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
- রঙ্গিন বা সুগন্ধিযুক্ত টয়লেট টিস্যু ,সাবান যৌনাঙ্গে ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
- ভেজা কাপড় বেশিক্ষণ পড়ে থাকবেন না। গোসল বা ব্যায়ামের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা চেঞ্জ করে নিন।
- ডুশ বা ফেমিনিন হাইজিন স্প্রে ব্যবহার করবেন না।
- ওজন কমান।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার করুন।
- সুতি কাপড় দিয়ে তৈরি অন্তবাস বা পেন্টি ব্যবহার করুন।
- দই খান এতে ল্যাকটো ব্যাসিলাস নামক উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে।
- ডিটারজেন্ট ,টেলকম পাউডার ,সাবান, ত্বকের ক্রিম এর মত জিনিসগুলো যেগুলো আপনার ত্বকে জ্বালাপোড়া হয় সেগুলো ব্যবহার বাদ দিন।
- চুলকানি কমাতে কাপড় দিয়ে চাপ দিতে পারেন। তবে অতিরিক্ত চুল পাবেন না এতে চুলকানি আরো বৃদ্ধি পায়।
- মলত্যাগের পরে সামনে থেকে পিছনে পরিষ্কার করুন। মলদ্বার থেকে প্রসাবের রাস্তা দিকে মুছবেন না।
- যৌনি এলাকায় শুষ্কতা রোধ করতে সুগন্ধমুক্ত মশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
আশা করছি বন্ধুরা আপনারা মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির প্রতিরোধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। তবে চুলকানির মাত্রা যদি অতিরিক্তী পর্যায়ে চলে যায় অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং সে অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন ব্যবহার করুন।
শেষ কথা
মেয়েদের যৌনাঙ্গে চুলকানির কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে জানুন বন্ধুরা এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে। আশা করছি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন। বন্ধুরা আপনারা যদি আর্টিকেলটির মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকেন অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এবং এ সম্পর্কে আপনাদের যদি কোন মতামত থেকে থাকেন তাও কমেন্ট করে জানাবেন। এ ধরনের আরো অনেক পোস্ট পেতে আমাদের পেজটি ফলো রাখুন।-ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url